ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ভুট্টা চাষে ভাগ্য ফিরেছে সৈয়দপুরের চাষিদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫২ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৭
ভুট্টা চাষে ভাগ্য ফিরেছে সৈয়দপুরের চাষিদের ভুট্টা চাষে ভাগ্য ফিরেছে সৈয়দপুরের চাষিদের-ছবি-বাংলানিউজ

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভুট্টা চাষ। উৎপাদন খরচ কম, ভালো ফলন ও লাভ বেশি হওয়ায় এ উপজেলার কৃষকরা দিন দিন ঝুঁকে পড়ায় প্রতি বছর ভুট্টা চাষের জমি বাড়ছে। 

বর্তমানেও ভুট্টা আবাদে ও দামে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ফলে অতীতের অন্য ফসল উৎপাদনের লোকসান পুষিয়ে ভুট্টা চাষে ভাগ্য ফিরিয়েছেন তারা।

 

উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বাঙালিপুর ও বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কম পরিশ্রমে লাভবান হওয়ায় ধান ও অন্য ফসলের বিকল্প হিসেবে ভুট্টার আবাদ করছেন কৃষকরা।  

কামারপুকুর ইউনিয়নের নিয়ামতপুরের কৃষক এমাজ উদ্দিন জানান, গত বছর দেড় বিঘা জমিতে চাষ করে ২৫ মণ ভুট্টা পেয়েছিলেন। এবার একই জমিতে ৩০ মণেরও কিছু বেশি পেয়েছেন। গত বছর ভুট্টা বিক্রি করেছিলেন মণপ্রতি ৫০০ টাকা, এবার বিক্রি করেছেন ৬৫০ টাকা দরে।  

তিনি আরও জানান, ধানের আবাদ করলে বছরে দু’টির বেশি ফসল আবাদ করা যায় না। আর ভুট্টা চাষের পরেও আরো দু’টি ফলানো সম্ভব।  

ভুট্টা-ছবি-বাংলানিউজবোতলাগাড়ি ইউনিয়নের শ্বাসকান্দর গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, ‘ভুট্টা আবাদের জমি আমাদের এলাকায় প্রতি বছর বাড়ছে। ভুট্টা, কলা ও শাক-সবজি আবাদ করে অন্যান্য ফসলের লোকসান তুলছেন কৃষকরা’।

কামারপুকুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নিয়ামতপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম জানান, তার নিজের কোনো জমি নেই। তাই প্রতি বছর জমি বর্গা নিয়ে ভুট্টার আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন তিনি। তার দেখাদেখি এলাকার অনেক কৃষকও ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।  

তিনি বলেন, ভুট্টার দানা হাতে ও মেশিনে দুই পদ্ধতিতে ছাড়ানো যায়। তারপর রোদে শুকিয়ে বিক্রি করতে হয়।  

কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নীলফামারী জেলায় ২০১০ সালে ২ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অর্জিত হয়েছিল ৩ হাজার ৩৫ হেক্টরে। উৎপাদিত হয় ১৭ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন। ২০১১ সালে ৩ হাজার ৬০১ হেক্টরের বিপরীতে অর্জিত হয় ৬ হাজার ১৬৫ হেক্টরে, উৎপাদিত হয় ৪১ হাজার ৩৭৪ মেট্রিক টন ভুট্টা। ২০১২ সালে ৬ হাজার ২৩৯ হেক্টরের বিপরীতে অর্জিত হয় ৭ হাজার ১৭০ হেক্টরে, উৎপাদিত হয় ৪৮ হাজার ২০২ মেট্রিক টন ভুট্টা।  

ভুট্টা-ছবি-বাংলানিউজসৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোমায়রা মণ্ডল জানান, লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর ভুট্টার চাষে জমির পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছেন কৃষকরা। তবে ধানের উৎপাদনও কমে নেই, এসেছে বিভিন্ন জাত। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি জমিতে ধানও উৎপাদিত হয়ে থাকে সৈয়দপুরে। কৃষকরা নিজেদের চাহিদা মিটিয়েও বাইরের বাজার দখলে রেখেছেন।  

তিনি জানান, পোলট্রি শিল্পে ভুট্টা খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হওয়ায় দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছেই।  

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৩ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৭
এএসআর 


               


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।