ঢাকা, রবিবার, ২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ জুন ২০২৪, ০৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

নেত্রকোনায় বন্যার্তদের কাছে বসুন্ধরার খাদ্য পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৬ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২২
নেত্রকোনায় বন্যার্তদের কাছে বসুন্ধরার খাদ্য পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ

নেত্রকোনা: নেত্রকোনায় বন্যা কবলিতদের সহায়তায় বসুন্ধরা গ্রুপের দেওয়া খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে জেলা পুলিশ।  

এক সপ্তাহ ধরেই জেলার পাঁচটি উপজেলার পানিবন্দী মানুষের কাছে পুলিশ সদস্যরা এ সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন।

 

এরই অংশ হিসেবে বুধবার (২২ জুন) দুপুরে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম যাদাবপুরের বন্যা কবলিতদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।  

এসময় আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর ইকবাল জানান, এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত পরিবারগুলোর মধ্যে পাঁচ কেজি করে চাল, এক কেজি করে ডাল ও এক প্যাকেট করে মুড়িসহ শুকনো খাবার ভর্তি একটি করে প্যাকেট পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বসুন্ধরা গ্রুপের মতো অন্যান্য বড় প্রতিষ্ঠানগুলোও এগিয়ে এলে বানভাসিদের অনেক উপকার হতো। জেলার চারদিকে থৈ থৈ পানি। যে যেখানে পারছে সেখানেই আশ্রয় নিয়েছে। অনেকের চুলা ডুবে গেছে। রান্নার কোনো ব্যবস্থা নেই। বন্যার কারণে কাজ না থাকায় অনেক দিনমজুরের ঘরে আবার খাবারের কোনো ব্যবস্থাই নেই। দিনে এক বেলা খাবার জোটে না অনেকের। এমন দুর্যোগে এক মুঠো মুড়ি দিয়ে ক্ষুধা নিবারণ করছেন তারা। এমন কঠিন সময়ে খাদ্য সামগ্রী হাতে পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পানিবন্দীদের মধ্যে।

তিনি জানান, এরই মধ্যে নেত্রকোনায় পাঠানো বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট কয়েক হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।  

নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসীর নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ফখরুজ্জামান জুয়েলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে খালিয়াজুরী থানার ওসি মো. মজিবুর রহমান, মোহনগঞ্জ থানার ওসি রাশেদুল হাসান, মদন থানার ওসি মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম ও বারহাট্টা থানার ওসি মোহাম্মদ লুৎফুল হক প্রয়োজনীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে নৌকায় করে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে ও বন্যা কবলিত বাড়িঘরে আটকে থাকা জনগণের কাছে এ খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন।  

বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণের জন্য পাঁচ উপজেলায় মোট পাঁচ হাজার এবং পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণের জন্য পাঁচ উপজেলার জন্য পাঁচ হাজার প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। যা বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত অসহায় মানুষদের কাজে লাগছে।  
প্রতিদিন পর্যায়ক্রমে ত্রাণগুলো বিতরণ করা হচ্ছে।  

এমন দুর্ভোগে তিন-চারদিন সেভাবে পেটে দানাপানি পড়েনি অনেকের। এমন সময় শুকনো খাবার পেয়ে হাতে আসমান পাওয়ার মতো আনন্দ হচ্ছে বলে জানান হাওরের বৃদ্ধা নয়নতারা। অত্যন্ত সুশৃঙ্খল পরিবেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসব খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। উপজেলার ঘাট থেকে নিজেরা নৌকা ভাড়া করে দিনভর কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে তারা এ সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
 
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফখরুজ্জামান জুয়েল বলেন, আমরা (পুলিশ) পর্যায়ক্রমে পাঁচ উপজেলায় পাঁচ হাজার প্যাকেট খাদ্য পৌঁছে দিচ্ছি। বন্যার্ত বেশি থাকায় এর মধ্যে মদন ও খালিয়াজুরীতে একটু বেশি ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বারহাট্টা উপজেলায় পুলিশ ২০০ প্যাকেট বিতরণ করেছে। পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সমন্বয় করে এসব সহায়তার প্যাকেট বিতরণ করছে। আমাদের দায়িত্বে মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী, আটপাড়া কেন্দুয়া এলাকা পড়েছে। আর বারহাট্টায় জেলা প্রশাসনের পক্ষে ইউএনও ৫০০ প্যাকেট বিতরণ করেছেন।  

পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী জানান, এ দুর্যোগ মুহূর্তে এসব শুকনো খাবারের পাশাপাশি চাল-ডাল যে কি উপকারে আসছে মানুষের, এটা বলে বোঝানোর মতো নয়। কষ্ট হলেও আমরা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছি। এভাবেই বিত্তবান সবাই এগিয়ে এলে, মানুষের দুর্ভোগে পাশে থাকলে, দেশ বাঁচবে, মানুষ বাঁচবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের সরকারি খাদ্যও দিচ্ছি। পাশাপশি যেখানে খিচুড়ি রান্না করে পাঠানো যায়, সেখানে সেভাবেই খাবার পাঠাচ্ছি। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে দেওয়া পাঁচ হাজার প্যাকেট খাদ্য সহায়তার মধ্যে এ পর্যন্ত পুলিশের মাধ্যমে সাড়ে তিন হাজার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোও দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।