ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩১, ৩০ জুলাই ২০২৪, ২৩ মহররম ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

এমএফএস’র মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে সীমার অতিরিক্ত লেনদেন করলেই কর

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২১
এমএফএস’র মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে সীমার অতিরিক্ত লেনদেন করলেই কর

ঢাকা: আসছে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নগদ টাকার লেনদেনের সীমা আরোপ করতে পারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

ফলে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে একটি নিদিষ্ট সীমার বেশি নগদ টাকার লেনদেন করা যাবে না।

অতিরিক্ত লেনদেন করতে হলে কর যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শিল্পের কাঁচামাল কেনার জন্য নগদ টাকার লেনদেনের ক্ষেত্রে করপোরেট করদাতাদের কাছ থেকে এই কর আদায় করবে।

আগামী অর্থবছর থেকে উভয় ক্ষেত্রে ৫০ হাজারের বেশি নগদ টাকার লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে এবং ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে লেনদেনের নির্দেশনা জারি করবে।

আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ অনুসারে ৫০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে লেনদেন করলে সেটা করদাতাদের দেখানোর বিধান নাই।

তবে এই দুই ধরণের লেনদেনের জন্য আগের আইনে কোনো নির্দেশনা ছিল না।

রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে নতুন আর্থিক ব্যবস্থাগুলো সংযুক্ত করা হতে পারে।

তারা বলেছেন, নতুন পদক্ষেপগুলো অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির আকার কমিয়ে আনতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারীরা বলেছেন, মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টধারীদের ব্যবসার ধরণ অনুসারে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া বিভিন্ন অংকের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঢাকা চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রিজওয়ান মাহমুদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, এতে অর্থনীতিতে কালো টাকা তৈরি হতে পারবে না।  

তিনি অবশ্য প্রাথমিকভাবে এই সীমা ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করার পরামর্শ দিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের কর দেওয়ার নতুন নিয়মগুলো মানিয়ে নিতে সহায়তা করার জন্য এটি ধীরে ধীরে নামিয়ে আনা যেতে পারে।

কর আরোপ বা নতুন আর্থিক ব্যবস্থার জন্য তিন থেকে পাঁচ বছরের পরিকল্পনা থাকতে হবে। একটি আর্থিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে ব্যবসার পরিকল্পনা প্রণয়ন করা কঠিন।

তিনি বলেন, এনবিআরের নতুন পদক্ষেপটি ছোট ব্যবসায়ীদের ভ্যাট ও অন্যান্য কর দিতে বাধ্য করতে পারে তবে শেষ পর্যন্ত তাদেরকে কর ব্যবস্থা মেনে চলতে হবে।  

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, যদি করদাতারা লেনদেনের সমর্থনে ব্যাংক বিবরণী দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তাদের আয়কর রিটার্নে প্রদর্শিত ব্যয়ের কর দিতে হবে।

মহামারি করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে লকডাউন ঘোষণার ফলে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে লেনদেন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

২০২০ সালের মার্চ থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের গ্রাহক বেড়েছে ১৮ মিলিয়ন। ওই সময় পর্যন্ত নিবন্ধিত এমএফএম গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৬০ লাখে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, একই সময়ে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৫ দশমিক ৩৫ ট্রিলিয়ন টাকা। আগের বছরের সময়ে লেনদেন হয়েছিল ৪ দশমিক ১০ ট্রিলিয়ন টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় আর্থিক লেনদেনগুলো ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত করার অনুরোধ করেছে দেশের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। যদিও শিল্পের কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে লেনদেন করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা ছিল না।

জানা গেছে, কতিপয় করপোরেট করদাতা শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে আটক শিল্পের কাঁচামাল কেনার জন্য বড় অংকের নগদ টাকার লেনদেন দেখিয়েছিল।

আসন্ন বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রকাশ্য নিলামে ১০ শতাংশ হারে উৎস কর আরোপ করতে পারে।

বর্তমানে জনসাধারণের জন্য প্রকাশ্য নিলামের উৎস কর ৫ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত রয়েছে। যা সবক্ষেত্রে ১০ শতাংশ হতে পারে। তবে চা নিলামের উৎস কর ১ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে।

তবে আয়কর কর্তৃপক্ষ রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন ফি ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০১১৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২১
এসই/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।