বুধবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নেপিদো থেকে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে ‘শনাক্ত’ ৩৭৪ জনের তালিকা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে এই তালিকার নাম প্রকাশ করতে বুধবার বিকেলে নেপিদোতে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয় বলে জানায় মিয়ানমারে বাংলাদেশের একটি কূটনীতিক সূত্র। সূত্রের তথ্য, সংবাদ সম্মেলনে বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের ডাকা হয়।
তবে ‘শনাক্ত’ রোহিঙ্গার এই সংক্ষিপ্ত তালিকা বিস্মিত করেছে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের। অবশ্য ঢাকায় তালিকাটি চলে আসায় এখন এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় দু’দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের ৮ হাজার ৩২ জনের একটি তালিকা মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিয়াও সোয়ে’র নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের হাতে তুলে দেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তারপর নেপিদোতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, ওই তালিকা যাচাই করছে মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা তালিকা যাচাইয়ের পর সেটি পাঠাবে অভিবাসন কার্যালয়ে। অভিবাসন কার্যালয় যাচাই-বাছাইয়ে তথ্য-উপাত্ত মিলিয়ে দেখে সন্তুষ্ট হলেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে।
গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে দমন-পীড়ন শুরু করলে সেখান থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় লাখো রোহিঙ্গা, যা এখন পর্যন্ত ৭ লাখের বেশি। বিভিন্ন সংস্থার হিসাব মতে, সবমিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১১ লাখ। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতনকে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে অভিহিত করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র সমালোচনা ও চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে গত নভেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছায় মিয়ানমার। কিন্তু সমঝোতার পর থেকেও মিয়ানমার এক্ষেত্রে নানা টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ ঢাকার। শেষতক আট হাজার ৩২ রোহিঙ্গার তালিকা থেকে মাত্র ৩শ’ জনকে ‘শনাক্ত’ করে বাংলাদেশের অভিযোগকে আরও প্রতিষ্ঠিত করলো নেপিদো।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৮
কেজেড/এইচএ
** ৮ হাজার রোহিঙ্গার তালিকায় ৩শ জনকে ‘মানছে’ মিয়ানমার