ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২৬ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

টাঙ্গাইলে কমছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১১ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২২
টাঙ্গাইলে কমছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে যমুনাসহ জেলার সবকটি নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও জেলার কয়েকটি উপজেলার বানভাসী শতাধিক গ্রামের মানুষজন পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

সরেজমিনে জেলার ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, যমুনা নদীর পানিতে ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি উঠে ঘরবাড়ি তলিয়ে রয়েছে। অনেক পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। আবার কেউ কেউ ঘরেই মাঁচা উচু করে তাতে চরম কষ্টে দিনপার করছেন। এছাড়া উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়াপাড়া এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

গাবসারার বেলটিয়া গ্রামে দেখা যায় আলম মন্ডলের স্ত্রী বিমলা বেগম পানিতে নেমে বাড়ির কাজ কর্ম করছেন। সপ্তাহখানেক ধরে তাদের বাড়িতে প্লাবিত হওয়ায় অধিকাংশ সময় পানিতেই থাকতে হয়। এতে হাত ও পায়ে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। এছাড়া বাড়ি ও ঘরে পানি ওঠায় নৌকায় দিনে একবেলা রান্না করে তিন বেলা খেতে হচ্ছে। অনেকদিন দুই বেলাও খেতে হয়। পানি ওঠায় স্বামীর আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করলেও এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ার ক্ষোভ জানিয়েছেন এই গৃহবধূ।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ী পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার কমে এখনও বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ভূঞাপুর উপজেলার বেলটিয়াপাড়ার আলম মন্ডল বলেন, এক সপ্তাহ ধরে পানি উঠেছে বাড়িতে। ফলে নৌকায় থাকা এবং খাওয়া দাওয়া করতে হয়। অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় কষ্ট হলেও পানির মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে। তবে বাড়ির গবাদি পশুগুলো অন্যের বাড়িতে রেখেছি চোর ডাকাতের ভয়ে।

আলমের স্ত্রী বিমলা বেগম বলেন, প্রায় সময়ই পানিতে থাকতে হয়। এতে হাত ও পায়ে ঘাঁয়ের মত হয়েছে। বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার জায়গা নেই, তাই কিছু করার নেই।

বন্যার্তরা জানান, এবারের বন্যায় পানি কম হলেও দুর্ভোগ আছে ঠিকই। শুকনা খাবার ও পানির সংকটে কষ্ট করতে হয়। এছাড়া পানিতে যাতায়াতও বন্ধ হয়ে গেছে।

উপজেলার গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহআলম শাপলা বলেন, সাতদিন ধরে চরাঞ্চলের বেশ কিছুগ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। গত দুইদিন আগে স্থানীয় প্রশাসন পরিদর্শন করেছেন। এখন পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. ইশরাত জাহান জানান, উপজেলায় ৪ হাজার পরিবার বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের ত্রাণ সহায়তার জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, ২৪ জুন, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।