ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ঈদ আনন্দ শেষ কর্মচারীদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ঈদ আনন্দ শেষ কর্মচারীদের

ঢাকা: রাজধানীর বঙ্গবাজার সংলগ্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিঃস্ব ব্যবসায়ীর পাশাপাশি ঈদ আনন্দ শেষ দোকান কর্মচারীদের। এবারের ঈদে শূন্য হাতেই বাড়ি ফিরতে হবে তাদের।

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে নিজেদের দুঃখের কথা জানান দোকান কর্মচারীরা।  

তারা বলেন, প্রতিবছর অপেক্ষা থাকে চাঁদ রাতকে ঘিরে। এক-দুই মাসের বকেয়া টাকা আর বোনাস হাতে উঠত সে রাতে। তার পর সেই টাকা দিয়ে প্রিয়জনদের জন্য পোশাক ও অন্যান্য জিনিস কেনার পরিকল্পনা থাকে। কিন্তু ভয়াবহ আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কাজ হারিয়ে রাতারাতি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন শত শত ব্যবসায়ী আর চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন হাজার হাজার দোকানকর্মী।

ঈদ মৌসুম এলেই বঙ্গবাজারে কাপড়ের দোকানে খণ্ডকালীন বিক্রয়কর্মীর কাজ নেন মো. রনি। তিনি বলেন, প্রত্যেক বছরই এক মাসের জন্য এ মার্কেটে কাজ নেই। এই টাকায় নিজের জন্য আর মা-বাবার জন্য ঢাকা থেকে মার্কেট করে নিয়ে যাই। এইবার তো আর সম্ভব না। মালিকেরই তো সব শেষ। এই অবস্থায় নিজেই নিজের বুঝ অনুযায়ী চলতে হবে।

একজন বিক্রয়কর্মীর কাছে সারা বছর ধরে ঈদের মার্কেট ধরার প্রত্যাশা থাকে উল্লেখ করে বিক্রয়কর্মী মেহেদী বলেন, সারা বছর কম বেশি যাই কামাই, ঈদে আশা থাকে বেশি টাকা আয় করার। সেই টাকা দিয়ে প্রিয়জনদের জন্য পছন্দের জিনিস কেনাকাটা করি। তবে এবার আর সেটা হলো না। খালি হাতেই বা ধার দেনা করে বাড়ি ফিরব। মালিকের সব শেষ, তার কাছে কিছু চাওয়ার নেই। তিনি যেদিন যেতে বলবেন, চলে যাব।

ইমরান গার্মেন্টসের বিক্রয়কর্মী ফেরদৌস রহমান বলেন, পুরো বঙ্গবাজারে মালিকের ৬-৭ টা দোকান। বেশিরভাগ দোকানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাল তেমন বাঁচাতে পারিনি। এবার মালিকের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, উনার কাছে বেতন বোনাস কিভাবে চাইব? গত মাসের বেতন এখনও পাইনি। পরিবার নিয়ে কিভাবে ঈদ কাটাব বলতে পারছিনা।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক দোকানে ৫-৬ জন করে বিক্রয়কর্মী। সবাই মালিকদের মতো নিঃস্ব হয়ে গেছে। ঈদ উৎসবের চেয়ে বড় চিন্তা এখন চাকরি। আবার দোকান কখন হবে, কবে তাদের চাকরি হবে? এটাই সবার দুশ্চিন্তা।  

বিসমিল্লাহ ফ্যাশনের মালিক মো. সুমন দেওয়ান বলেন, মোহাম্মাদীয়া কমপ্লেক্সের সব দোকান পুড়ে শেষ। সবারই ৪০-৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। দোকান নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। বিক্রয়কর্মীদের কিছু দেওয়ার অবস্থা নেই।

তিনি আরও বলেন, অনেকের দুই মাসের বা এক মাসের বেতন বকেয়া। তাদের বোনাসসহ চাঁদ রাতে টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগুনে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। কর্মচারীদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। আবার কিছু করতে পারলে তাদের ডাকব।

এর আগে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুনের সূত্রপাত হয়। বঙ্গবাজার থেকে আশপাশের আরও চারটি মার্কেটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট কাজ করে। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখনও আগুন পুরোপুরি নেভার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি ফায়ার সার্ভিস।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২৩
এমএমআই/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।