ইন্দো-বাংলা এ যৌথ অভিযানে বাংলাদেশ থেকে অংশ নেন প্রলয় খান, তারিক ইবনে নাজিম ও জয়নাব শান্তু। ভারত থেকে যোগ দেন আট জনের একটি দল।
মাউন্ট রুডুগাইরার উচ্চতা ৫৮১৯ মিটার। দেবতা শিবের রুদ্ররূপে এই পর্বতের নামকরণ করা হয়েছে। রুডুগাইরার বেসক্যাম্প থেকেই দেখা যায় ভৃগুপান্থ, থালাই সাগার, অডেন্স কল, জোগিন (১, ২, ৩), গঙ্গোত্রী (১, ২, ৩)-সহ নাম না জানা অসংখ্য পর্বতের।
‘Lets keep himalaya clean and waste free’ এর আহ্বানে ৭ অক্টোবর (রোববার) ভারতের উত্তরাখণ্ড প্রদেশের পবিত্র ধাম গঙ্গোত্রী থেকে ১১ সদস্যের অভিযাত্রী দল ট্রেকিং শুরু করেন। রুডু নালার পাড় ধরে নালাক্যাম্প পৌঁছে রাত্রিযাপন করে দলটি। ৮ অক্টোবর (সোমবার) ৭ কিলোমিটার ট্রেক করে রুডুগাইরার বেজ ক্যাম্প পৌঁছান (উচ্চতা ৪৮০০ মিটার প্রায়)৷
পরদিন আবহাওয়ার রেড অ্যালার্ট শুরু হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় একদিন আগেই ৯ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সামিট পুশের সিদ্ধান্ত নেন সদস্যরা। এসময় আবহাওয়া প্রচণ্ড বৈরীরূপ ধারণ করে। তীব্র বাতাস আর প্রচণ্ড তুষারপাতে অভিযান কঠিন হয়ে পড়ে। বেসক্যাম্পেই রাতের তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ১৫ ডিগ্রি। রাত ৪টায় সামিট পুশ শুরু করেন তারা। বাংলাদেশের প্রলয় খান ও ভারতের নাবিন রিজলাইনের শোল্ডার থেকে (প্রায় ৫৬০০ মিটার) ফেরত আসেন শারীরিক অসুস্থতার কারণে। এদিকে জয়নাব শান্তু বেজ ক্যাম্প পৌঁছাতে দেরি করায় বৈরী আবহাওয়ার কারণে সামিটের জন্য বের হতে পারেননি।
৯ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে চূড়ায় আরোহণ করতে সক্ষম হন তারিক এবং ভারতের সুমন দে (গ্রুপ লিডার), রাজদেব, নন্দন চৌবে, সঞ্জয় শর্মা ও থ্রোট ক্যানসারে আক্রান্ত শান্তনু বসুসহ মোট ছয়জন।
তিন মাস আগে রেডিওথেরাপি আর দুই মাস আগে কেমো হয়েছে ক্যানসারে আক্রান্ত শান্তনু বাসুর। ডাক্তার মাত্র এক বছরের ডেডলাইন দিয়েছেন। পাহাড় তাকে নতুন উদ্যোমে হয়তো আরো একটি বছর বাঁচতে দেবে, সেই চিন্তা থেকেই তার এ অভিযানে অংশ নেওয়া। ইন্দো-বাংলা রুডুগাইরার এক্সপেডিশন উৎসর্গ করা হয়েছে শান্তনু বসুকে৷
রুডুগাইরা পর্বত চূড়া থেকে ফিরে রাতে বিশ্রাম নেন বেজ ক্যাম্পে। ফেরার সময় তুষার ঝড়ের কবলে পড়লেও সুস্থভাবে বেজ ক্যাম্পে ফিরে আসতে পারেন তারা। পরের দিন ১০ অক্টোবর (বুধবার) গঙ্গোত্রী ধামে পৌঁছানোর মাধ্যমে তাদের অভিযান শেষ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৮
এএ