রাজশাহী: সংসার করার দাবিতে গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন হ্যাপি খাতুন (২৫) নামের এক নারী।
এ ঘটনায় তাকে বাঁচাতে গিয়ে স্বামী রনি সরদারের (৩২) দুই হাতও আগুনে পুড়ে গেছে।
চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে সবকিছু জানার পরও স্বামী ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে এখন হাসপাতালে দেখভাল করছেন রনির প্রথম স্ত্রী সুমি খাতুন (২৮)।
জানতে চাইলে সুমি খাতুন বলেন, তাদের বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া। তাদের দুইটি মেয়ে আছে। বড় মেয়ের বয়স ১৪ এবং ছোট মেয়ের বয়স ৬ বছর।
স্ত্রী ও দুই মেয়ে রেখেই তার স্বামী রনি সরদার ময়মনসিংহের হ্যাপিকে বিয়ে করেন। প্রায় চার বছর আগে হ্যাপির সঙ্গে রনির পরিচয় হয় ফেসবুকে। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অবৈধ মেলামেশা করায় চাপের মুখে প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়েই তার স্বামী রনি ওই হ্যাপিকে বিয়ে করেন। এরপর তারা গোপনে পাবনার রূপপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করেন। পরে এ বিষয়টি পরিবারের মধ্যে জানাজানি হয়। এরপর থেকে রনি তাদের সাথেও থাকতেন আবার দ্বিতীয় স্ত্রী হ্যাপি বাড়িতেও যাতায়াত করতেন। কিন্তু বেশ কিছুদিন থেকে হ্যাপি কেবল তার সাথেই ঘর সংসার করার জন্য রনিকে চাপ দেন। কিন্তু রনি তার প্রথম স্ত্রী ও দুই সন্তানকে ছাড়তে পারবেন না বলে জানান। এ নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী সাথে রনির প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। এর আগে বিভিন্নভাবে হ্যাপি কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন।
এ ঘটনার জের ধরে সোমবার (৮ মে) বিকেলে হ্যাপির বাড়িতে গেলে রনির সামনেই তিনি গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় হ্যাপিকে বাঁচাতে গিয়ে রনিরও দুই হাত পুড়ে যায়। পরে তাদের প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পরে তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানান।
এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আফরোজা নাজনীন বলেন, হ্যাপির শরীরের ৩২ শতাংশ পুড়ে গেছে এবং রনি সাত শতাংশ পুড়েছে। তাই তিনি আশঙ্কামুক্ত। তবে পেট্রলের আগুনের কারণে হ্যাপির অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দগ্ধ হ্যাপিকে ঢাকা স্থানান্তরের জন্য বলা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রামেক হাসপাতাল বার্ন ইউনিটের প্রধান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২৩
এসএস/এএটি