ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ওসি-এসআই পরিচয়ে ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২২
ওসি-এসআই পরিচয়ে ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা

ঢাকা: নিজেকে কোথাও পরিচয় দিতেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি, কোথাও বলতেন থানার এসআই। পরিচয়ের ফাঁদে অসহায় চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে আদায় করতেন ৫ থেকে ৯ লাখ টাকা।

এভাবে দেশজুড়ে নানা পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে হাতিয়ে নিয়েছেন অন্তত ২ কোটি টাকা।

মঙ্গলবার (৩১ মে) রাতে রাজধানীর মিরপুর ও মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে ৪ জনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৩।

আটক ব্যক্তিরা হলেন- হেলাল উদ্দিন (৫১), মফিজুল ইসলাম ওরফে লেবু (৪৭), খন্দকার মারুফ (৩৭) ও আব্দুল কাদের ওরফে রাজু (২৯)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ২৪টি সিলমোহর, ১১ পাতা ভুয়া নিয়োগপত্র, ৩ পাতা নিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তিপত্র, ৮টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ২১ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়।

তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস জানান, আটক হেলাল উদ্দিন এই প্রতারণা ও জালিয়াত চক্রের মূলহোতা। তিনি নিজেকে মোহাম্মদপুর থানার ওসি, আবার কোথাও থানার এসআই হিসেবে পরিচয় দিতেন। চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে তিনি বিভিন্ন জনের কাছ থেকে অন্তত দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ৫-৯ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করতেন।

আটক মফিজুল ইসলাম লেবু এবং আব্দুল কাদের রাজু দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষ করে লালমনিরহাট, বগুড়া, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকরপ্রার্থী জোগাড় করতেন। এরপর তাদেরকে অভিভাবকসহ হেলাল উদ্দিনের কাছে নিয়ে আসতেন। হেলাল উদ্দিন বস সেজে ইন্টারভিউ নিতেন।

পরে উবারের একটি গাড়ি ভাড়া করে সরকারি বিভিন্ন অফিসের সামনে গিয়ে নামতেন। অফিসের ভেতরে ঢুকে ও বের হয়ে চাকরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করতেন। বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ সিলমোহর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ভুয়া স্বাক্ষর সম্বলিত ভুয়া অফিস আদেশ এবং ভুয়া নিয়োগপত্র খামে বন্দি করে ভুক্তভোগীদের হাতে ধরিয়ে দিতেন।

প্রথমে তারা প্রতিশ্রুতি দিতেন চাকরি হওয়ার পর টাকা নেওয়া হবে। কিন্তু পরে বিভিন্ন অজুহাতে চাকরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিতেন। নিয়োগ দেওয়ার আগের রাতে চাকরি কনফার্ম করতে আরও টাকা চাইতেন।

আটক খন্দকার মারুফ চক্রের মূলহোতা হেলাল উদ্দিনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছেন। মারুফ কথা বলার মাঝেই চতুরতার সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা এবং একটি বিশেষ অঞ্চলের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম ভাঙিয়ে নিজেকে জাহির করে আরও বিশ্বস্থতা অর্জনে হেলাল উদ্দিনকে সহায়তা করতেন।

বীণা রানী দাস বলেন, চক্রটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বেকার লোকজনের অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন।  যদিও তারা কাউকেই চাকরি দিতে সক্ষম হননি। এভাবে গত ৫ বছর ধরে চক্রটি ৫০ চাকরিপ্রার্থী ও অভিভাবকের কাছ থেকে এভাবে প্রতারণা করে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৬ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২২
পিএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।