শ্রীমঙ্গল: আগুন থেকে রক্ষা পেতেই আগুন জ্বালানোর বিচিত্র পদ্ধতি! বিষয়টি কিছুটা খটকা লাগলেও সত্যি। চোখের সামনে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন! তবে এটি কোনো দুর্ঘটনাজনিত কারণে আগুন লাগা নয়।
বাতাসে আর্দ্রতা বেশি বলেই আগুনের এতো উত্তাপ। এতো সর্বগ্রাসী ক্ষুধা তার! সমতল ভূমির সবকিছুকে পুড়িয়ে ফেলছে মুহূর্তেই। বৈকালিক ভ্রমণে বেরিয়ে এই আগুন আমার পথ রোধ করলো। পেট্রোলবোমার আগুনময় হাহাকারের সাদৃশ্য হঠাৎই খুঁজে পেলাম এ আগুন দৃশ্যের মাঝে! সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি ছবি তুলেই জানতে চাইলাম– ভাই, ব্যাপারটি কী হচ্ছে?
আগুনে পুড়িয়ে জমিকে চাষ উপযোগী করার মাধ্যমে এক ধরনের চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। এর ফলে মাটির উর্বরতাও বৃদ্ধি পায়। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় পাহাড়ের ঢালে করা হয়। স্থানীয়রা এটাকে জুম চাষ বলে। তবে এখানে জুম চাষ-টাষ জাতীয় কিছু নয়।
ফিনলে চা কোম্পানির ভাড়াউড়া চা বাগান। এই বাগানের একটি অংশে বিস্তৃত রাবার বাগান। এখানেই আগুনের লেলিহান শিখা! পাশেই শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ উপজেলার পাকা মহাসড়ক। এ রাস্তা ধরেই পৌঁছানো যায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে। আগুনের বর্ধিত শিখা দেখে দেখে মনে তথ্য জানার গভীর উৎকণ্ঠা বেড়েই গেল।
অবশেষে চা বাগানের প্রহরী কান্ত রিকিয়াসনের বক্তব্যে এ পদ্ধতির সমাধান খুঁজে পাওয়া গেল। তার ভাষায়, কেউ হঠাৎ করে জ্বলন্ত সিগারেট ছুড়ে ফেলে যায় এখানে। শুকনো পাতা-ঘাস থাকার কারণে সঙ্গে সঙ্গে আগুন লেগে যায়। শুকনো মৌসুম থাকায় এ আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। তখন পুরো রাবার বাগান পুড়ে যায়।
তাই এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতেই আমরা প্রতি বছর রাবার বাগানের রাস্তার পাশের অংশগুলো নিজেরাই আগুনে পুড়িয়ে ফেলি। যাকে কেউ সিগারেট ফেলে দিলেও আগুন না ধরে।
বাংলাদেশ সময়: ০১১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৫