ঢাকা: কাগজপত্র ছাড়া চোরাই মোটরসাইকেল কেউ কিনলে অর্থাৎ চোরাই মোটরসাইকেল যার কাছে পাওয়া যাবে তাকেও গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মো. খালেক হাওলাদার ওরফে সাগর আহম্মেদ নামে মোটরসাইকেল চোর চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার পূর্ব বাজারের একটি গ্যারেজ থেকে ১২টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার খালেক গত ১৫ বছরে এক হাজার মোটরসাইকেল ঢাকা থেকে চুরি করেছে। এর আগে একই চক্রের কাছ থেকে গত মাসে আরো ৪০টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
গত মাসে একটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় তুরাগ থানায় মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তকালে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় জানা যায়, মোটরসাইকেল চোর নারায়ণগঞ্জ জেলায় অবস্থান করছে।
এরপর গোয়েন্দা পুলিশ চোরের অবস্থান শনাক্ত করে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযান চালিয়ে খালেককে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার খালেকের সঙ্গে আরও ৭-৮ জন সহযোগী রয়েছে। যারা এরই মধ্যে মোটরসাইকেল চুরির মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে রয়েছে। জেল থেকে বেরিয়ে তারা একইভাবে আবার চুরি করেন।
ডিবি প্রধান বলেন, কাগজপত্র নেই এমন মোটরসাইকেল কেনা অবৈধ। চোরাই মোটরসাইকেল যার কাছে পাবো তাকেই চোর হিসেবে সাব্যস্ত করবো এবং গ্রেফতার করা হবে। চোরাই মাল কেনা একটা অপরাধ। কেউ যদি কাগজপত্রবিহীন চোরাই মোটরসাইকেল কেনেন তাদের সবার বিরুদ্ধে আমরা আইগত ব্যবস্থা নেবো।
কোনোভাবেই মোটরসাইকেল চুরি রোধ করাই যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে। বাসার গ্যারেজ, রাস্তা কিংবা অফিস থেকেও তালা ভেঙে অনেকের মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে।
এ চোর চক্রের সদস্যরা প্রথমে কোনো একটি বাসায় মোটরসাইকেল থাকলে সেটি টার্গেট করেন। বাসার গ্যারেজের তালা ভাঙার পর মোটরসাইকেলের তালা খুলে নিয়ে যায়।
ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল চুরির পর ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও হাওর অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কম দামে বিক্রি হয়। এসব চোরাই মোটরসাইকেল কাগজপত্র না থাকলেও কেউ কেউ কিনে নিচ্ছে।
আমরা বারবারই বলে যাচ্ছি, কাগজপত্র নেই এমন মোটরসাইকেল কেনা অবৈধ। এখন চোরাই মোটরসাইকেল যার কাছে পাবো তাকেই চোর হিসেবে সাব্যস্ত করে গ্রেফতার করা হবে।
যে দোকানে নকল চাবি বানানো হয় তারাও চোর চক্রের সঙ্গে জড়িত। কারণ কেউ একজন নকল চাবি বানাতে এলে ওই দোকানি একই চাবি বানিয়ে তার কাছেও একটি রেখে দেন। যারা নকল চাবি বানায় তাদের বিরুদ্ধে ডিবির অভিযান চলছে।
গ্রেফতার খালেকের বিষয়ে ডিবি প্রধান বলেন, খালেক এক সময় চাঁদপুরে মোটরসাইকেলের মেকানিকের কাজ করতেন। মেকানিকের কাজ করা অবস্থায় চোর চক্রের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং মোটরসাইকেল চুরি চক্রে জড়িয়ে পড়েন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৩
পিএম/জেএইচ