ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৪ বছরেও শেষ হয়নি ৪০তম বিসিএসের নিয়োগ!

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২
৪ বছরেও শেষ হয়নি ৪০তম বিসিএসের নিয়োগ!

খুলনা: বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষিত তরুণদের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত চাকরি বিসিএস ক্যাডার হওয়া। লাখো চাকরিপ্রার্থী জীবনের অনেক মূল্যবান সময়, শ্রম ও মেধা দিয়ে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য লড়াই করেন।

তবে, দুর্ভাগ্যবশত একটি বিসিএসের আবেদন থেকে শুরু করে নিয়োগপ্রাপ্তির জন্য লেগে যাচ্ছে প্রায় ৩ থেকে ৪ বছর। ফলে অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন সুপারিশ প্রাপ্তরা।

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পিএসসি ৪০তম বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আবেদন করেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী। ২০১৯ সালের ৩ মে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে পরীক্ষা দেন ৩ লাখ ২৭ হাজার পরীক্ষার্থী। ওই বছরের ২৫ জুলাই প্রকাশিত ফলাফলে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন ২০ হাজার ২৭৭ জন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয় ফেব্রুয়ারিতে। দেশে সেই সময় করোনা মহামারি শুরু হলে খাতা দেখাসহ অন্যান্য কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। প্রায় এক বছর পর ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১০ হাজার ৯৬৪ জন পাস করেন। এরপর করোনা পরিস্থিতির কারণে পাঁচবার মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন করে পিএসসি।

চলতি বছরের ৩০ মার্চ ৪০তম বিসিএসের ঘোষিত ফলাফলে ১৯৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশ করে পিএসসি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে শুরুর দিকে অফিসের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে চালু হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হয়েছে। সবাই একসঙ্গে অফিসে যেতে পারেননি। মৌখিক পরীক্ষার সময় করোনা বেড়ে গেলে কার্যক্রম দফায় দফায় স্থগিত রাখতে হয়েছে। এভাবে ৪০তম বিসিএসের কার্যক্রম পিছিয়ে পড়ে। এরই মধ্যে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে করোনা মোকাবিলায় ৪২তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে ৪ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়। তখন ৪০তম বিসিএসের কার্যক্রমের গতি কিছুটা থেমে যায়।

সর্বশেষ ৩৮ তম বিসিএসের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লেগেছিল ৩ বছর ৭ মাস। অথচ ৪ বছর পেরিয়ে ৫ বছরে পা দিলো ৪০ তম বিসিএস। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় এক প্রকার হাঁপিয়ে উঠেছেন গেজেট প্রত্যাশীরা।

সুপারিশ পেয়ে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা কয়েকজন বলেন, রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ পরীক্ষা হচ্ছে এই বিসিএস। কিন্তু এর মাধ্যমে একজন প্রার্থীর নিয়োগ পেতে ৪ বছরের বেশি লেগে যাচ্ছে। এছাড়াও বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির যুগে ভেরিফিকেশন ও মেডিক্যাল টেস্টে এতো বেশি সময় লাগছে, যা মোটেও কাম্য নয়। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আশা রাখি, যাতে তারা এই প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ে সফলভাবে শেষ করতে পারেন।

আক্ষেপ করে তারা বলেন, আমরা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। টিউশনি খুঁজছি, তাও পাচ্ছি না। আর বড় কথা ৪ বছর পার করে ৫ বছরে পা দিল, যা অনার্স পাস করতে লাগে। যেই চাকরিতে ২৭/২৮ বছরে যোগ দেওয়ার কথা, সেই চাকরিতে ৩০-এর কোঠায় যোগ দিব।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নব নিয়োগ শাখার যুগ্ম সচিব সায়লা ফারজানা রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলানিউজকে বলেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও কয়েকটি এজেন্সি রিপোর্ট শেষ করতে সময় লেগেছে। গত সপ্তাহে আমাদের কাছে স্বাস্থ্য প্রতিবেদন এসেছে। এখন আমাদের কাজ চলছে। কাজ শেষে একটি সভা করে সামারি পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতির কাছে। আশা করছি অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২
এমআরএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।