ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পাটগাছ ১৫ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ ও ১১ টন অক্সিজেন ত্যাগ করে 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
পাটগাছ ১৫ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ ও ১১ টন অক্সিজেন ত্যাগ করে 

ঢাকা: পাটগাছ বায়ুমণ্ডল থেকে ১৫ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ ও ১১ টন অক্সিজেন ত্যাগ করে, যা একটি পরিবেশ বান্ধব ফসল বলে এক কর্মশালায় জানানো হয়েছে।  

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) এর সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম, অগ্রগতি, প্রতিবন্ধকতা ও ভবিষ্যৎ করণীয় পর্যালোচনা শীর্ষক এ কর্মশালা বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিজেআরআই এর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

 

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিজেআরআই মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল আউয়াল ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোসাম্মাৎ জোহরা খাতুন।  

প্রধান অতিথির বক্তব্য রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, আমরা জানি জিডিপিতে পাটের অবদান এক দশমিক চার শতাংশ এবং কৃষিতে ২৬ শতাংশ। অর্থাৎ মোট জিডিপিতে পাটের অবদান আট বিলিয়নের মতো। আবার আট বিলিয়নের এক দশমিক দুই বিলিয়ন আমরা রপ্তানি করি। তাহলে পাটের রপ্তানি টু জিডিপি অনুপাত অন্য যেকোনো সেক্টরের থেকে বেশি।  

তিনি পাটের উৎপাদনশীলতাকে দ্বিগুণ করার আহবান জানিয়ে রুহুল আমিন বলেন, নিজ নিজ ইনস্টিটিউটকে তাদের পণ্যের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। উৎপাদনশীলতা বাড়লে ইউনিট প্রতি খরচ কমবে, ইউনিট প্রতি খরচ কমলে লভ্যাংশের অনুপাত বাড়বে। আর লভ্যাংশের অনুপাত বাড়লে আয় বাড়বে, ফলে দারিদ্রতা কমবে। একই সঙ্গে জীবন যাত্রার মান বাড়বে, ক্ষুধার্থতা কমবে এবং খাদ্য নিরাপত্তা বাড়বে। এভাবে চক্রাকারে একটির সঙ্গে আরেকটি জড়িত এবং সামগ্রিকভাবে দেশের উন্নতি হবে।  

তিনি বলেন, আমরা যদি এসডিজির কথা বলি তবে উৎপাদনশীলতায় অবদান রাখতে হবে, আয় বাড়াতে অবদান রাখতে হবে, টেকসই কৃষিতে অবদান রাখতে হবে। আমি দেখতে পাচ্ছি পাট আগে থেকেই ভালো একটি অবস্থানে রয়েছে। যেমন- এক হেক্টর জমিতে ১০০ দিনের পাট বায়ুমণ্ডল থেকে ১৫ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং ১১ টন অক্সিজেন ত্যাগ করে, যা একটি পরিবেশ বান্ধব ফসল। বসতবাড়ির আঙিনায় পাট শাক চাষ করে পরিবারের পুষ্টির নিশ্চয়তা দেওয়া যেতে পারে। সরকার ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট এর পাশাপাশি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট এর মাত্রা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে, যেখানে বিজেআরআই এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।  

সভাপতির বক্তব্যে ড. মো. আবদুল আউয়াল বলেন, বাংলাদেশ সরকার খুবই সফলতার সঙ্গে এমডিজি সম্পন্ন করেছে। এসডিজি বাস্তবায়ন সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়, সবাইকে এক যোগে কাজ করতে হবে।  

তিনি বলেন, পাটের একটি সমস্যা হলো বীজের সমস্যা। পাটের জমিতে যদি পাট বীজ উৎপাদন করা হতো তবে এ সমস্যা দূর করা সম্ভব। আমরা কেনাফ বীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন হয়েছি, বিজেআরআই এর সহায়তায় কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটন ইউনিয়নে কেনাফ বীজ উৎপাদন সমিতি গড়ে তোলা হয়েছে। এতে মোট বীজ উৎপাদনকারী কৃষক ও কৃষাণীর সংখ্যা প্রায় ৬১২ জন। আমরা বিজেআরআই থেকে বেশকিছু টেকনোলজি উদ্ভাবন করেছি যেখানে এককভাবে পাট বীজ উৎপাদনের প্রয়োজন নেই, পাট বীজ আন্তঃফসলের সঙ্গে মরিচের জমিতে, মুলার সঙ্গেও অন্যান্য রবি শষ্যর সঙ্গে আন্তঃফসল হিসেবে পাট বীজ করা যায় এবং এটা লাভজনক। আবার পুকুরপাড়ে, নদীর ধারে, রাস্তার পাশে, জমির আইলের ভেতর এবং বাগানের ভেতর আমরা পাট বীজ উৎপাদন করতে পারি।  

কর্মশালায় প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেছেন প্রশাসন ও অর্থ উইং এর পরিচালক কৃষিবিদ ড. এস এম মাহবুব আলী এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন খান।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
এমআইএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।