ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

রেকর্ড পরিমাণ ফলনের আশা লিচু চাষিদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৩ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৭
রেকর্ড পরিমাণ ফলনের আশা লিচু চাষিদের রেকর্ড পরিমাণ ফলনের আশা লিচু চাষিদের-ছবি-বাংলানিউজ

দিনাজপুর: গাছের শাখায় দুলছে সবুজ লিচু। সবে লিচ‍ুর কচি গুটি থেকে জমাট বাঁধতে শুরু করেছে রস। লিচুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে এবারে রেকর্ড পরিমাণ লিচুর উৎপাদন সম্ভব বলে আশা করছেন তারা।

লিচুর জেলা দিনাজপুরের প্রতিটি বাগানে এবার ভালো ফলন হওয়ায় লিচু চাষিরা দেখছেন ভালো মুনাফার স্বপ্ন। অন্যদিকে অতিরিক্ত লাভের আশায় লিচু ভালোভাবে না পাকতেই দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন মৌসুমী ফল ব্যবসায়ীরা।

ইতোমধ্যে অধিকাংশ লিচু বাগান বিক্রি হয়ে গেছে বলে ফল ব্যবসায়ীরা জানান। এবার রেকর্ড পরিমাণে ফলন হলে লিচু সস্তায় বাজারে সরবরাহ করা যাবে বলে মনে করছেন তারা।

লিচু ভালোভাবে পাকতে এখনও মাসখানেক অপেক্ষা করতে হবে। এরইমধ্যে দিনাজপুর শহরের কালিতলার নিউ মার্কেট ও এর আশপাশে ফলের দোকান সাজানোর প্রস্ততি নিচ্ছেন স্থানীয় ফল ব্যবসায়ীরা।

দিনাজপুরের লিচু-ছবি-বাংলানিউজদিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ‘রসগোল্লা’ হিসেবে পরিচিত লিচু চাষে দিনাজপুর জেলায় নীরব বিপ্লব ঘটেছে। এক সময় শুধু দিনাজপুর সদর উপজেলার মাসিমপুর ও এর আশপাশে এক থেকে দেড়শ একর জমিতে লিচু চাষ হতো। সেইসঙ্গে বাড়ির আঙিনায় লাগানো হতো দু-একটি লিচু গাছ। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে লিচু চাষ।

কৃষি বিভাগের রেকর্ড অনুযায়ী, ২০১২ সালে এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে লিচু চাষ শুরু হয়। যা পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ১৮০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে।

দিনাজপুর জেলার সদর, চিরিরবন্দর, বিরল ও বীরগঞ্জ উপজেলায় উল্লেখযোগ্য হারে লিচু চাষ হয়। এসব এলাকায় বেদানা, বোম্বাই, চায়না থ্রি-ফোর, মাদরাজিসহ নানা জাতের লিচু চাষ হয়।

দিনাজপুর ঘুঘুডাঙ্গা এলাকার লিচু চাষি জিয়াউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গুটি থেকে রসালো হতে শুরু করেছে লিচু। মুকুল আসার পর থেকে বাগানের প্রতিটি গাছের পরিচর্যা এখনও চলছে। পরিচর্যার অংশ হিসেবে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের বালাইনাশক ও ভিটামিন স্প্রে, গাছের গোড়ার চারপাশ কেটে পানি সরবরাহ, বৃষ্টি হলে অতিরিক্ত পানি বের করতে নালা তৈরি করা হচ্ছে। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবার বালাইনাশক ও ভিটামিন স্প্রে করতে বেশি খরচ পড়ছে। বেশি ফলন ও দাম পাওয়া না গেলে লোকসান গুণতে হবে।

দিনাজপুরের লিচু-ছবি-বাংলানিউজ
ঢাকা থেকে আগত মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে লিচুর বাগান বিক্রি শেষ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে যে পরিমাণে লিচু এসেছে তাতে এবার ভালো ব্যবসা হবে। চলতি মৌসুমে ফলন ভালো হলে ঢাকা থেকে বিভিন্ন দেশে লিচু রফতানি করা হবে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, চলতি বছরে দিনাজপুর জেলায় চার হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অনুক‍ূল আবহাওয়া থাকলে এবার লিচু উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে রেকর্ড হবে। মুকুল আসা থেকে চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। প্রতি বছর লিচুর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৭
আরআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।