নড়াইল: অবশেষে সব জল্পনাকে পাশ কাটিয়ে নড়াইলের ওপর দিয়ে চলে গেল স্বপ্নের ট্রেন। সেই ট্রেনে চড়ে দ্রুততম সময়ে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকায় যেতে প্রথম যাত্রায় অংশ নিতে পারার খুশিতে আত্মহারা নড়াইলবাসী।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় খুলনা রেলওয়ে স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনটি ছেড়ে এসে সকাল ৭টা ৩৬ মিনিটে নড়াইল রেলস্টেশনে থামে।
এরই মধ্যে দিয়ে নড়াইলবাসী দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো রেলপথ ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে এলাকাবাসী।
জানা গেছে, এই রুটে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ও রুপালী এক্সপ্রেস নামে একজোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে। এই প্রকল্পের ২৮ কিলোমিটার রেলপথ পড়েছে নড়াইলে। নড়াইল শহর ও লোহাগড়া উপজেলায় একটি করে রেলস্টেশনও নির্মাণ করা হয়েছে। ২০২২ সালে ২৫ জুন প্রমত্তা পদ্মার বুকে স্বপ্নের সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সেই ভোগান্তি অনেকাংশে কমে যায়। মধুমতী নদীর বুকে নির্মিত হয় দেশের প্রথম ৬ লেন বিশিষ্ট সেতু। দুই সেতু নির্মাণে পাল্টে যায় নড়াইলসহ দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
ভিক্টেরিয়া কলেজের ছাত্র ফারহান রহমান বন্ধুদের সাথে নিয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হতে ট্রেনে চড়ে ঢাকা যাচ্ছে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এটা আমাদের স্বপ্নের মতো ছিলো, অবশেষে তা পূরণ হয়েছে।
স্থানীয় সাংবাদিক আল-আমিন বাংলানিউজকে জানান, প্রথম ট্রেনের স্বাক্ষী হতে অনলাইনে টিকিট ক্রয় করেছিলাম, এখন স্বপ্নের ট্রেনে যাত্রা করার আলাদা একটা ঘরের মধে আছি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের সকল কাজ শেষ হয়েছে দুই দফায় পরিক্ষামূলক ট্রেন চলাচলও সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে এই রুটে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ও রুপালী এক্সপ্রেস নামে একজোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে। এই প্রকল্পের ২৮ কিলোমিটার রেলপথ পড়েছে নড়াইলে। নড়াইল শহর ও লোহাগড়া উপজেলায় একটি করে রেলস্টেশনও নির্মাণ করা হয়েছে৷
এখন থেকে নড়াইলের মানুষ ট্রেনে মাত্র ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে ঢাকা যেতে পারবে। রেলের দেওয়া সময়সূচি অনুসারে, জাহানাবাদ এক্সপ্রেস খুলনা থেকে ছাড়বে সকাল ছয়টায়। ট্রেনটির ঢাকায় পৌঁছানোর নির্ধারিত সময় সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে। ঢাকা থেকে আবার ট্রেনটি ছেড়ে যাবে রাত আটটায়। খুলনায় পৌঁছানোর কথা ১১টা ৪০ মিনিটে। অন্যদিকে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ছাড়বে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। ট্রেনটির যশোরের বেনাপোল পৌঁছানোর কথা বেলা ২টা ৩০ মিনিটে। ফিরতি যাত্রায় যশোর থেকে ট্রেনটি ছাড়বে বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে। আর ঢাকায় পৌঁছানোর কথা সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে।
আনন্দের সঙ্গে আক্ষেপ ও রয়েছে এলাকাবাসীর। শিক্ষক সুবীর কুমার বোস বাংলানিউজকে জানান, আমরা প্রথমবারের মতো ট্রেনের সুবিধা পাচ্ছি এটা আনন্দের তবে টিকিট বরাদ্দ অনেক কম, আমাদের জন্য টিকিট বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন।
নড়াইল স্টেশন মাস্টার উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস বাংলানিউজকে জানান, দিনে দুইবার ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বেনাপোল পথে চলাচল করবে ট্রেন দুটি। ট্রেন চলাচলের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম ট্রেনে চলার সাক্ষী হতে এরই মধ্যে সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। এখন থেকে নড়াইলের মানুষ ট্রেনে মাত্র ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে ঢাকা যেতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
জেএইচ