ঢাকা: আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবার ওপর আরোপিত সম্পূরক কর প্রত্যাহার করা না হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
রোববার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক ‘টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবায় কর বৃদ্ধির হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের’ দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এ হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনের নেতারা।
মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের মুঠোফোন এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর নতুন করে সম্পূরক কর আরোপ করা সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্ত। সরকারের এ পদক্ষেপ জনগণের ইন্টারনেট সেবার ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর পরিবর্তে তাদের সেবার বাইরে রাখার শামিল। আগামী সপ্তাহের মধ্যে যদি এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে এনবিআর কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।
তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ রাজস্ব কর্মকর্তাদের খুশি করতেই তাদের পরামর্শে এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আমরা ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পর আর রাজপথে দাঁড়াতে হবে না। কিন্তু আজ দুঃখের সঙ্গে আমাদের রাজপথে দাঁড়াতে হলো। গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনা না করে, কারো সঙ্গে আলোচনা না করে রাতের আঁধারে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যা জনগণের সঙ্গে নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করল।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম ও আইআইজির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, শতভাগ দেশীয় উদ্যোক্তার মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হয়। এ সেবা খাত ধ্বংস করার অপচেষ্টা আগেও করা হয়েছে এখন আবার নতুন করে ১০ শতাংশ এসডি ও সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত করায় গ্রাহকের ভোগান্তি যেমন বাড়বে একইভাবে এই সেবাখাত ধ্বংস হয়ে যাবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে যদি এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে আমরা গ্রাহক এবং সেবা খাতের সবাইকে নিয়ে এনবিআর কার্যালয় ঘেরাও করব।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এর সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, এমন উদ্যোগের ফলে ছোট উদ্যোক্তা যেমনভাবে হুমকির মুখে পড়বে ঠিক একইভাবে গ্রাহকদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝার চাপ বাড়বে। ফোনে ইন্টারনেট সেবা বিমুখ হবে জনগণ যা নতুন করে বৈষম্য তৈরি করবে।
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসের বলেন, নতুন করে করের বোঝা জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলবে না সরকারকে ১০ নম্বর সংকেতে ফেলতে পারে। হঠকারীমূলক সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।
প্রযুক্তিবিদ এবং বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, কারো সঙ্গে আলোচনা না করে নতুন করে ইন্টারনেট সেবায় কর আরোপ করা এক ধরনের স্বৈরাচারী আচরণ। নতুন করে কর বাড়লে টেলিযোগাযোগ ইন্টারনেট সেবা খাত হুমকির মুখে পড়বে। নতুন উদ্যোক্তা তৈরি তো দূরে থাক গ্রাহকরা এ সেবা গ্রহণ করতে পারবে না। ফলে নতুন করে কর আদায় করার যে সিদ্ধান্ত তা হোঁচট খাবে।
মানববন্ধন আরও বক্তব্য রাখেন প্রযুক্তিবিদ ফিদা হক, ফ্রিল্যান্সারদের প্রতিনিধি আনিস, পাঠাও এর সিইও ফাহিম আহমেদসহ খাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৫
এসসি/আরআইএস