ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দিয়াবাড়ি হাটে পর্যাপ্ত গরু, ক্রেতা কম

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৯ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৩
দিয়াবাড়ি হাটে পর্যাপ্ত গরু, ক্রেতা কম

ঢাকা: ‘দিনে ভালো, রাতে কাস্টমার (ক্রেতা) নাই। দামও বলে না কেউ।

গরু বাঁধা পইড়ে আছে, তাই আমরাও অলস বইসে আছি। আরও দিন আছে, বেচা-বিক্রি হবেনে। ভাবিছি এই বাজারে যেসব গরু আছে, সেগুলো কাটবে তো? নয়তো গরু নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। ’ 

সোমবার (২৬ জুন) রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি কোরবানির পশুর হাটে বসে অলস সময় পার করতে করতেই বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন সুক চান নামে এক গরু বেপারী। তিনি ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু থেকে ১২টি গরু নিয়ে এই হাটে এসেছেন।  

হাট ঘুরে দেখা যায়, পর্যাপ্ত পরিমাণে গরু আছে। ছোট, মাঝারি ও বড়সহ বিভিন্ন আকারের গরু মাঠে বেঁধে রাখা হয়েছে। তবে সেই তুলনায় নেই ক্রেতা।

এ বছর বেপারীরা গরুর বাজার নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাদের শঙ্কা, হাটের গরু সব বিক্রি হবে তো! তারা বলছেন, এ বছর সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক মন্দা রয়েছে। পাশাপাশি খামার থেকে বেশি গরু বিক্রি হচ্ছে।

 

সুক চান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার ১২টি গরুই নিজের পালা। আমি অনেক যত্ন করে পাইলেছি। ছয়টি গরু বিক্রি করে দিয়েছি। হাটের অবস্থা আমার কাছে ভালো ঠিকতেছে না। বাকি ছয়টি গরু আছে। সেগুলো বেইচে দিয়ে বাড়ি চলে যাব। ’  

তিনি বলেন, ‘হাটে মেলা গরু, কিন্তু ক্রেতা কম। ক্রেতারা যা দাম বলে, তাতে গরু বেচা যাবে না। আমি ভাবতেছি, এই হাটের সব গরু কাটবে কি না। নয়তো গত দুই বছর আগে ৩০০ ফুট হাটের মতো অবস্থা হবে বেপারীদের। গরুর দাম না পেয়ে পানির দামে ছাইড়ে যাবে, নয়তো নিয়ে বাড়ি ফেরত যেতে হবে। ’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন ফার্ম গরুকে ফিড খাইয়ে মোটা-তাজা করে বিক্রি করছে। ক্রেতারা তো বোঝে না, ওগুলো ফিড খাওয়ানো, মাংস কম। গৃহস্থের গরু খর-কুড়ো-গম খাওয়ানো। এগুলো যে পেটানো বডি, ক্রেতারা তো সেটা চেনে না। চিকন বলে দাম বলে না। তবে যারা চেনে, তারা আসল দামে গরু নিয়ে যাচ্ছে। ’ 

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে দিয়াবাড়ি কোরবানির পশুর হাটে ১৪টি গরু নিয়ে এসেছেন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ আলী। তিনি বলেন, ‘হাটে এসেছি সপ্তাহ হয়ে গেল। একটি গরু বিক্রি করেছি। এখনও ১৩টি আছে। দাম পাচ্ছি না এবছর। খরিদদাররা দাম বলে কম। এই কয় দিনে বাজার অনেক নরম। গরু যে টাকা দিয়ে কিনেছি, সেই টাকাও খরিদদাররা বলছে না। ’ 

তিনি বলেন, ‘এ বছর ট্রাকভাড়া পড়েছে ৩২ হাজার টাকা (সিঙ্গেল ট্রিপ)। খাবারের দাম বেশি। এদিকে সব জিনিসের দাম বেশি। তবে বাজারে গরু ভরপুর আছে। দেখি এখনও দুই দিন আছে। আল্লাহ যা রাখছেন তাই হবে। ’ 

দিয়াবাড়ি হাটে আসা ক্রেতা ফরিদ আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাজারে ক্রেতারা গরুর দামও ছাড়ছেন না। তারা আরও দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন। এদিকে ছোট গরু ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি। আর মাঝারি গরুর দাম অনেক বেশি। এর চাহিদাও অনেক। আবার বড় গরুর দাম কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও কিছু কিছু গরুর দাম অতিরিক্ত বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। সন্ধ্যা ৭টার দিকে এসেছি। রাত ২টা বাজে, ক্রেতা নেই, কিন্তু বিক্রেতারা গরুর দাম ছাড়ছে না। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৩
এসজেএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।