ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কেশবপুরে সুরের জাদুতে দর্শক মাতালেন ইউএনও-এসিল্যান্ড

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
কেশবপুরে সুরের জাদুতে দর্শক মাতালেন ইউএনও-এসিল্যান্ড বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে গাইছেন কর্মকর্তারা

যশোর: বাদ্যের তালে তাল মিলিয়ে মাইক্রোফোন হাতে ধরে শার্ট-প্যান্টের উপর কোর্ট পরা ভদ্রলোকটি ভরাট কণ্ঠে গেয়ে চলেছেন বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের সেই বিখ্যাত গান- ‘কে বানাইলো এমন রংমহল খানা... হাওয়া দমে দেখ তারে আসল বেনা, বিনা তেলে জ্বলে বাতি, দেখতে তেমন মুক্তামতি...’।

এ গানের শেষ নামতেই জিন্সের প্যান্টের উপর শর্ট পাঞ্জাবি পরিহিত আরেকজন ভদ্রলোক মঞ্চে উঠে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর সেই গান ‘এক আকাশের তারা তুই একা গুণিশনে, একটু গুণতে দিস তুই কিছু মোরে... ওরে সব ভালো তুই একা বাসিস নে, একটু ভালো বাসতে দিস মোরে’ গানটি ছাড়াও খালিদ হাসান মিলুর কণ্ঠে গাওয়া সেই বিখ্যাত গান, ‘এই প্রেম স্বর্গ থেকে এসে জীবনে অমর হয়ে রয়, সেই প্রেম আমাকে দিও, জেনে নিও তুমি আমার প্রাণের চেয়েও প্রিয়’ গানটি ছাড়াও একাধিক গানে হাজারো দর্শক মাতিয়েছেন।

বিজয় দিবস-২০১৭ উপলক্ষে কেশবপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় দিন রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত উপজেলা পাবলিক ময়দানে গান পরিবেশনকারী তিনজনের কেউ পেশাদার শিল্পী নন।

মূলত লালন ফকিররের গানটি গেয়েছেন কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানূর রহমান, আইয়ুব বাচ্চু-খালিদ হাসান মিলুর কণ্ঠের গান ছাড়াও তিনটি গান গেয়েছেন কেশবপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) কবির হোসেন পলাশ।

এছাড়াও এই মঞ্চে রাজধানী ঢাকার ব্যান্ডদল ‘ডাকঘর’ শিল্পী সিলেটের মন্টি সিনহা, ডালিম কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ বেতারের শিল্পী সিলভি ও শিলা একের পর এক গান গেয়ে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন।

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে গাইছেন কর্মকর্তারাএর আগে, অনুষ্ঠানের প্রথম দিন (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় একই মঞ্চে ইউএনও মিজানূর রহমান, এসিল্যান্ড কবির হোসেন পলাশ ছাড়াও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মঞ্জুরুল হাফিজ রাজু, ইউএনও মিজানূর রহমানের সহধর্মিনী শাহনাজ সুলতানা গান পরিবেশন করে দর্শক মাতিয়েছেন।

এদিন, খোদ জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকসহ প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ দর্শক সারিতে বসে শ্রবণ করেন। যা গোটা উপজেলার সঙ্গীত প্রেমীদের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ সংস্কৃতিমনা হিসেবে পরিচিতির পাশাপাশি প্রশসংসা কুড়িয়েছেন সর্বমহলে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসি বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে ২৯তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারে চাকরিতে যোগদেন ইউএনও মিজানূর রহমান। ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতে আগ্রহী মিজানূর রহমান ছাত্রজীবনে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রবেশ করে, শখের বশে গান শেখেন। যা আস্তে আস্তে ভালোমানের গায়কে পরিণত করে। তবে সরকারি চাকরিতে ব্যস্ততার কারণে খুব বেশি সুযোগ না পেলেও বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে গানের মঞ্চে টেনে নেয় তাকে। এছাড়াও তার সহধর্মিনী শাহনাজ সুলতানা ভালো গান পরিবেশ করেন।

এছাড়াও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে এসিল্যান্ড কবির হোসেন পলাশ ৩১তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারে চাকরিতে যোগদান করেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূলত, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই গানের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হই। পড়াশুনার ফাঁকে প্রায়ই গিটার শিখতে সকালে বের হয়ে সন্ধ্যায় ফিরতাম। তবে চাকরিতে যোগদানের পরেও ভেবেছি অবসর সময়ে গান চর্চায় পড়ে থাকব, কিন্তু ব্যস্ততার কারণে সে সুযোগ না হলেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।