ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, মুদ্রানীতির ত্রুটিতে কমছে না নিত্যপণ্যের দাম

গৌতম ঘোষ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০২৩
উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, মুদ্রানীতির ত্রুটিতে কমছে না নিত্যপণ্যের দাম

ঢাকা: আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে স্থানীয় বাজারে তার প্রতিফলন নেই। ফলে ভোক্তারা এর সুফল পাচ্ছে না।

আমদানির তুলনায় খুচরা বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্যে পার্থক্য অনেক বেশি। কৃষিপণ্যের উৎপাদন মূল্যের চেয়ে খুচরা দরেও একই পরিস্থিতি। কারণ ডলার সংকট, সময়মতো এলসি (ঋণপত্র) খুলতে না পারা এবং পণ্য খালাসে বিলম্ব।

এসব কারণে দেশে আমদানির পর পণ্যের মূল্য আগের চেয়ে বেশি পড়ছে। সেজন্য ভোক্তারা এর সুফল পাচ্ছে না। তবে বাজার ব্যবস্থাপনায় দুর্বল মনিটরিং, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রানীতিসহ সিন্ডিকেশন কার্যক্রমকে দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দ্রব্যমূল্য কমবে না। এজন্য বাজার ব্যবস্থাপনাকে সুসঙ্গত করতে ভারতের মতো স্থায়ী কৃষিমূল্য নির্ধারণ কমিশন গঠন করতে হবে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত দুই মাসে দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়ে প্রায় তিন গুণ। যদিও উৎপাদন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর গত ৫ জুন থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়া শুরু করে সরকার। একই সঙ্গে ভোজ্যতেলের চাহিদা বছরে ২২ লাখ টন ও রসুনের ৬ লাখ টন, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে এ দুটি পণ্যের ক্ষেত্রেই উদ্বৃত্তের পরিমাণ প্রায় দুই লাখ টন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি মূল্যের তুলনায় খুচরা মূল্যের উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। এছাড়া মৌসুমি শুল্ক না থাকায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের উৎপাদন মূল্য ওই পণ্যের আমদানিকৃত মূল্যের ধারা অতিমাত্রায় প্রভাবিত। এছাড়া পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের বেশির ভাগ চাহিদা স্থানীয় উৎপাদনে মেটানো সম্ভব, তবে উৎপাদিত পণ্য যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়। এতে উৎপাদন মৌসুমে চাষি যথাযথ মূল্য পান না এবং লিন পিরিয়ডে ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে আমদানিকারকদের দাবি, যথাসময়ে ব্যাংকগুলো ডলার সরবরাহ করতে না পারায় আমদানি বিঘ্নিত হচ্ছে। শতভাগ এলসি মার্জিনের কারণে কস্ট অব ফান্ড বেড়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ডলার সরবরাহে ঘাটতির ফলে সরকারকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। এর ফলে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের দাবি, আমদানীকৃত পণ্য যথাসময়ে খালাস করতে না পারায় জাহাজের ড্যামারেজ (ক্ষতিপূরণ) চার্জের কারণে আমদানীকৃত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমলেও সে অনুযায়ী শুল্ক কর্তৃপক্ষ শুল্কায়ন করছে না। এর ফলেও দাম বাড়ছে।

এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বাংলানিউজকে বলেন, নিত্যপণ্যের দাম কমাতে হল মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের সুদ হার কমানো দরকার হলে করতে হবে। এগুলো করতে না পারলে ডলারের অবমূল্যায়ন চলতেই থাকবে। বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য সঠিক কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। আরেকটা বিষয় হচ্ছে মুদ্রানীতি। সেখানে যেটা করা হয়, টাকা ছাপানো হয়, আরেকটা হচ্ছে ব্যাংকের সুদের হার বাড়ানো হয়। এই দুইটির ফলে আমাদের মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাচ্ছে। একদিকে সরকার বাজেট বাস্তবায়নে টাকা ছাপাচ্ছে অন্য দিকে সরকার সুদের হার বাড়াচ্ছে না। যাও বাড়াচ্ছে সেটা মাত্র এক শতাংশ যেটায় কোনো লাভ হবে না।

তিনি বলেন, আমাদের চাহিদা এখনও ঠিক করতে পারছি না। আর সরবরাহ ঠিক আছে। আমাদের চাহিদাকে একটা নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড় করাতে হবে। তা না হলে আমাদের মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না। সরকার যতদিন টাকা ছাপাবে ততদিন মূল্যস্ফীতি হতেই থাকবে। আমাদের বাজার মনিটরিং এর থেকে সরবরাহটা ঠিক রাখাটাই হচ্ছে আসল। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। সর্বোপরি যতদিন পর্যন্ত ডলার পর্যাপ্ত পরিমাণে না আসবে ততদিন পর্যন্ত সরবরাহে ঘাটতি থাকবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ এবং যা দূর করতে হবে। এজন্য মূদ্রানীতি নিয়ে কাজ করতে হবে, টাকা ছাপানো কমাতে হবে, ব্যাংকের সুদের হার বাড়াতে হবে। সরকার যে বাজেট দিয়েছে সেটা বাস্তবায়ন করতে হলে টাকা ছাপাতে হবে। আর এটা বন্ধ করতে না পারলে মূল্যস্ফীতি কমাতে পারবে না।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এর সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে স্থানীয় বাজারের একটা সময়ের বিলম্বিত প্রতিফলন থাকতে পারে। বাজার ব্যবস্থাপনার দিক থেকে ঠিক সময়ে আমদানি করা হয়েছে কিনা সেটা একটা ফ্যাক্টর। কারণ, কিছু ক্ষেত্রে এলসি খুলতে দেরি হয়েছে। এটার সুযোগও কেউ কেউ নিতে পারে। এছাড়া মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে আমদানিকারকরা বেশি দাম দিয়ে এলসি খুলছে। এরও একটা প্রভাব বাজারে থাকতে পারে। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজার না হয়ে কোনো কোনো পণ্য বাজারের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। এখানে বাজার ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণের ওপর সময়মতো পদক্ষেপ নিতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের বাজার ব্যবস্থাপনায় খুবই ব্যতিক্রমী ওঠা নামা করে। এটা বাজারের ওপর অনেক দূর নির্ভরশীল। বাজার ব্যবস্থাপনায় আমাদের দেশগুলোয় অনেক ধরনের দুর্বলতা রয়েছে। এ খাতে অনেক বড় বড় ব্যবসায়ী ঢুকেছে; তারা এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। যার ফলে আমাদের এখানে মূল্যস্ফীতি অনেক উচ্চ পর্যায়ে চলে গেছে। আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি এমন পর্যায়ে গেছে যেটা বেতন বৃদ্ধির হারের থেকে অনেক বেশি। যার ফলে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে, জীবন মান কমেছে। সরকারকে এসব খাতে গুরুত্ব দিতে হবে। আর আমার একটা পরামর্শ থাকবে ভারতের মতো আমাদেরও একটা স্থায়ী কৃষি মূল্য নির্ধারণ কমিশন করতে হবে। যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে বাজার ব্যবস্থাপনাকে সুসঙ্গত করতে বিভিন্ন সময় সরকারকে পরামর্শ দেবে।

কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাবের) প্রেসিডেন্ট গোলাম রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সমস্যা অনেক রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেল, চিনি, গম সবগুলোর দাম অর্ধেকের বেশি কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশেও দাম বাড়ে, সে পণ্য এখানে আসুক বা না আসুক। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশে সেই অনুপাতে দাম কমে না। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোও বাজার নিয়ন্ত্রণে সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারেনি।

এছাড়া দাম বাড়ার কারণের মধ্যে রয়েছে বাজার ব্যবস্থাপনার কাঠামোগত ও নীতিগত দুর্বলতা, যথাযথ প্রতিযোগিতার অভাব, ক্রয়-বিক্রয়ের রেকর্ড সংরক্ষণের অভাব। নিত্য প্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম কমানোর জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে জনবল বাড়িয়ে দেশব্যাপী কার্যকর মনিটরিং কার্যক্রম বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান তিনি।

সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক টাস্কফোর্সের সপ্তম সভায় উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোজ্যতেল, আটা, ময়দা, পেঁয়াজ ও রসুনের মতো নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে ১৬-৬৩ শতাংশ দাম কমেছে, সে তুলনায় স্থানীয় বাজারে তার প্রতিফলন নেই। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন গমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে। সেখানে দেশের বাজারে প্রতি কেজি আটার দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ। চিনির দাম আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টনে ৩৩ শতাংশ বাড়লেও দেশের বাজারে প্রতি কেজিতে দাম বাড়ে ৫৮ শতাংশ। সয়াবিন তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টনে ৪৪ শতাংশ কমেছে, সেখানে দেশের বাজারে প্রতি লিটারে কমেছে মাত্র ২ শতাংশ। পাম অয়েলের আন্তর্জাতিক বাজারে দাম টনপ্রতি ৪৯ শতাংশ কমে এর বিপরীতে দেশের বাজারে কমে লিটারপ্রতি ২০ শতাংশ। পেঁয়াজের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে টনপ্রতি ৬৩ শতাংশ কমে সেখানে দেশের বাজারে প্রতি কেজিতে বাড়ে ৯৩ শতাংশের বেশি। রসুনের দাম বিশ্ববাজারে টনপ্রতি ১৬ শতাংশ কমলেও দেশের বাজারে প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৯৩ শতাংশ। একইভাবে আদার দাম আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টনে ১৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, আর দেশে প্রতি কেজিতে বেড়েছে সর্বোচ্চ ২৪৫ শতাংশ।

নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১১ মাসের উৎপাদন, আমদানি ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দেশের বাজারে বছরে চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন হলেও ১১ মাসে এর ঘাটতি রয়েছে প্রায় এক লাখ টন। একইভাবে আদার চাহিদা সাড়ে ৪ লাখ টন, সেখানে ঘাটতি রয়েছে প্রায় এক লাখ টন। বছরে গমের চাহিদা ৭০ লাখ টন, বিপরীতে এ সময়ে ঘাটতি রয়েছে ২৪ লাখ টন। এছাড়া দেশে প্রতি বছর পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টন, এর বিপরীতে ১১ মাসে উদ্বৃত্ত ১১ লাখ টন। পেঁয়াজের চাহিদার চেয়ে বাজারে উদ্বৃত্ত থাকার পরও এ পণ্যের দাম ৯৩ শতাংশ বেড়েছে দেশের বাজারে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে আরও উঠে এসেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেল ও চিনির মূল্যবৃদ্ধি বিবেচনায় আমদানি শুল্কে যে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। স্থানীয় বাজারে চিনি শিল্প সুরক্ষায় আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হলেও বর্তমানে স্থানীয় চিনির উৎপাদন মোট চাহিদার ১ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেল ও চিনির মূল্যবৃদ্ধির বিবেচনায় আমদানি শুল্কে যে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া পেঁয়াজের স্থানীয় চাষি সুরক্ষায় কৃষি মন্ত্রণালয় আইপি ইস্যু করতে বিলম্বের সুযোগ নিয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীরা।

এ পরিস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের সুপারিশে বলছে, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে স্পেসিফিক শুল্ক আরোপ করা। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষিপণ্য পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের মজুদকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। চাষি সুরক্ষায় আমদানি বন্ধ না করে মৌসুমি কর আরোপ করা। ভোজ্যতেল ও চিনি বাজারজাতে শতভাগ কনজিউমার প্যাক নিশ্চিত করা। টিসিবির পণ্য স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সংগ্রহের ব্যবস্থা করা। অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে টিসিবির বাণিজ্যিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করে বাজার ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া। পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থাপনায় প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিযোগিতা কমিশন পলিসিগত ও কাঠামোগত ঘাটতি অনুসন্ধান ও করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করতে হবে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের এলসি খোলার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডলার সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং শতভাগ মার্জিনের শর্ত শিথিল করা দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডলার সরবরাহের ব্যবস্থা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। সেই সঙ্গে এসব পণ্য শুল্কায়নের ক্ষেত্রে ট্রানজেকশন ভ্যালুর পরিবর্তে ইনভয়েস ভ্যালু বিবেচনায় শুল্কায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

টাস্কফোর্সের সভাপতি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেই সঙ্গে সঙ্গে দেশে সেই পণ্যের দাম কমানো সম্ভব হয় না। এর কারণ আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে ডলারের দাম একটা বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। এছাড়া শুল্কহার, অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যয় মূল্য নির্ধারণে প্রতিফলন ঘটে। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর পরই বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত পাঁচ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৩০ হাজার টন দেশে চলে এসেছে। অনুমোদনপ্রাপ্ত বাকি পেঁয়াজ দেশে এলে দাম আরও কমবে।

তিনি বলেন, গত এক বছরে চাহিদা বিবেচনায় দেশে চিনি, গম ও আদা ছাড়া অন্য কোনো পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি নেই। ঈদুল আজহায় যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে, সেগুলোর দাম স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অন্যান্য পণ্যের দামও স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে কথা হয়েছে। চীন থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় দেশে আদার সংকট আছে। সমাধানের চেষ্টা চলছে। আমরা ব্যবসায়ীদের সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বাজারে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০২৩
জিসিজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।