ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

গাংনীতে এসিল্যান্ড সেজে হোটেলে চাঁদা দাবি 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২২
গাংনীতে এসিল্যান্ড সেজে হোটেলে চাঁদা দাবি 

মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনীতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেজে হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকদের কাছে মোবাইল ফোনে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেছে একটি প্রতারক চক্র।

এ ঘটনার সঙ্গে গাংনী উপজেলা স্যানেটারি অফিসার মশিউর রহমান সরাসরি জড়িত বলে দাবি করেছেন হোটেল মালিকরা।

গাংনী হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি আমিন মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক রাশেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দীন ও গাংনী সুইটস এর মালিক শাজাহান আলী বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাংনী স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান আমাদের কাছে এসে তার নিজস্ব মোবাইল হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে কথা বলেন। ফোনটি ধরার সঙ্গে সঙ্গে সহকারী কমিশনার ভূমি পরিচয় দিয়ে বলেন, আপনার মোবাইল নম্বর দেন।  

মোবাইল নম্বর তাকে দেওয়ার পর প্রতারক ০১৯২৩-৮৯১৬১৭ এবং ০১৯৩৩-২১২১২০ দুটি মোবাইল নম্বর থেকে হোটেল-রেস্তোরাঁর মালিক গাংনী আমিন মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক রাশেদুল ইসলামের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা, আব্দুল মালেক মিষ্টান্ন অ্যান্ড ফল ভাণ্ডারের মালিক আব্দুল মালেকের কাছে ৫০ হাজার, গাংনী সুইটস এর মালিক শাজাহান আলীর কাছে ৪০ হাজার টাকা, সোবহান হোটেলের মালিকের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। ওই প্রতারক আমাদের বলে, আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় বের হচ্ছি। আপনার দোকান খোলা রাখতে হলে টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দেন। বিকাশের দোকানে গিয়ে কল দেবেন। পরে কল দিলে তিনি কারো কাছ থেকে ৩০ কারো কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। তার দাবিকৃত টাকা না দিলে এসব হোটেল রেস্তোরাঁ আগামী ৬ মাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন ওই প্রতারক।

হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দী বলেন, এ ঘটনায় আমার সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে আমি গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি বিষয়টি কিছুই জানেন না এবং মোবাইল নম্বর দুটি তার নয় বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে র‌্যাব-৬ গাংনী ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং ব্যবসায়ীদের আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন।  

এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা স্যানেটারি পরিদর্শক মশিউর রহমান বলেন, আমি ব্ল্যাকমেইলের শিকার। আমাকে সহকারী কমিশনার স্যার পরিচয় দিয়ে দ্রুত হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকদের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার জন্য বলেন। আমি তখন তাদের কাছে গিয়ে আমার মোবাইল ফোন থেকে কথা বলিয়ে দিই। আমি স্যারের নির্দেশ পালনের জন্যই তাদের কাছে গেছি।  

সহকারী কমিশনারের বিকাশ নম্বরে ঘুষ দিতে হবে, না হলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাদের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে, এটা নিয়মের মধ্যে আছে কিনা। তাছাড়া অপরিচিত মোবাইল নম্বর দেখার পরেও হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকদের সঙ্গে আপনার ফোন থেকে কথা বলিয়ে দিলেন কেনো?  এসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি তার কাছ থেকে। তবে নিজের দোষ ঢাকতে ওই দুটি মোবাইল নম্বরের অজ্ঞাত মালিকের নামে গাংনী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান।

এ ব্যাপারে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, স্যানেটারি পরিদর্শক একজন সরকারি কর্মকর্তা। সরাসরি তার নামে মামলার বিধান নেই। তাই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।