বগুড়া: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে গ্রেপ্তার বগুড়ার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ( ২৩ জানুয়ারি) বিকেলে বগুড়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সুমাইয়া সিদ্দিকা তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বগুড়ার আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, পুলিশের ওপর হামলা, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ১৫টি মামলা রয়েছে বলে শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন।
জানা যায়, পুলিশের তালিকা ভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী নুরুজ্জামান নুরু শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়নের মাঝিড়াপাড়ার মৃত খাজা মিয়ার ছেলে। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এলাকায় হত্যা, চাঁদাবাজি, জমি দখল ও সহিংসতাসহ বিভিন্ন অপরাধে তার বিরুদ্ধে শুধু শাজাহানপুর থানায় ১৩টি মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়া বগুড়া সদর থানায় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে।
গত বছরের ৬ এপ্রিল নুরু ও তার বাহিনীর সদস্যরা শাজাহানপুর থানায় ঢুকে বার্মিজ চাকুসহ গ্রেপ্তার মাদক মামলার এক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সে সময় তিনি গ্রেপ্তার হন। গত ৫ আগস্টের আগেই জামিনে ছাড়া পেয়ে আত্মগোপন করেন। গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থাকেন। পরে পরিচয় গোপন করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলে অবস্থান করেন। শিক্ষার্থী না হয়েও নুরু অবৈধভাবে হলে অবস্থানের বিষয়টি শিক্ষার্থীরা টের পান। পরে তারা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়ে নিশ্চিত হন যে, তিনি অবৈধভাবে হলে অবস্থান করছেন। শিক্ষার্থীরা বুধবার বিকেলে নুরুকে হল এলাকায় অবরুদ্ধ করে প্রশাসনকে খবর দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
শাজাহানপুর উপজেলা সদরের মাঝিড়া থেকে বনানী, ফুলতলা, নয়মাইল, আড়িয়াবাজার, সাবরুলসহ উপজেলাজুড়ে নুরু বাহিনীর দৌরাত্ম্য ছিল। নির্যাতনের ভয়ে তাদের অপকর্মের কথা বলতে সাহস পেত না কেউ। চাঁদাবাজি, মারপিট ও জমি দখলসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। এদিকে সন্ত্রাসী নুরুর গ্রেপ্তারের খবরে এলাকার জনগণের মাঝে স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াদুদ আলম জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বুধবার বিকেলে নুরুজ্জামানকে আটক করে আশুলিয়া মডেল থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন। খবর পেয়ে শাজাহানপুর থানা পুলিশের একটি টিম তাকে বগুড়ায় নিয়ে আসে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
জেএইচ