ঢাকা, বুধবার, ৩১ চৈত্র ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বরগুনায় গরিবের জাপানি ভবন পানিতে ধসে পড়ার আশঙ্কা

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২২
বরগুনায় গরিবের জাপানি ভবন পানিতে ধসে পড়ার আশঙ্কা

বরগুনা: বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের মোল্লা পাড়ায় গরিবদের জন্য নির্মিত আবাসনের পাকা ভবন পুকুরের পানিতে ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভবনের ধস ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই বলে অভিযোগ আবাসনের বাসিন্দাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৯ সালে আমতলীর হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের মোল্লা পাড়ায় ৭ একর ৭০ শতাংশ জমিতে ১৯০টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় ৩৮টি পাকা ভবন নির্মাণ করে বাংলাদেশ সরকার। এজন্য এ আবাসনের পরিচিতি পায় জাপানি ব্র্যাক হাউস নামে। ভবন নির্মাণের সময় ভিটি ভরাটের জন্য মাঝখানে বিশাল একটি পুকুর খনন করা হয়। যার চারদিক ঘিরে ভবনগুলো নির্মাণ করা হয়।  

প্রতিনিয়ত পুকুরের পাড়ের মাটি ভাঙতে ভাঙতে এখন ভবন ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পুকুরের পূর্ব পাড়ে ৬টি ভবন রয়েছে। ভবনগুলো ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এরমধ্যে ১৪ নম্বর ভবনটি অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে। ভবনটির পশ্চিম পাশের মাটি সরে গেছে। এ কারণে ওই ভবনটি ধসের আশঙ্কায় বাসিন্দারা অন্যত্র চলে গেছে।  

ওই ভবনের বাসিন্দা বাবুল মাতুব্বর বলেন, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে অনেকদিন এখানে ছিলাম। এখন বিল্ডিং ভেঙে পড়তেছে। ভয়ে আমরা এখানে থাকি না।

আবাসনে বসবাসরত রিজিয়া বেগম বলেন, পুকুরের পাড় খালি ভাঙে আর ভাঙে। এহন ভাঙতে ভাঙতে মোগো বিল্ডিংয়ের কাছে আইসা পড়ছে।  

রোকেয়া নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, পুকুর পাড়ের মাটি ভেঙে পানিতে পরতেই থেকে। এমনে ভাঙতে থাকলে সব শ্যাষ হইয়া যাইবে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পুকুরের পাড়ের মাটি ভাঙনের ফলে আবাসনের ৬টি ভবন ঝুঁকিতে রয়েছে। এরমধ্যে ১৪ নম্বর ভবনের গোরার মাটি সরে যাওয়ায় যে কোন সময় একাংশ পানিতে ধসে পরতে পারে। পশ্চিম পাড়ের বাঁধানো পাকা ঘাটের একাংশের মাটি ধসে পরেছে। পানিতে ধসে পরছে বাসিন্দাদের চলাচলের সড়ক।  

এছাড়া ভবনগুলো নির্মাণের পর সংস্কার না করায় দরজা জানালা খসে পরেছে। খসে পরেছে অনেক ভবনের পলেস্তারা। মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক ভবনের দরজা জানালা আটকানো যায় না ঠিক মতো। এতে রাতের বেলায় ঝুঁকি নিয়ে ঘুমাতে হয় বসবাসরতদের।

আবাসন সভাপতি মো. ফারুক মুসল্লি জানান, আবাসনের কয়েকটি ভবন, চলাচলের সড়ক, পুকুরের পাকা ঘাট পানিতে ধসে পরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একটি ভবন খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। যে কোন সময় পানিতে ধসে পরতে পারে।

আবাসনের সাধারণ সম্পাদক বেল্লাল হাওলাদার একই কথা স্বীকার করে বলেন, এসব কারণে অনেক পরিবার আবাসনের ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন বলেন, আবাসনের ভবনগুলো সরেজমিন দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।