ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফার্মগেটে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৩ ছিনতাইকারী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২৩
ফার্মগেটে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৩ ছিনতাইকারী

ঢাকা: রাজধানীর ফার্মগেটে ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল মনিরুজ্জামান তালুকদার হত্যাকাণ্ডে তিন ছিনতাইকারী সরাসরি জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৩ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে শুধু রাব্বি (২১) ও লিটনের (২১) নাম বলেছে পুলিশ। অপরজনের নাম জানানো হয়নি।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই ফার্মগেট এলাকায় পুলিশ সদস্য মনিরুজ্জামানকে খুন করা হয়েছে। ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাকে আক্রমণ করে গ্রেপ্তাররা। মনিরুজ্জামান তাদের বাধা দেন। কিন্তু তাকে ছুরিকাঘাত করে তার মানিব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। পরে ঘটনাস্থলের পশ্চিম দিক দিয়ে পালিয়ে মোহাম্মদপুর গিয়ে তারা আলাদা হয়ে যায়।

ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ঈদের আগে ১ হাজারেরও বেশি ছিনতাইকারীকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া গত ৪৮ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ১৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি।

যেকোনো উৎসবকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর পুলিশ রাস্তাঘাট, মার্কেট, শপিংমল ও কোরবানির পশুর হাট কেন্দ্রিক নির্বিঘ্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করে। তারপরও ‘অ্যাবসোলুট’ সিকিউরিটি বলতে কোনো কিছু নেই। যদি হতো সারা বিশ্বে আলাদা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন হতো না। এবার ঈদে দুটি বড় ঘটনা সবাইকে নাড়া দিয়েছে। ‌এরমধ্যে একটি ঘটনা হচ্ছে, ঈদের দিন রাতে হাতিরঝিল এলাকায় একজন সাংবাদিক ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে আহত হয়েছেন। আর অন্য আরেকটি হচ্ছে আমাদের একজন পুলিশ কনস্টেবল ছিনতাইকারীদের হামলায় ফার্মগেট এলাকায় নিহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, সাংবাদিককে আহত করার ঘটনায় জড়িত হামলাকারীদের আমরা শনাক্ত করে ফেলেছি। এ বিষয়ে খুব দ্রুতই আমরা সুসংবাদ দিতে পারব বলে আশা করি। কনস্টেবল মনিরুজ্জামানের হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন ছিনতাইকারীকে গত ৪৮ ঘণ্টায় আমরা গ্রেপ্তার করেছি। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটিও আমরা জব্দ করতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘটনায় আরও কিছু কাজ আমাদের বাকি রয়েছে।

মনিরুজ্জামানের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডিএমপির এই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ঘটনার দিন ভোরে কনস্টেবল মনিরুজ্জামান শেরপুর থেকে বাসে করে ঢাকায় আসেন। ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার আগে তিনি ফার্মগেটে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাস্তা পারাপারের জন্য। এ সময় তিন ছিনতাইকারীদের একজন প্রথমে কনস্টেবল মনিরুজ্জামানের রাস্তা অবরোধ করে ও তার কাছে মানিব্যাগ চায়। তিনি অস্বীকৃতি জানিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ছিনতাইকারী তিনজন হওয়ায় তিনি পেরে ওঠেননি। ছিনতাইকারীরা মনিরুজ্জামানের শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাত করে তার মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। তারা মোহাম্মদপুর থেকে আরয়াও পশ্চিম দিকে চলে যায়। সেখান থেকে তারা আলাদা হয়। গ্রেপ্তারদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। আরও কেউ এ ঘটনায় জড়িত কিনা- তদন্ত করা হবে।

নিহত মনিরুজ্জামানের বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, কনস্টেবল মনিরুজ্জামান প্রভিডেন্ট ফান্ডের ইন্টারেস্টের টাকা নিতেন না। তিনি খুব সৎ ও নিষ্ঠাবান ছিলেন। তাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি, বাংলাদেশ পুলিশে এ ধরনের কনস্টেবল আছেন। তার বয়স মাত্র ৪০ বছর, এই সময় তাকে আমরা হারিয়েছি। তার পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২৩
এমএমআই/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।