মাদারীপুর: পদ্মা সেতু চালুর হওয়ার পর মাদারীপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব ঢের কমেছে। বর্তমানে কম সময়ে এ রুটে যাতায়াত সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও পরিস্থিতি ভিন্ন।
অতিরিক্ত সময় ব্যয়ের পেছনে এক্সপ্রেসওয়েতে বারবার যাত্রী ওঠা-নামাকে দায়ী করা হচ্ছে। যাত্রীরা বলছেন, বাসগুলো পদ্মা সেতুর দুইপ্রান্তে অন্তত ১১/১২টি স্টেশনে থামে। সেখান থেকে যাত্রী ওঠা-নামা করায়। নির্ধারিত স্টেশন ছাড়াও যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামা করানোর অভিযোগও করেছেন তারা।
অনেক সময় যাত্রী না পাওয়া সাপেক্ষেও ৫ থেকে ২০ মিনিট দেরি করে বাস চালকরা। ফলে যেখানে এক ঘণ্টা সময় কম ব্যয় করে ঢাকা পৌঁছান যায়, সেখানে সময় লাগে দেড় ঘণ্টা বা তারও বেশি। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ে ব্যাপক আকারে। এ অব্যবস্থাপনা দূর করতে শিবচর থেকে ঢাকা রুটে সরাসরি বাস চালুর দাবি করেছেন তারা।
কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি, নির্ধারিত স্টেশন ছাড়া যাত্রী তোলা বা নামানো হয় না। যাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতেই একাধিক নির্ধারিত স্টেশনে বাস থামানো হয়। তা ছাড়া ঢাকা-মাদারীপুর যাতায়াত দূরত্ব কম হওয়ায় বিরতিহীন বাস সার্ভিস চালু হয়নি।
ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যে পরিবহনগুলো চলাচল করে তাতে এ অঞ্চলেরই বেশিরভাগ যাত্রী যাতায়াত করেন। অভিযোগ আছে, এ রুটের বাসগুলোও এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্থানে থেমে যাত্রী তোলে। এতে ঢাকা পৌঁছতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে।
এমন অব্যবস্থাপনা নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভ ব্যাপক। তাদের ভাষ্য, বাসগুলো দূরপাল্লার হলেও ‘লোকাল’ পরিবহনের মতো চলাচল করে। তাই এ রুটে সরাসরি বাস প্রয়োজন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শিবচরের সূর্যনগর এক্সপ্রেসওয়ের যাত্রী ছাউনি থেকে যাত্রী তুলে একটি বাস পাঁচ্চর স্ট্যান্ডে থামায়। অন্তত ২০ মিনিট সময় নেয় এ স্থানে। সূর্যনগর থেকে ছেড়ে গিয়ে বাসটি আবার থামে নাওডোবা স্ট্যান্ডে। সেখানেও একই সময় ব্যয় করে। সড়কের যেকোনো স্থানে যাত্রী পেলেও কন্টাক্টর তুলে নিচ্ছেন। এতে সব মিলিয়ে অন্তত ৪০ মিনিট অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। নির্ধারিত আসনের চেয়েও অতিরিক্ত যাত্রী নেয় বাসটি। সিট পূরণ হয়ে যাওয়ার পর যারা বাসে ওঠেন, একে অপরের শরীরে শরীর ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
ইয়াসিন নামে এক যাত্রী বলেন, অন্যান্য অঞ্চলের দূরপাল্লার পরিবহনে যাত্রীরা আরামে ঢাকা যেতে পারে। গাড়িও ভালো; একটানে পৌঁছে যায়। আর ঢাকার এতো কাছে থেকেও শিবচরের যাত্রীদের নিয়মিত ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ রুটের বাসগুলো লোকালের চেয়েও বাজে হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভাঙ্গা-ঢাকা রুটের একাধিক বাসের চালক এবং সুপারভাইজার জানান, স্থানীয়রা বিভিন্ন স্থানের যাত্রীদের নিয়ে ঢাকা যেতে একাধিক কাউন্টার তৈরি করেছে। ভাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলোকে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের একাধিক স্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিতে হয়। যাত্রীদেরও বিপদাপদ আছে। এ কারণেই একাধিক স্থানে বাস থামাতে হয়। শিবচর থেকে ঢাকা ৫৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার। কম দূরত্বে চেয়ার কোচ পরিবহন থাকে না। তবে আগামীতে এ রুটেও সরাসরি বাস সার্ভিস চালু হতে পারে।
এক্সপ্রেসওয়েতে যত্রতত্র বাস থামানোর বিষয়ে শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক বলেন, এখানে যত্রতত্র বাস থামানোর সুযোগ নেই। নির্ধারিত কয়েকটি স্ট্যান্ডেই থামাতে পারে। মহাসড়কে যত্রতত্র যানবাহন থামানোর ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশের কঠোর বিধি-নিষেধ রয়েছে। সার্বক্ষণিক আমাদের টিম হাইওয়ে ডিউটিতে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
এসআইএ/এমজে