ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভাইরাল সেই পুতুল নাচের কারিগর যে শিক্ষক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৪
ভাইরাল সেই পুতুল নাচের কারিগর যে শিক্ষক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: আধুনিক সংস্কৃতির আগ্রাসেন বাঙালি সংস্কৃতি এখন প্রায় হারানোর পথে। তবে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশুদের দিয়ে পুতুলের আদলে একটি নাচ সাড়া ফেলেছে সর্বত্র।

 

হারিয়ে যাওয়া পুতুল নাচের ঐতিহ্যকে নবরূপে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার বিষয়টি এখন মানুষের মুখে মুখে।  

সম্প্রতি প্রায় বিলুপ্ত এই লোক সংস্কৃতিকে সকলের সামনে তুলে ধরে জেলা শহরের সূর্যমূখী কিন্ডারগার্টেন ও গার্লস স্কুল।  

ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক নৃত্যশিল্পী মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়ার তত্ত্বাবধানে এ নাচ শেখে কোমলমতিরা। তারা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পুতুলের আদলে সেই অসাধারণ নৃত্য প্রদর্শন করে।  

এরপর নাচটির ভিডিও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়।  

যেখানে পুতুলের আদলে ২৬ জন শিশু নৃত্যশিল্পীর ৫ মিনিটের মনোমুগ্ধকর নাচের ভিডিও উপস্থিত মানুষের হৃদয় জয় করে নেয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ‘জীবন্ত পুতুল না’ প্রশংসায় ভাসে। এতে নতুন প্রজন্ম পরিচিত হয়েছে পুতুল নাচের সংস্কৃতির সঙ্গে।  

এদিকে ওই নাচ সর্বমহলে প্রশংসিত হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক কোরিওগ্রাফার মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়া এবং অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।  

সংস্কৃতিকর্মীরা বলেন, দেশের সংস্কৃতির রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্যতম ঐতিহ্য পুতুল নাচ। বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ এই পুতুল নাচ ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সমৃদ্ধ করেছিল সর্বত্র। মাঝেমধ্যে পহেলা বৈশাখ আর হাতেগোনা দু-একটি উৎসবে পুতুল নাচের দৃশ্য ছাড়া তেমন একটা চোখে পড়ে না। আধুনিক সংস্কৃতির আগ্রাসনে বাঙালি সংস্কৃতি চাপা পড়লেও তা যে একেবারেই বিলীন হয়ে যায়নি তা আবারও প্রমাণ হলো এই পুতুল নাচের মাধ্যমে। বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতিকে ধারণ করে এগিয়ে যাবে নতুন প্রজন্ম।

নাচের কোরিওগ্রাফার নৃত্যশিল্পী মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়া বলেন, ছোট বেলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচ দেখতাম। সুতো দিয়ে পুতুল নাচ করানো হতো। তবে এখন আর পুতুল নাচ সেভাবে হয় না, বিলুপ্তের পথে এটি। ভাবলাম একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান ও সংস্কৃতি কর্মী হিসেবে বিলুপ্ত হতে থাকা সংস্কৃতির জৌলুস আবারও ফিরিয়ে আনব। তাই নতুন প্রজন্মকে পুতুল নাচের সঙ্গে পরিচিত করার ভাবনা থেকেই এই পুতুল নাচটি তৈরি করা হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, পুতুল নাচটি দেশবিদেশে প্রশংসিত হওয়ায় আমি অনেক খুশি। মানুষ যেভাবে এই নাচটিকে গ্রহণ করে নিয়েছে তাতে আমি মনে করি আমাদের কষ্ট সার্থক হয়েছে। দীর্ঘ ২৮ বছর যাবৎ আমি সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ছোট শিশুদের নাচ শেখাতে অনেক ভালোবাসি। নাচ সমাজকে পরিবর্তন করার একটি হাতিয়ার। অথচ সেই নাচকে ভালো চোখে দেখা হয় না। আমি কারো কাছ থেকে নাচ শিখিনি। আমি নিজের অদম্য চেষ্টায় ৬ বছর বয়স থেকে নাচ করি এবং ১৫ বছর বয়স থেকে নাচ করাই। আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংস্কৃতিকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।