ঢাকা: আসন্ন ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলেও খুলছে না বিএনপির সংস্কারন্থিদের দরজা। কোনো পদে রাখা হচ্ছে না তাদের।
বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা ও সংস্কারপন্থিদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
ওয়ান-ইলেভেনের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে বিএনপি থেকে ছিটকে পড়েন সে সময়ের যুগ্ম মহাসচিব আশরাফ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) জেড এ খান, মোফাজ্জল করিম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহ মো. আবুল হোসাইন, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জহিরউদ্দিন স্বপন, দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কেন্দ্রীয় নেতা সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি নজির হোসেন, বগুড়ার সাবেক সংসদ সদস্য ডা. জিয়াউল হক মোল্লা, জিএম সিরাজ, কাজী রফিকুল ইসলাম, কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শহিদুজ্জামান, ময়মনসিংহের সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেন দুলু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এসএ সুলতান টিটু, বরগুনা জেলার সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম মনি, শামীম কায়সার লিঙ্কন, মোশাররফ হোসেন মঙ্গু, বরগুনা জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ইলেন ভুট্টো, মিরসরাইয়ের সাবেক সংসদ এমএ জিন্নাহ, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আখতার বুলু, শাম্মী শের প্রমুখ।
সূত্রমতে, সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত বিএনপির এসব কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্যদের মধ্যে বড় একটি অংশ এখনো বিএনপিতে ফেরার ব্যাপারে আগ্রহী। তারা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ডাকের অপেক্ষায় ছিলেন। ধরে নিয়েছিলেন, আসন্ন বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে তাদের ডাক পড়বে।
জানা গেছে, এদের মধ্যে কেউ কেউ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সরাসরি ও টেলিফোনে যোগাযোগ করেছেন। বিএনপির মূল ধারায় ফিরে রাজনীতি করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কিন্তু সংস্কারপন্থিদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকা বিএনপির হাইকমান্ড থেকে কোনো সবুজ সংকেত না পাওয়ায় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব তাদের কোনো আশার বাণী শোনাতে পারেননি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত বিএনপির সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জহিরউদ্দিন স্বপন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চা হোক। সে জন্য প্রয়োজন আওয়ামী লীগের পাশাপাশি শক্তিশালী একটি বিএনপি। আর এ লক্ষ্যেই আমরা বিএনপির হয়ে কাজ করতে চাই। আমাদের আগ্রহের কথাও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জানিয়েছি। উনি ইন্সট্যান্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। দেখা যাক ম্যাডাম কি সিদ্ধান্ত দেন।
সূত্রমতে, জহিরউদ্দিন স্বপনের মত আরো অনেকেই এবারের কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে বিএনপির রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছেন। যার যার অবস্থান থেকে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও দেন-দরবার চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সংস্কারপন্থিদের দলে ফেরানোর চিন্তাই করছে না বিএনপির হাইকমান্ড।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, সংস্কারপন্থিদের ব্যাপারে বিএনপির কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই। আপাতত এ বিষয়টি নিয়ে বিএনপি কিছু ভাবছে না।
তবে দ্বিধাবিভক্ত সংস্কারপন্থিদের একটি অংশ আর ফিরতে চায় না বিএনপিতে। আসন্ন জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে তাদের মধ্যে বাড়তি কোনো আগ্রহ নেই। বিএনপির কোনো পর্যায়ের কোনো নেতার সঙ্গে তারা যোগাযোগও করছেন না। আবার বিএনপি থেকেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে না কেউ।
এ প্রসঙ্গে সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আশরাফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তো বিএনপিতে ফেরার জন্য কোথাও কোনো দেন-দরবার বা যোগাযোগ করছি না। বিএনপি থেকেও আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করছে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৬
এজেড/জেডএম