ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

রাজনৈতিক সংঘাত এড়াতে ঐক্যের ডাক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩
রাজনৈতিক সংঘাত এড়াতে ঐক্যের ডাক অনুষ্ঠানে নেতারা

ঢাকা: আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি। এই নির্বাচনে সংঘাতময় পরিস্থিতির হাত থেকে দেশকে রক্ষায় সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন দলটির নেতারা।

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে ‌‌বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ এবং দেশ নিয়ে দলটির ভাবনা তুলে ধরার জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরী।  

প্রতিষ্ঠার তিন বছরে এসে দলটির নেতারা মনে করেন, তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণের ঐক্য তৈরি করা গেলে দেশকে আসন্ন বিপদ থেকে বাঁচানো সম্ভব।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের সব অঙ্গ দিন দিন দুর্বল থেকে দুর্বলতর হতে চলেছে। একটি নির্ধারিত সীমার পর ধসে পড়বে। সবকিছু নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে। টালমাটাল পরিস্থিতি শুরু হয়ে যাবে। কার্যকর উদ্যোগ না নিলে দেশের যে করুণ অবস্থা হবে, তার ইঙ্গিত দেশের বুদ্ধিজীবীসহ রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে।  

তারা বলেন, বুদ্ধিজীবীসহ রাজনৈতিক নেতাদের বিশ্লেষণধর্মী ও তথ্যসমৃদ্ধ বক্তব্য শুনলে প্রতীয়মান হবে, দেশ যে শিগগিরই ছারখার হতে চলেছে। দেশের শীর্ষ রাজনীতিকেরা আগামীতে ‘যুদ্ধের আশঙ্কা’ও প্রকাশ করছেন।

তারা আরও বলেন, দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব যেখানে বিলীন হওয়ার পথে, সেখানে দেশের রাজনীতিবিদেরা পরস্পর কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত। অতীতে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে একে অন্যকে দোষারোপ করা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন তারা। কেউ প্রতিশোধ নিচ্ছে, অন্যদিকে কেউ প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। অতীত নিয়ে দুঃখ করে লাভ নেই।  

বক্তারা আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হওয়ার পর সেখানে কী যে নাজুক অবস্থা বর্তমানে চলছে তা জানলে যে কেউ শিউরে উঠবে। সেনাবাহিনীর সংখ্যাও অর্ধেকে নামিয়ে আনা হচ্ছে। যেখানে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য দেশের অতন্দ্র প্রহরী সেনাবাহিনীকে বনসাই করা হচ্ছে, সেখানে অন্যান্য সেক্টরের কী যে অবস্থা, তা যে কেউ একটু চিন্তা করলেই অনুমান করতে পারবেন।  

বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির নেতারা মনে করেন, রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা জনসংখ্যার সাত ভাগ মানুষ বাংলাদেশকে সর্বনাশের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই মানুষগুলো দেশকে বিকিয়ে দিয়ে হলেও নিজেদের স্বার্থ আদায়ে তৎপর। তাদের দ্বারা দেশের ক্ষতি হলে ৯৩ ভাগকে ক্ষতির মাশুল দিতে হবে। তাই দেশের ক্ষতি এড়াতে জনগণের একই প্ল্যাটফর্মে একত্রিত হওয়া সময়ের দাবি।

তারা বলেন, বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির সার্বজনীন থিম দিয়ে দেশের সিংহভাগ মানুষকে একটি প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করা সম্ভব। এতে বিবদমান আওয়ামীলীগ ও বিএনপি জোটের দেশের মোট জনসংখ্যার যে ৭ শতাংশ কট্টর নেতাকর্মী রয়েছেন, তারা মুখোমুখি অবস্থান ত্যাগ করে সংঘাত থামাতে বাধ্য হবেন। নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

নিজেদের কর্মপদ্ধতির কথা তুলে ধরে দলটির নেতারা বলেন, বাংলাদেশ ঐক্য পার্টিতে পরিবারতন্ত্র থাকবে না, থাকবে না কোন স্বেচ্ছাচারিতা। বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি একক ব্যক্তিকেন্দ্রিক দল কোন অবস্থাতেই হবে না। ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য নজীর সৃষ্টি করবে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি।  

তারা বলেন, বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি দেশে বিরাজমান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সব ধর্ম ও দলের সাবেক ও বর্তমান সমর্থকদের সমন্বয়ে গঠিত হবে। মালয়েশিয়ার মতো বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি দেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও উন্নয়নের অনুপম একটি দেশে রূপান্তর করার ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আলতাফ হোসেন মোল্লা, রাজীব চক্রবর্তী, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আল মাহমুদ হাসান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
এসসি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।