ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

জুলাইয়ে ঘর পাবে আরও ৩৫ হাজার পরিবার: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৪ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২২
জুলাইয়ে ঘর পাবে আরও ৩৫ হাজার পরিবার: প্রধানমন্ত্রী ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: আগামী জুলাই মাসে আরও ৩৫ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (০৭ মে) গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ঈদুল ফিতরের আগে প্রায় ৩৩ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঈদের আগে আমরা প্রায় ৩৩ হাজার ঘর উপহার দিয়েছি। জুলাই মাসের দিকে আরও ৩৫ হাজার ঘর দিতে পারবো। বাকি থাকবে ৪০ হাজারের মতো। এটা দিলে পরে আমাদের ভূমিহীনের যে হিসেবটা নিয়েছিলাম সেগুলো আমরা দিতে পারবো। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা একটা হিসেব নিয়েছি। তাতে যদি মানুষ হিসেব করি একটা পরিবারে ৫ জন। এভাবে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ আশ্রয় পেয়েছে। অর্থাৎ প্রায় ৭ লাখ, ৮ লাখ, ১০ লাখের কাছাকাছি হয়ে যাচ্ছে। আরও ঘর তৈরি হচ্ছে। সেখানে খাস জমিতে ঘর তৈরি করে দেব এটা ছিল। কিন্তু খাস জমি সব সময় পাওয়া যায় না বলে আমরা এখন জমি কিনে দিচ্ছি। ’

কোনো ভূমিহীন বাদ পড়ে কিনা তা খুঁজে বের করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের আবারও বলবো এর বাইরে অনেক সময় অনেকে বাদ পড়ে যায়। তারা ঘর পায়নি। তাদের একটু খোঁজ নেওয়া দরকার। কোনো এলাকায় কোথাও এমন কেউ আছে কিনা যার ভূমি নেই। আমরা চাই বাংলাদেশের একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। সেভাবেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘বঙ্গবঙ্গু দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। আমাদের সেই একটাই লক্ষ্য। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্য স্থির করে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুজিববর্ষে আমাদের অনেক কর্মসূচি ছিল। আমাদের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি, যেটা আমরা সফল ভাবে করতে পেরেছি- সেটা হলো গৃহহীন, ভূমিহীন মানুষকে একটা ঘর তৈরি করে দেওয়া। যে কাজটা জাতির পিতা স্বাধীনতার পর শুরু করেছিলেন। ’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য গ্রামের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করা, আরও চাঙা করা। গ্রামের মানুষ যেন ভালো থাকে। আমরা সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছি। কারণটা হচ্ছে আমরা তৃণমূল থেকে উন্নয়নটা করতে চাই। ’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঘোষণা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের কোনো মানুষ যাতে ভূমি ও গৃহহীন না থাকে। সেজন্য তিনি দুই শতক জমির ওপর দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি ঘর উপহার দিচ্ছেন ভূমিহীনদের। এসব ঘরের ডিজাইন প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রণয়ন করেছেন।

প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ঘর পেয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি পরিবার। তৃতীয় ধাপের আরও ৩২ হাজার ৭৭০টি ঘর নির্মাণাধীন রয়েছে।

আশ্রয়ণের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চেয়ে তৃতীয় ধাপের ঘরগুলো অনেক বেশি টেকসই। তৃতীয় ধাপে একেকটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। তৃতীয় ধাপের ঘরগুলোতে আরসিসি পিলার, গ্রেড ভিম, টানা লিংকটারসহ বেশ কিছু বিষয় সংযোজন করা হয়।

ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙন কবলিত ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল মানুষকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ‘আশ্রয়ণ’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন তৎকালীন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। এ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২২ সালে মার্চ পর্যন্ত ৫ লাখ ৭ হাজার ২৪৪ ভূমিহীন এবং গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীদের মধ্যে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়সহ সমাজের পিছিয়ে পড়া ভাসমান বিভিন্ন জনগোষ্ঠীও রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২২
এমইউএম/এমজেএফ/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।