ঢাকা: রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি ছাড়াই তাদের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব যেকোনো নাগরিকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশ করতে বাধ্য থাকবে নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এমন রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুল মঞ্জুর করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ড. শরীফ ভূইঁয়া ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন। তথ্য কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করীম। ইসির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম।
ড. শরীফ ভূইঁয়া বাংলানিউজকে বলেন, হাইকোর্টের এ রায় হওয়ার পর এখন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশের ক্ষেত্রে দলগুলোর সম্মতির প্রয়োজন হবে না।
২০১৩ সালের ১২ জুন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার নির্বাচন কমিশনের কাছে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর বছরভিত্তিক আয়-ব্যয়ের বিবরণী চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
আবেদনের পর ইসি বদিউল আলম মজুমদারকে রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে তথ্য নিতে বলেন। পরে বদিউল আলম মজুমদার তথ্য কমিশনে আবেদন করেন। এ আবেদনের বিষয়ে বিভিন্ন আদেশ রায় এবং ইসির কাছে ফের আবেদনসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে তথ্য কমিশন ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই তৃতীয়পক্ষের (রাজনৈতিক দলের) মতামত ছাড়া হিসাব দেওয়া যাবেনা বলে রায় দেন।
এ আদেশের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান ও এ এস এম শাহজাহান, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার।
হাইকোর্ট এ আবেদনের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন। বৃহস্পতিবার রুল মঞ্জুর করে হাইকোর্ট রায় দেন।
রায়ের পর ড. বদিউল আলম মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৩ সাল থেকে এ নিয়ে লড়ছি। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কাছে তথ্য প্রকাশের বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। ২১টি দল এতে সাড়া দিয়েছে। কিন্তু ২১ দলের মধ্যে মাত্র ৩টি দল হিসাব প্রকাশ করতে অনাপত্তি দিয়েছে। এখন আদালতের এ রায়ের মাধ্যমে হিসাব আর গোপন করার সুযোগ নেই। যেকোনো নাগরিক নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলের বার্ষিক হিসাব চেয়ে আবেদন করলে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলের সম্মতি ছাড়াই হিসাব দিতে বাধ্য থাকবে।
সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, সাংবাদিকরাও এখন এ সুযোগ নিতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬/আপডেট: ১৩২৬ ঘণ্টা
ইএস/জেডএস