বিষখালী নদীর জিনতলা থেকে: বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। বর্তমানে এটি উপকূল থেকে মাত্র ৫০০ কিলোমিটারের চেয়েও কম দূরত্বে রয়েছে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকেই উপকূলীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। একইসঙ্গে নিম্নাঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস ও ভারী বৃষ্টির কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি বিষখালী ও বলেশ্বর নদ সংলগ্ন বেড়িবাঁধ ভাঙন আতঙ্কে আছেন উপকূলবাসি। সময় যতই এগোচ্ছে বৃষ্টি-জড়ো হাওয়া ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে আর ততোই জনমনে আতঙ্ক বেশি ছড়াচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে সোমবার সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক স্থানে ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত) হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৮ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।
এদিকে বিষখালী নদী সংলগ্ন তাফালবাড়িয়া, দক্ষিণ চরদুয়ানী, বান্দাঘাটা, গাববাড়িয়া, রুহিতা এলাকার মানুষ বাধ ভাঙন আতংকে রয়েছে। বর্তমানে এই বেড়িবাঁধের কাজ চলমান থাকায় ঝুঁকির মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। বাধের নতুন মাটি থাকায় এবং কোথাও কোথাও মেরামতের জন্য বাঁধ কেটে ফেলার কারণে সেখান থেকে পানি ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য এসব এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক আরও বেশি বিরাজ করছে।
অপরদিকে উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সিপিপিসহ স্থানীয় সেস্বাসেবকরা উপকূলের বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওযার জন্য মাইকিং করছে। তবে বরাবরের মতো বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বাসিন্দারা আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে অনিহা প্রকাশ করছেন।
তাফালবাড়িয়া গ্রামের নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বাসিন্দা জানান, বান্দাঘাটা এলাকার বেড়িবাঁধ কাজ অসমাপ্ত হওয়ায় এখানে বাঁধ স্বাভাবিকের চেয়ে নিচে রয়েছে। এ জন্য খুব সহজেই পানি প্রবেশ করতে পারবে। ফলে অসংখ্য ঘর বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কবির বলেন, উপজেলার সব চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের বলা হয়েছে এলাকার মানুষদের নিরাপদে স্থানে সরে যাওয়ার জন্য প্রচারণা চালাতে। আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বেড়িবাঁধ নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। পানি বৃদ্ধি পেলে বাঁধ থেকে পানি ঢুকে এলাকা তলিয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
এফআর