ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

সিলেটে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে বোরো!

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২১
সিলেটে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে বোরো! ক্ষেতে ধান কাটছে কৃষক। ছবি: মাহমুদ হোসেন

সিলেট: সিলেটের হাওর-বাওরজুড়ে এখন সোনালি ফসলের আভা। বিগত বছরগুলোতে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

তবে, এবার রবি শস্যের এবার বাম্পার ফল হয়েছে সিলেটজুড়ে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কা ক্ষীণ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সপ্তাহ দিনের মধ্যে স্বাচ্ছন্দে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা। আর ধান কাটা পুরোপুরি সম্পন্ন হলে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।  

সংশ্লিষ্টরা বলেন, এবার সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় এবার হাওর-নন হাওরে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৮ হাজার ১৭৭ হেক্টর বেশি। আগের বছর ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৭৪৩ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে।   তবে, এইবার হাওরে শ্রমিক সংকট নেই। শ্রমিকদের পাশাপাশি কৃষি যন্ত্র দিয়েও ধান কাটা চলছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কিছু দিনের মধ্যে ধান সম্পূর্ণরূপে কেটে ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা। এমনটি মন্তব্য করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের অতিরিক্ত পরিচালক দিলীপ কুমার অধিকারী বাংলানিউজকে বলেন, বিভাগে এখন পর্যন্ত গড়ে হাওর এলাকায় প্রায় ৬৫ দশমিক ২০ শতাংশ এবং নন হাওর এলাকায় ২৫ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে।

বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলার হাওরে ৮১ হাজার ৯শ হেক্টরে উৎপাদিত বোরোর ৬৫ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হয়ে গেছে। জেলায় নন হাওরে ফসলি জমির ৪৬ হাজার ৮১০ হেক্টরের ৪০ শতাংশের, মৌলভীবাজারের ৫৬ হাজার ৩৪৫ হেক্টর হাওরের ৬০ শতাংশ, নন হাওরের ২৮ হাজার ৫১৫ হেক্টরে ১৫ শতাংশ, হবিগঞ্জের এক লাখ ২২ হাজার ১৩০ হেক্টরের প্রায় ৬০ শতাংশ, নন হাওরের ৭৫ হাজার ২১৫ হেক্টরের প্রায় ১৫ শতাংশ এবং সুনামগঞ্জের ২ লাখ ২৩ হাজার ৩৩০ হেক্টরের প্রায় ৬৭ শতাংশ ও নন হাওরের ৫৭ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমির প্রায় ২৫ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। তিনি বলেন, সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় এবার বোরো থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৮ মেট্রিক টন। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ৩ লাখ ১৬ হাজার ৫০৬ মেট্রিক টন, মৌলভীবাজার জেলায় ২ লাখ ১৮ হাজার ২২ মেট্রিক টন, হবিগঞ্জে ৫ লাখ ১৮ হাজার ১৫১ মেট্রিক টন এবং সুনামগঞ্জে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ২৯৯ মেট্রিক টন। বিভাগে গত বছরের চেয়ে এবার ৮ হাজার ১৭৭ হেক্টর জমি বেশি আবাদ হয়েছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে, আশাবাদী তিনি।

কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, কৃষিতে মূলত ৩টি মৌসুম ধরা হয়। এর মধ্যে রবি মৌসুম, খরিপ-১ ও ২। রবি মৌসুম ১৬ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত পাঁচ মাস। খরিপ-১ ১৬ মার্চ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ৩ মাস এবং খরিপ-২ ১৬ জুন থেকে ১৫ অক্টোবর ৪ মাস। এর মধ্যে রবি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ফলন হয়। দেশে অন্তত ১শ জাতের ধান থাকলেও তিন মৌসুমে শতকরা ৭০ শতাংশ ব্রি-২৯৮ ও ২৯ জাতের ধানের ফলন হয়। অন্যান্য জাতের ধানক্ষেত হয় ৩০ শতাংশ। এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের উপ পরিচালক মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, সিলেট জেলায় রবি মৌসুমে হাওর-বাওরে ৮১ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬০ শতাংশের ওপরে ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে।

এবার ধান কাটার শ্রমিক সংকট নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, শ্রমিকদের পাশাপাশি ধান কাটার সহায়ক হিসেবে ১১৯টি কম্বাইন হার্ভেস্টার ও ২১৪টি রিপার ধান কাটার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে, এমনটি আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২১
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।