ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বুধবার উদ্বোধন হচ্ছে দেশের প্রথম পুলিশ জাদুঘর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
বুধবার উদ্বোধন হচ্ছে দেশের প্রথম পুলিশ জাদুঘর

লালমনিরহাট: মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক জেলা লালমনিরহাটেই গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম পুলিশ জাদুঘর। যা বুধবার (২২ জুন) উদ্বোধন করবেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।

মঙ্গলবার (২১ জুন) বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন লালমনিরহাট জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক জেলা লালমনিরহাট। মুক্তিযুদ্ধকালে ১১টি সেক্টরের ১০টিরই  হেডকোয়ার্টার ছিল দেশের সীমান্তের বাইরে। শুধুমাত্র ৬ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল দেশের অভ্যন্তরে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে। হেডকোয়ার্টারের সুবাদে তৎকালীন অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদও সফর করেন এ জেলা। এছাড়া নানান কারণে মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক জেলা লালমনিরহাট।  

মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই ঐতিহাসিক জেলায় গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর। যার অবস্থান জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায়। এ উপজেলার পুরোনো থানা ভবনটিতে এ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা।  

১৯১৬ সালে নির্মিত জেলার হাতীবান্ধা থানা ভবন। ভবনটি বেশ পুরোনো ও ঐতিহাসিক। সেই ইতিহাস সমৃদ্ধ থানা ভবনেই পুলিশ জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করায় ভবনটিও সংরক্ষিত হয়েছে।

সেবার মান বিবেচনায় হাতীবান্ধা থানার আধুনিক সুবিধা সমৃদ্ধ নতুন ভবন নির্মাণ করে বর্তমান সরকার। সেখানেই চলছে থানা পুলিশের কার্যক্রম। ফলে ঐতিহাসিক পুরোনো থানা ভবনটি পরিত্যক্ত ছিল। এ পরিত্যক্ত ভবনে পুলিশ জাদুঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন বর্তমান পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা। পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দক্ষতার সঙ্গে দৃষ্টিনন্দন এ পুলিশ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।  

বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘরে মোট সাতটি গ্যালারি রয়েছে। প্রতিটি গ্যালারিতে রাখা নিদর্শনগুলো দর্শক ও গবেষকদের সামনে তুলে ধরতে কাচের আবরণ ও আলোর ব্যবস্থা রয়েছে। এ জাদুঘরে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ বাহিনীর নানা স্মারক, তথ্য ও উপাত্ত স্থান পেয়েছে।

গ্যালারিগুলোতে সুলতানি আমল ও মুঘল আমল, ব্রিটিশ আমল, ভারতীয় উপমহাদেশে পুলিশের উদ্ভব ও বিকাশ নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। গ্যালারি দুইয়ে রয়েছে ব্রিটিশ আমল ও আধুনিক পুলিশের যাত্রার নিদর্শন। তিন নম্বর গ্যালারিতে রয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকার নিদর্শন।  

গ্যালারি চারে রয়েছে ডার্করুম, গ্যালারি পাঁচে রয়েছে মুক্তাঞ্চলে মুক্তি পুলিশ। বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী রয়েছে গ্যালারি ছয় নম্বরে। গ্যালারি সাতে রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ গ্যালারি তথা  আধুনিক সময়কাল। সব মিলে বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘরটি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ছয় নম্বর সেক্টরের ইতিহাস এবং পুরাতন ভবনের ঐতিহ্য নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। যা দর্শক ও গবেষকদের আকৃষ্ট করবে। রয়েছে পুলিশের ব্যবহৃত পোশাক, গাড়ি, অস্ত্রের নিদর্শন।     

দেশের প্রথম পুলিশ জাদুঘরটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে বুধবার (২২জুন) আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ।  

আইজিপির সফরকে সফল করতে কয়েকদিন ধরে কঠোর পরিশ্রম করছে জেলা পুলিশ। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে পুরো হাতীবান্ধা এলাকা।  

লালমনিরহাট জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আইজিপি স্যারের সফর সফল বরতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর উদ্বোধন করে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসিবে বক্তব্য দেবেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।