ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ক্রেতা নেই সিলেটের পশুর হাটে!

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮
ক্রেতা নেই সিলেটের পশুর হাটে! ক্রেতা নেই পশুর হাটে। ছবি: আবু বকর

সিলেট: মধ্যখানে চার দিন। এরপরই পবিত্র ঈদুল আজহা। এরইমধ্যে সিলেটের সব হাটবাজারে উঠেছে কোরবানির পশু। সে তুলনায় ক্রেতা সমাগম অপ্রতুল। সময় ঘনিয়ে এলেও এখনো জমে ওঠেনি সিলেটে কোরবানির পশুর হাট।বিকেলের দিকে হাটে কিছুটা লোক সমাগম হলেও সকাল ও দুপুরে সিলেটের হাটগুলো এখনো ক্রেতাশূন্য। প্রবাসী অধ্যুষিত শেষমুহুর্তে পশুর হাটে বেচাকেনা জমে উঠবে এমন আশায় গরু বিক্রেতারা।

এরই মধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ছোট বড় অন্তত অর্ধশত হাট বসানো হয়েছে। এরমধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় মতো মামলায় ঝুলে থাকা কাজিরবাজার এবারো ইজারা দেওয়া হয়নি।

এছাড়া মহানগর এলাকায় কোনো হাট ইজারা দেননি নগর কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু নিয়ে এসেছেন পাইকারিরা। সামিয়ানার নিচে যত্নে রাখা হয়েছি সারি সারি গরু। এর বাইরেও রয়েছে পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আসা গরু, নেপালি গরু। একেক জন পাইকারি বিক্রেতা দেড় বা দুইশ’ গরু তুলেছেন বাজারে। কিন্তু তার মধ্যে পাঁচ থেকে সাতটি ছাড়া বিক্রি তেমন নেই।

বিক্রেরা বলেন, দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে গরু নিয়ে আসার অন্যতম উদ্দেশ্য বেশি বিক্রি। কিন্তু এবার বাজারের অবস্থা খুবই বেহাল। অবশ্য শেষ সময়ে বিক্রি বাড়বে এমন প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের। ক্রেতা নেই পশুর হাটে।  ছবি: আবু বকরনগরের কাজিরবাজারের গরু বিক্রেতা আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয় প্রায় ৮০ জন এবং বাইরে দুই শতাধিক পাইকারি গরু নিয়ে এসেছেন বাজারে। এবার গরুর দাম মোটামুটি ভাল। অবশ্য গতবছরের তুলনায় দাম কিছুটা কম। আগের বছর অবরোধের কারণে সিলেটে কম সংখ্যক গরু এসেছিল, দামও ছিল বেশি। এবার এই অবস্থা নেই।

বিক্রেতা মো. ফজর আলী বাংলানিউজকে বলেন, কুষ্টিয়া থেকে সিলেটে গরু নিয়ে আসেন চারদিন আগে। কিন্তু এখনো বিক্রি নেই বললেও চলে। অবশ্য অন্যান্য বছর এমন সময় প্রায় অর্ধেক গরু বিক্রি করে ফেলেন। অথচ এবার মাত্র ছয়টি গরু বিক্রি করেছেন। ক্রেতা নাই দেখে লোকজন দামও কম হাঁকাচ্ছে।

স্থানীয়ভাবে গরু নিয়ে আসা নগরের দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা ময়না মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, তিন দফা বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে গবাদিপশুর খাবার সংকট, যে কারণে রাখার জায়গার অভাবে কৃষিজীবী মানুষ গরু-ছাগল বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। বন্যার কারণে বাতানীরাও (হাওরে গরু পালনকারী) গরুর খামার গড়ে তুলতে পারেননি। এ অবস্থার প্রভাব পড়েছে কোরবানির বাজারে।

নগরের সবচেয়ে বড় পশুর হাট কাজিরবাজারের বিক্রেতা জামাল মিয়া বলেন, গত একযুগ ধরেও বাজারের এমন মন্দাভাব আর দেখিনি। শেষ মুহূর্তে বাজার জমে উঠবে আশা প্রকাশ করছেন তিনি।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, কাজিরবাজার মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় ইজারা হয় না। ফলে নগরীতে সিসিকের কোনো বৈধ পশুর হাট থাকছে না। কেননা, এবার সিসিক এলাকায় কোনো পশুর হাট ইজারা দেওয়া হবে না।

অবশ্য পুলিশ প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে সিলেটে বৈধ পশুর হাট ১০টি। এগুলো থেকে কোরবানির পশু কেনারও আহ্বান জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। পুলিশের তালিকায় বৈধ পশুর হাটগুলো- সিলেট মহানগরীর কোতোয়ালি থানার কাজীর বাজার পশুর হাট, বিমানবন্দর থানার লাক্কাতুরা চা বাগান মসজিদ সংলগ্ন মাঠ, দক্ষিণ সুরমা থানার লালাবাজার পশুর হাট, কামাল বাজার পশুর হাট, নাজিরবাজার পশুর হাট, মোগলাবাজার থানার রেঙ্গা হাজীগঞ্জ বাজার, জালালপুর পশুর হাট, রাখালগঞ্জ বাজার পশুর হাট, শাহপরান (রহ.) থানার পীরের বাজার পশুর হাট ও খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ মাঠ।

সিলেটের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বাংলানিউজকে  জানান, পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় পোশাকে-সাদা পোষাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রাখা রয়েছে। তবে বাজারে এখনও লোক সমাগম কম।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।