সেনজেন সিটি চীনের সেই সিলিকন ভ্যালি। যেখানে 'চীনা ফেসবুক' খ্যাত উইচ্যাট-এর অফিস।
চীনজুড়ে বিস্তৃত ইন্টারনেট ভিত্তিক কোম্পানি টেনসেন্ট হচ্ছে উইচ্যাট’র মালিক। পুরো চীনজুড়ে মানুষের হাতে হাতে উইচ্যাট দেখা গেছে।
চীনে মোবাইল ফোন মানেই উইচ্যাট। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্টে খাওয়া পর্যন্ত সবখানে উইচ্যাট পেমেন্ট দিয়ে চলে। চীনের ইন্টারনেট জগতে উইচ্যাটের মতো আর কোনো কিছুর এতো গুরুত্ব নেই।
গুগলও বন্ধ চীনে। সারাবিশ্বের মানুষ যেখানে তথ্যভান্ডার হিসেবে গুগলে খোঁজে। সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে চীনে সেই গুগলের কোনো নামই নেই। তবে গুগলের মতই যে সার্চ ইঞ্জিন চীনারা ব্যবহার করে তার নাম বাইডু।
দেখা গেছে বাইডু সার্চ ইঞ্জিনটি দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইট। এটি মানচিত্র, ক্লাউড স্টোরেজ এমনকি অনুবাদের জন্যও ব্যবহার করা হয়। তাদের সব চালক গাড়ি চালানোর সময়ও বাইডু ম্যাপ ব্যবহার করে।
আমেরিকার অ্যাপলের আইফোন যেখানে বিশ্বজুড়ে ক্রেজ তৈরি করেছে, সেখানে চীনে হাতেগোনা কয়েকজনের কাছে দেখা গেছে আইফোন। আইফোনের প্রতি চীনের মানুষের কোনও আকর্ষণ নেই। কিন্তু দেশের বৃহত্তম ফোন প্রস্তুতকারক হিসেবে হুয়াওয়ের ক্রেজ দেখা গেছে চীনের লোকজনের মধ্যে।
হুয়াওয়ের পরে যে ফোনটি বেশি দেখা যায়, সেটি জিয়াওমি। এই প্রতিষ্ঠানও উচ্চমানের স্মার্টফোন তৈরি করে। এর অনেকগুলো অ্যাপস অ্যাপলের মতো।
বহির্বিশ্ব বা ভেতরে ই-কমার্স সাইট হলো আলিবাবা। এটি এত জনপ্রিয় যে অ্যামাজন কোম্পানির এখানে ঠাঁই নেই। চীনের প্রথম এবং প্রধানতম ই-কমার্স আলিবাবা। ই-কমার্সের পাশাপাশি এটি আলিপে পেমেন্ট অ্যাপ্লিকেশনটির বিশাল বাজার। অনলাইন শপিং সাইট দিয়ে শুরু হলেও এটি দেশের বৃহত্তম খুচরা কেনাবেচার আর্থিক লেনদেন করা সাইট।
চীনে উবার নেই। উবারের মতো একটি মাত্র অ্যাপ চলে, যার নাম দিদি। এছাড়া চীনে টুইটারও চলে না। টুইটারের মতো সিনা ওয়েইবো অনেকের স্মার্টফোনে ব্যবহার হয়।
চীনে ইউটিউবও নেই। ইউটিউবের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় আইকিউআই। এটি চীনের সবচেয়ে বড় ভিডিও সাইট। এ কারণে চীনে নেটফ্লিক্স বা ইউটিউবের কোনো ব্যবসা নেই।
এছাড়া টেনসেন্ট মালিকানাধীন কিউকিউ হলো চীনের সবচেয়ে বড় মিউজিকের অনলাইন হাট। এ কারণে টেনসেন্টের হাতে এখন দেশের ৭০ ভাগের বেশি সঙ্গীত স্ট্রিমিং বাজারের মালিকানা।
ট্যান্টান চীনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ডেটিং অ্যাপ্লিকেশন এবং এটি অনেকটা টেন্ডারের মত।
এতকিছু দিয়ে চীনারা নিজস্ব ভার্চুয়াল জগত তৈরি করে নিয়েছে যে ফেসবুক, গুগল বা ইউটিউবের প্রয়োজন নেই তাদের। যারা বাইরে থেকে চীনে আসেন তাদের অবশ্য এগুলোর জন্য সমস্যায় পড়তে হয়। চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে মোবাইল ফোনে এসব অ্যাপ নামানো বা সাইটে ঢুকতে হয়।
বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
এসএ/এসআই