ঢাকা, শনিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

বোরকা পরে ছিনতাই করাই তার কাজ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৮ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২২
বোরকা পরে ছিনতাই করাই তার কাজ

নাটোর: নাটোর সদর উপজেলার বনবেলঘরিয়া বাইপাস এলাকার মৃত বাহার আলীর ছেলে মামুন আলী (৪২)। দিনের পর দিন শতশত মানুষের কাছ থেকে অস্ত্র দেখিয়ে ছিনিয়ে নিয়েছেন নগদ অর্থ, মোবাইল, সোনাদানাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র।

পুরুষ হলেও নারী সেজে বোরকা পরে সঙ্গে চাকু ও লোহার রড নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন ছিনতাই কাজে। মূল টার্গেট থাকতো কোনো সড়কের কোন নির্জন স্থান। দিনে অথবা রাতের যে কোনো সময় সহযোগিদের সঙ্গে নিয়ে ফাঁকা কিংবা যাত্রীবেশে অটোরিকশায় উঠে পড়তেন। আর সুযোগ পেলেই অটোরিকশা অথবা যাত্রীদের কাছে থাকা নগদ অর্থ, মোবাইল, সোনাদানাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতেন। এটাই ছিল তার নিত্যদিনের কাজ।

অবশেষে বুধবার (১১ মে) রাতে শহরের বনবেঘরিয়া বাইপাস এলাকা থেকে মামুন আলী নামে ওই নারীরূপী বোরকা পরিহিত ছিনতাইকারীকে আটক করে পুলিশ। এসময় তার বোরকার ভেতর থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি ধারালো চাকু ও স্টিলের পাইপ উদ্ধার করা হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতিতে টের পেয়ে রনি হোসেন (৩৮) নামে ছিনতাইয়ের কাজে সাহায়তাকারী এক যুবক পালিয়ে যান।

গ্রেফতার হওয়া মামুনের নামে নাটোর সদর থানায় ছিনতাই ও চুরির একাধিক মামলা রয়েছে। মামুন আলী নারী সেজে নির্জন সড়কে পথচারীদের থেকে সর্বস্ব ছিনতাই চক্রের সদস্য বলে জানায় পুলিশ।

নাটোর সদর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত ২টার সময় পুলিশের রাত্রীকালীন একটি টহল টিম নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের মহিলা কলেজ গেট এলাকায় দায়িত্ব পালনের সময় কলেজের সামনে নির্জন রাস্তায় বোরকা পরিহিত এক নারীকে একজন মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কাছে যায়।

তারা কোথায় যাবেন জানতে চাইলে পুলিশ দেখে মোটরসাইকেল চালক দৌড়ে পালিয়ে যান। এসময় বোরকায় মুখ ঢাকা ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার কণ্ঠস্বর শুনে পুলিশের সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে বোরকার মুখ খুলতে বললে তিনি তর্ক শুরু করেন। হঠাৎ পায়ের জুতা দেখে পুলিশ বুঝতে পারে তিনি নারী নন পুরুষ।

এসময় পুলিশ বোরকার মুখ খুলে দেখেন বোরকা পরে আছেন একজন পুরুষ। এ অবস্থায় তার শরীর তল্লাশি করে একটি ধারালো চাকু ও রড উদ্ধার করা হয়। তাকে আটক করে থানায় এনে জানা যায়, তার নাম মামুন ও তার সঙ্গে থাকা ছিনতাইয়ে সহায়তাকারীর নাম রনি। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১২ মে) নাটোর সদর থানায় তিনি নিজেই বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, মামুনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নারীরুপী মামুনের ডাকে যারাই সাড়া দিতেন তারাই বিপদে পড়েছেন। অভিনব এ ছিনতাই কাজে জড়িত পুরো চক্রকে ধরতে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৪ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।