ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পাবনায় ইছামতী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
পাবনায় ইছামতী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু

পাবনা: দীর্ঘ এক বছর পরে আবারও ঐতিহ্যবাহী পাবনা ইছামতী নদীর দক্ষিণ দিকের এক কি.মি. অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে ইছামতী নদী পুনরুজ্জীবিত ও প্রবাহমান করতে এই অভিযান কার্যক্রম শুরু করেছেন পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন।

রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে শহরের পৌর এলাকার লাইব্রেরি বাজার সড়কের বড় ব্রিজ থেকে দক্ষিণমুখে এই অভিযান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিগত বছরের প্রথম দিকে এই নদীর সারে তিন কি.মি. খনন কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু করেনা মহামারি বৃষ্টির আর অবৈধ দখলদারদের আইনগত জটিলতার কারনে বন্ধ রাখা হয় উচ্ছেদ অভিযান।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী প্রায় সারে  ৩ শো তালিকাভুক্ত অবৈধ দখলদার রয়েছে নদীর দুই পারে। সিএস নকসা অনুযায়ী পূর্ব নির্ধারিত নদীর সীমানা অনুসারে সকল প্রকারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। তবে পৌর এলাকার ভেতরে ও বাহিরে সব মিলিয়ে নদী দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ কি. মি.। এর মধ্যে পৌর এলাকার মধ্যে রয়েছে সারে ৪ কি.মি.। এর মধ্যে এক পাশে সারে ৩ কি.মি. এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদী খনন কাজ চলছে। তবে উচ্ছেদ না হওয়া নদী তীরবর্তী ২৩৫টি বৈধ দাবীকৃত দখলদারদের উচ্চতর আদালতে মামলা নিশপত্তি না হওয়ার কারনে ঝুলে থাকছে নদী বাকি অংশের খনন ও উচ্ছে কার্যক্রম।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সাইফুল্লা, নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, সহকারি কমিশনার ভূমি কাউসার হাবিব উচ্ছেদ অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন। নদীর দুই পারের অবৈধ কাঁচা ও পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম সফল করতে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও র্যা ব সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। এই এক কি.মি. উদ্ধারকৃত জমির বর্তমান বাজার মূল প্রায় ৫০ কোটি কাটা। তবে পাবনাবাসির প্রাণের দাবি সব বাধা অতিক্রম করে প্রবাহমান হবে পাবনার ইছামিত নদী।

উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্চিঃ মো. রফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, পাবনা জেলা প্রশাসন পানি উন্নয়নয় বোর্ড পৌরসভা যৌথ ভাবে এই উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যে সকল স্থানে মামলা নেই সেই সব স্থানে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী অবৈধ দখলদার বা অবকাঠামো উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আর যে সব স্থানে মামলা রয়েছে সেই সব স্থানে মামলার রায়ের কাগজপত্র এখনো আমরা হাতে পাইনি। হাতে পেলেই জেলা প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অভিযানের বিষয়ে পাবনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল হাসান বলেন, আইন অনুসারে নদীর বৈধ সীমানা দেওয়া আছে। আর বর্তমানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। কোন প্রকারের স্বজনপ্রীতি বা অন্যায় ভাবে কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না। সবাইকে সময় দেওয়া হয়েছে। সবাইকে অবগত আছে। ভাগারে পরিণত হওয়া এই ইছামতী নদীকে আবারও পুনরুজ্জীবিত করা হবে।

পাবনা ইছামতী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি এস এম মাহাবুব বলেন, পাবনা বাসির দীর্ঘদিনের দাবি এই নদী আগেরমত প্রবাহমান হক। শহরের মাঝ দিয়ে এই নদী প্রবাহিত হয়েছে। সময়ের আর অবৈধ দখলদারের কারনে নদী তার নিজস্ব গতি হারিয়ে ফেলেছে। বর্তমান সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশের বিভিন্ন নদীর অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় পাবনার ইছামতী নদী আবারো তার প্রাণ ফিরে পাবে। এই নদীর সঙ্গে পাবনার মানুষের আত্মার সম্পর্ক। আমরা মনে করি যত দ্রুত এই কাজটি হবে ততই মঙ্গলজনক হবে পাবনার মানুষের জন্য। তবে সিএস নকসা অনুসারে যেন এই কাজটি করা হয় এটাই আমাদের দাবি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।