ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রূপসায় ব্যক্তি মালিকানা জমির স্থাপনা উচ্ছেদ চেষ্টা সওজের!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২
রূপসায় ব্যক্তি মালিকানা জমির স্থাপনা উচ্ছেদ চেষ্টা সওজের!

খুলনা: খুলনার রূপসায় আদালত থেকে ডিক্রি ও চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত পৈত্রিক জমি সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর কর্তৃক উচ্ছেদের আওতায় ফেলে দোকান ও বাড়ি-ঘর ভেঙে ফেলার প্রস্তুতির অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জমির মালিক।

সোমবার ( ১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জমির মালিক রঞ্জন কুমার দাসের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার দোকান ঘরের ভাড়াটিয়া রূপসা চিংড়ি বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান শেখ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমার বাবা রাজাকারের গুলিতে নির্মমভাবে খুন হন। আমার বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তির মধ্যে রূপসা উপজেলার বাগমারা মৌজার জেএল নং ২৫, সিএস খতিয়ান নং ৪৫ ও ৫৯, এসএ খতিয়ান নং ১০৩ ও ১৭৯ এর ১২৬ নং দাগে ২৫ শতক ও ১৩২ নং দাগে ১.২৬ একর জমি রয়েছে। উক্ত জমি বাংলাদেশ রেলওয়ে বা সওজ হুকুম দখল না করলেও ১৯৯৫ সালে খুলনা জেলা প্রশাসকের এলএ শাখা ওই জমি হুকুম দখল বলে দাবি করে তাদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। সে সময় আমি ০৮/০৪/১৯৯৫ তারিখ সহকারী জজ আদালত রূপসা, খুলনায় চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার জন্য মামলা করি(মামলা নং ২০/১৯৯৫)। পরে ১৯৯৬ সালের ২৫ জুলাই আমি আদালত থেকে ডিক্রি পাই। সেই সঙ্গে আদালত ওই জমির ওপর চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ওই বছরই সওজ আমাদের ওই জমি তাদের দাবি করে সেখানে স্থাপনা তৈরি শুরু করে। এ ব্যাপারে ২০০৮ সালে সহকারী জজ-৫ নং আদালত, খুলনায় সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ৬৪ জনকে বিবাদী করে ভাইলেশনের মামলা করি (মামলা নং মিস-৫৮৭/০৮)। মামলা চলাকালে আগের মামলার রায়সহ সব কাগজ-পত্র পর্যালোচনা করে ২০০৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেন।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, ওই রায়ের পর সওজের পক্ষে আদালতে আপিল করা হলে তা খারিজ হয়ে আমাদের পক্ষের চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে। জামির সব কাগজ-পত্র আমাদের নামে রয়েছে। প্রতিবছর বাণিজ্যিক হারে ওই জমির কর-খাজনা দিয়ে আসছি। ওই জমিতে ৩৪টি চিংড়ি মাছের ডিপো এবং বেশ কিছু ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য তিন কোটি টাকা। সম্প্রতি ওই জমি সওজ তাদের হুকুম দখলের সম্পত্তি বলে দাবি করে দোকান ঘরে লাল ক্রস চিহ্ন দিয়ে উচ্ছেদের ঘোষণা দেয়।

এ বিষয়ে প্রতিকারের জন্য আমি মামলার রায়ের কাগজ-পত্র বিভিন্ন দপ্তরে পাঠালে গত ০৮ সেপ্টেম্বর সওজ, খুলনা জোনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং এষ্টেট কর্মকর্তা অনিন্দিতা রায় (উপসচিব) বয়রা অফিসে আমাদের ডাকেন। তিনি আদালতের সব কাগজ-পত্র দেখে অনেকটা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বলেন, এসব কাগজ তৈরি করা যায়।

আমার জমির ওপর নির্মিত এসব ঘর ভেঙে দিলে একদিকে আদালত অবমাননা করা হবে, অন্যদিকে আমি চরম আর্থিক ক্ষতির শিকার হব। পাশাপাশি হিমায়িত চিংড়ি শিল্প প্রতিষ্ঠানে চিংড়ি সরবরাহে ব্যবসায়ীরা প্রতিবন্ধকতার শিকার হবেন। কেননা দেশের অর্থনীতিতে চিংড়ি শিল্পের বড় ধরনের অবদান রয়েছে। খুলনাঞ্চলে যেসব চিংড়ি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তার বেশির ভাগই পূর্ব রূপসা এলাকায় অবস্থিত। এই এলাকা থেকে বিদেশে চিংড়ি রপ্তানির মাধ্যমে সরকার বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পায়।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজের জমির ওপর থাকা স্থাপনা রক্ষায় খুলনা জেলা প্রশাসক, সওজের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জমির মালিক রঞ্জন কুমার রায়, ব্যবসায়ী রিপন, কামরুল ইসলাম, টুটুল, দাউদ, তাশরাফ মুন্সি ও জাহিদ হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২ , ২০২২
এমআরএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।