ঢাকা: আগামী ১০ অক্টোবরে পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে উদ্বোধনের এক সপ্তাহ পর থেকে শুরু হবে যাত্রীসহ ট্রেন চলাচল।
রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এমন পরিকল্পনা নিয়েই প্রস্তাবনা তৈরি করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। খুব দ্রুতই প্রস্তবনা অনুযায়ী চূড়ান্ত করা হবে পদ্মা সেতু দিয়ে কোন ট্রেনগুলো চলবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, এ ছয়টি ট্রেনের মধ্যে-খুলনা-ঢাকা রুটের দুটি আন্তনগর ট্রেন-সুন্দরবন ও চিত্রা, ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস বর্তমান রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু ঢাকায় চলাচল করবে।
এদিকে ঢাকা-কলকাতা রুটের আন্তর্জাতিক ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেসও রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় চলাচল করবে।
প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে, রাজশাহী থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত চলাচল করা আন্তনগর ট্রেন মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটিকেও রাজশাহী থেকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে খুলনা থেকে গোয়ালন্দ রুটে চলাচলকারী মেইল ট্রেন নকশিকাঁথা এক্সপ্রেসকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু দিয়ে সিডিউল না পাওয়ায় রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া পাবনা এক্সপ্রেস চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। একই কারণে চালু করা যাচ্ছে না বুড়িমারী এক্সপ্রেসও।
রেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হলে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু দিয়ে স্লট খালি হবে। তারপরই কেবল এ রুটে নতুন ট্রেন চালু করা সম্ভব হবে।
নতুন ১০০ কোচ পাচ্ছে যেসব আন্তনগর ট্রেন
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় চীনা নির্মিত ১০০টি আধুনিক ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ বা কোচ কেনা হয়েছে। ক্যারেজগুলোর মধ্যে শোভন চেয়ার ২৫টি, এসি চেয়ার ৩৫টি, এসি কেবিন ১৫টি, ডাইনিং কার কাম গার্ডব্রেক- ১৫টি ও পাওয়ার কার- ১০টি।
এরমধ্যে চিত্রা এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেস এবং চিলাহাটি এক্সপ্রেস এর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ৭০ টি কোচ। অবশিষ্ট রয়েছে ৩০ টি কোচ যার কমিশনিং ও ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়েছে। এই ৩০ টি কোচ ব্যবহৃত হবে ২টি ট্রেনে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) অসীম কুমার তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা একটি প্রস্তাবনা বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক বরাবর পাঠিয়েছি। যমুনা সেতু দিয়ে চলাচল করা কিছু ট্রেন পদ্মা সেতু হয়ে চলবে।
পাবনা এক্সপ্রেস কবে চালু হবে সে বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রস্তবনা পাঠিয়েছি। চালুর বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছিলেন, পদ্মা সেতু হয়ে রেলপথ উদ্বোধনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ অক্টোবর সময় দিয়েছেন। সেদিন একটি সুধী সমাবেশও অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ সালের জুন মাসে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত পুরো পথে ট্রেন চলাচল শুরু করতে পারবে।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত দীর্ঘ ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মিত হচ্ছে।
এরমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ঢাকা-মাওয়া ৪০ কি.মি. ও মাওয়া-ভাঙ্গা ৪২ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধন করা হবে আগামর ১০ অক্টোবর। আর প্রকল্পের তৃতীয় অংশের ভাঙ্গা-যশোর ৮৭ কি.মি. রেললাইন নির্মাণ কাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে। এ অংশের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৮ ভাগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩
এনবি/জেএইচ