ঢাকা: উত্তরে মশা ও মশার লার্ভা খুঁজতে গিয়ে এবার নিজেদের নির্মাণাধীন ভবনেই এসব পেল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। তাই ওই ভবনটিকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
শনিবার (১৫ জুলাই) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি এও জানান, ডিএনসিসির মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন অভিযানের সপ্তম দিনে ১৪টি মামলায় মোট ৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মকবুল বলেন, গাবতলির বেড়িবাঁধ রোডে ডিএনসিসির ক্লিনার্স পল্লী আবাসনের নির্মাণাধীন দুটি ভবনে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মার্ক বিল্ডার্স ও মাইশা কন্সট্রাকশনকে দুটি মামলায় ২ লাখ করে মোট চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান নিজেদের নির্মাণাধীন ভবনে এ অভিযান পরিচালনা করেন।
এছাড়াও তিনি মিরপুর মডেল থানাধীন দারুস সালাম রোডে সরকারি কর্মচারীদের আবাসনের জন্য নির্মাণাধীন ভবনে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বঙ্গ বিল্ডার্সকে এক মামলায় ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
অভিযানের সময় অঞ্চল-৪’র আওতাধীন ৯ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের গাবতলি সিটি কলোনি, পাইকপাড়া স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় প্রায় ১০০টি ভবন, স্থাপনা, জলাশয়, রেস্টুরেন্ট ও দোকানপাট পরিদর্শন করা হয়েছে। লার্ভা ধ্বংস করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, উপ প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবেদ আলী। ডিএনসিসির মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন অভিযানের সপ্তম দিনে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ১৪টি মামলায় মোট ৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
তিনি জানান, অঞ্চল-৫’র ফার্মগেট এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ এডিস মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মশক নিধন অভিযান এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযানে চারটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় চারটি মামলায় মোট ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এডিস মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন করা হয় ও সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়। ফার্মগেটে অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান সমাজ কল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন-উল-হাসান।
অঞ্চল-৩’র আওতাধীন মহাখালী এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নাইন অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান পরিচালনাকালে বাসা-বাড়ি, বাণিজ্যিক ভবন ও নির্মাণাধীন ভবনে, ফাঁকা প্লট, ড্রেন ঝোপঝাড়ে মশক বিরোধী অভিযানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় দুটি ভবন মালিককে ২টি মামলায় মোট ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ডিএনসিসির অঞ্চল-৬’র আওতাধীন হরিরামপুর এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযান পরিচালনাকালে চারটি ভবনে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ৪ মামলায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অঞ্চল-৯’র আওতাধীন এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল বাসেত অভিযান পরিচালনা করেন। একটি ভবনে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় একটি মামলায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এসময় ভবন, স্থাপনা, জলাশয়, রেস্টুরেন্ট ও দোকানপাটসহ মোট ৩৮৫টি স্পট পরিদর্শন করা হয়।
অঞ্চল ১ আওতাধীন উত্তরা এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে জোন অফিস, কমিউনিটি সেন্টার, দুটি নগর মাতৃসদন, কবরস্থান, এটিএস (STS) পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিদর্শনকালে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি, তবে ভবিষ্যতে লার্ভা উৎপন্ন হতে পরে এমন স্থানসমূহে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করে ডেঙ্গুর বিষয়ে সবাইকে সতর্ক ও সচেতন করা হয়েছে।
এছাড়াও সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করে জনসাধারণকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতন করেন। বাংলাদেশ স্কাউট ও বিএনসিসির সদস্যরাও ডিএনসিসির কর্মীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
উল্লেখ্য, মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন অভিযান তদারকির জন্য সকল বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে দশটি টিম গঠন করা হয়েছে। দশটি টিম প্রতিদিন চলমান অভিযান তদারকি করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২৩
এমএমআই/এমজে