ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বাংলার ভোটে সহিংসতা হলে দায়ী থাকবে পুলিশ: নির্বাচন কমিশন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১২ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২৪
বাংলার ভোটে সহিংসতা হলে দায়ী থাকবে পুলিশ: নির্বাচন কমিশন

কলকাতা: ভারতের জাতীয় নির্বাচনের (লোকসভা ভোট) প্রস্তুতি দেখতে রোববার পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বাধীন ফুল বেঞ্চ। মঙ্গলবার(৫ মার্চ) কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার।

তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় ভোটে সহিংসতা হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কোনও ভাবেই সহিংসতা বরদাস্ত করা হবে না। হুঁশিয়ারি দিয়ে কমিশনার জানান, বাংলায় অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভোটের দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য পুলিশকে। কোনও অশান্তি হলে হলে দায়ী থাকবে বাংলার পুলিশ।

প্রসঙ্গত, রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার নাম নিয়ে রাজীব সরাসরি মমতাকেই হুশিয়ারি দিয়েছেন বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল।

এদিন রাজীব কুমার স্পষ্ট জানিয়েছেন, বাংলার সহিংসার সব রিপোর্ট তাদের কাছে আছে। বাংলার নির্বাচনে পেশিশক্তি এবং অর্থশক্তিকে কাজে লাগানো হলে তা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। তার কথায়, এ বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকেও জানিয়েছি। প্রশাসনের কর্তারাও কথা দিয়েছেন, তারা শান্তিপূর্ণ ভোট করতে বদ্ধপরিকর। প্রসঙ্গত, রাজ্য পুলিশের ডিজি’র নামও রাজীব কুমার।

আইনশৃঙ্খলার জন্য পশ্চিমবঙ্গে কেন এত কেন্দ্রীয় বাহিনী (সশস্ত্র সামরিক বাহিনী) মোতায়েন করা হয়েছে? এ প্রসঙ্গে রাজীব বলেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী সব রাজ্যেই গিয়েছে। তেমন পশ্চিমবঙ্গেও এসেছে। সেই বাহিনীকে কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, তা ঠিক করবে রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী কর্তারা।

এবার রাজ্যে আসছে ৯৪০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রথমধাপে ভোটের তফসিল ঘোষণার আগে ১৫০ কোম্পানি রাজ্যে রুটমার্চ শুরু করে দিয়েছে। গত নির্বাচনে(২০১৯)  ৭২০ কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছিল। এক কোম্পানি সমান একশো জন সশস্ত্র সামরিক বাহিনী।

প্রধান কমিশনার আরও জানিয়েছেন, ভোটের আগে ও পরে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে থাকা আন্তর্জাতিক সীমান্তগুলোর দিকেও কড়া নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিনি বলেছেন, সীমান্তে মানব পাচার, মাদক পাচারসহ নাশকতা রুখতে যেন তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ যেন নেয় বিএসএফ; তার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

পাশপাশি নির্বাচন নিয়ে একটি গাইডলাইনও প্রকাশ করে কমিশন। যেখানে একগুচ্ছ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয় প্রথমে আসার ভিত্তিতে নির্বাচনী সভা বা বৈঠকের জন্য ময়দানের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখার পাশাপাশি ভুয়া ভোটারদের ওপর নজর রাখা, এবং কড়া পদক্ষেপ নেওয়া, আধার কার্ড(নাগরিক পরিচয় পত্র) বাতিল হলেও ভোটের উপরে তার প্রভাব পড়বে না। এছাড়া সময় মত ভোটার স্লিপ দেওয়া, কোন চুক্তিভিত্তিক বা সিভিক ভলেন্টিয়ারকে নির্বাচনের কাজে না লাগানো, ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি চালানো, ভুয়া খবরের দিকে নজর রাখা, অস্ত্রসহ দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করার মত বিষয় গুলো তুলে ধরা হয়েছিল এদিনে সাংবাদিক বৈঠকে।

কমিশন জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ দশমিক ৫৮ কোটি, এর মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা ৩ দশমিক ৭৩ কোটি এবং পুরুষ ভোটার রয়েছে ৩ দশমিক ৮৫ কোটি। মোট ভোটারদের মধ্যে একটা বিশাল সংখ্যায় তরুণ ভোটারও রয়েছে। সিনিয়র সিটিজেনরাও অন্তর্ভুক্ত আছে। এছাড়া প্রতি ভোটকেন্দ্র পিছু ৯৪৩ জন করে ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। সেই হিসাবে অনযায়ী, ভারতে প্রায় ৮০ হাজার ভোটগ্রহণ কেন্দ্র খোলা হবে। এরমধ্যেই শতকরা ৭৫ ভাগ ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থাকছে গ্রামীণ এলাকায়।

বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা,মার্চ ০৬,২০২৪
ভিএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।