ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আছে আহাজারি নেই ক্ষোভ

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫
আছে আহাজারি নেই ক্ষোভ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাটাসুরের পুলপাড় বস্তিতে আগুনে পুড়ে গেছে দুই শিশুসহ প্রায় অর্ধশতাধিক দোকান ও ৫০০ বসতি ঘর।

রোববার (১১ জানুয়ারি) সকালে পুলপাড় বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।



এই অভিশাপের আগুনে শোকের মাতম বস্তি জুড়ে। শেষ সম্বল টুকু হারিয়ে আহাজারি ও আর্তনাদ করছেন বস্তির অসহায় মানুষগুলো।

সর্বস্ব হারিয়েও বস্তিবাসীদের ক্ষোভ নেই ফায়ার সার্ভিস  ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের ওপর। কারণ আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে হাজির ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট। পর্যায়ক্রমে ১১ ইউনিট কাজ করে এখানে।

কিন্তু বস্তির সরুপথ ও অপর্যাপ্ত পানির কারণে যথাসময়ে আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। অপরদিকে পুরো বস্তি ছিল বাস ও টিনের তৈরি। এছাড়া, অগণিত
দার্হ্য পদার্থ থাকায় চোখের পলকে বস্তিবাসীর সব কিছু শেষ করে দেয় সর্বনাশা আগুন।

সহায় সম্বল বলতে কিছুই রাখেনি এ আগুন। রোববার (১১ জানুয়ারি) বেলা আড়াইটার সময় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে বাংলানিউজকে কথাগুলো বলেন রেনু খাতুন। তার জন্মস্থান কিশোরগঞ্জ সদর।

মোহাম্মদপুর কাটাসুরে ম্যাচে রান্না করেন তিনি। অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে দৌঁড়ে আসেন তিনি। এসে ততক্ষণে যা কিছু ছিল সব পুড়ে গেছে। আছে শুধু
ধ্বংসস্তূপ।

রেনু বাংলানিউজকে বলেন, পরনের কাপড় ও জানডা ছাড়া কিচ্চু নেই। সব কয়লা হইয়া গ্যাছে। ’

রেনুর ঘরে ছিল ১০ হাজার টাকা, কাপড় ও সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

রেনুর পাশের বাড়িতে থাকেন আরিফ ও হালিমা দম্পতি। পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তুপের মধ্যে কিছু খোঁজার চেষ্টা করছেন। বস্তিতে তাদের ছোট একটি দোকান ছিল
দোকানের প্রায় ৫০ হাজার টাকার পণ্য ও টিভি-ফ্রিজ পুড়ে গেছে। সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব এই দম্পতি।

হালিমা বলেন, মুদি দোকানের কিচ্চু নাই, সব পুইড়া গ্যাছে। এখন আমরা কোথায় যামু, কি খামু?

তবে স্থানীয়রা সবাই উদ্ধারকর্মীদের প্রশংসা করেছেন। এই বস্তি সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করেন বেলাল।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘ব্যাটাগো (ফায়ার সার্ভিস ইউনিট) ঠিক সুম আইচে। কিন্তু ভিতরে ঢুকতে পারেনি।   যেই সিসটামে (সিস্টেম) বাড়ি এককালে বানাইছে ব্যাটাগো ক্যামনে ঢুকবে। ব্যাটাগো পেরতুম যহন আইচে ভেতরে ঢুটতে পারলে এত ক্ষতি হইতে না। ’

ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেনটেইন্যান্স) মেজর একেএম শাকিল নেওয়াজ বাংলানিউজকে বলেন, সব থেকে বড় সমস্যা দুর্ঘটনা কবলিত এলাকায় পানির অভাব ছিল। আশপাশের কোথাও পানি ছিল না। এছাড়া, সরু গলি হওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো ভেতরে ঢুকতে পারেনি। আগুন লাগার খবর পাওয়ার মাত্রই ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।