ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

কোটিপতি কৃষকলীগ নেতা পেলেন ২৫০০ টাকার সরকারি সহায়তা!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
কোটিপতি কৃষকলীগ নেতা পেলেন ২৫০০ টাকার সরকারি সহায়তা!

রাজশাহী: করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন মানুষের জন্য সরকারের ২ হাজার ৫শ টাকার প্রণোদনার তালিকা তৈরিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে তৈরি এ তালিকায় স্বজনপ্রীতি, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার, প্রকৃত দরিদ্র-অসহায়দের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করাসহ অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে এরই মধ্যে।

হবিগঞ্জে একই ব্যক্তির মোবাইল নম্বর ২শ বার তালিকায় থাকার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এবার রাজশাহীতে সরকারের ২৫শ টাকার সহায়তা পেলেন একজন কোটিপতি ব্যবসায়ী ও কৃষকলীগ নেতা।



এই উপহার পাওয়া মুর্শিদ কামাল রানা রাজশাহী মহানগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি নগরীর রাজপাড়া থানা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি। তিনি কোটিপতি ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। নগরীর লক্ষ্মীপুরে ‘সরকার প্লাজা' নামে একটি পাঁচতলা ভবনের মালিক তিনি। সেই ভবনের মার্কেট থেকেই তিনি মাসে লাখ টাকা ভাড়া পান।

এছাড়া তার ঠিকাদারি ব্যবসাও রয়েছে। অথচ হতদরিদ্রের তালিকায় তার নামও উঠেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহী মহানগর কৃষকলীগের সভাপতি রহমতুল্লাহ সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, মুর্শিদ কামাল রানা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি। তিনি আর্থিকভাবে বেশ সচ্ছল। প্রধানমন্ত্রীর উপহার তার কাছে পৌঁছেছে বলে আমাকে জানিয়েছেন। কিন্তু কীভাবে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সে বিষয়ে রানা নিজেও জানেন না।

জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. নুরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আমি ওয়ার্ডের ১৪৫০ জনের তালিকা তৈরি করেছি। এর মধ্যে কীভাবে একজন কোটিপতি ব্যবসায়ীর নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে বিষয়টি জানার পর আমি তালিকায় নাম খুঁজে দেখেছি। কিন্তু সেখানে তার নাম নেই। কিন্তু তার ব্যক্তিগত ফোন নম্বরটির বিপরীতে একজন হিন্দু যুবকের নাম রয়েছে তালিকায়। ধারণা করছি, তার মার্কেটে কর্মরত কোনো কর্মচারী হয়তো তার নম্বরটি দিয়েছেন। আমি বিষয়টি আরও খোঁজ নিচ্ছি।

এ বিষয়ে কৃষকলীগ নেতা মুর্শিদ কামাল রানা বাংলানিউজকে জানান, তার ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে পাঁচদিন আগে টাকা আসে। পরে বুঝতে পারেন এটি সরকারের বিশেষ প্রণোদনার টাকা।  

‘দরিদ্র-অসহায়দের জন্য সহায়তার তালিকায় কীভাবে আমার নাম অন্তর্ভুক্ত হলো বুঝতে পারছি না। ’

তিনি আরও বলেন, আমি আর্থিকভাবে সচ্ছল মানুষ। সবাই তা জানেন। অল্প কিছু টাকার জন্য তালিকায় আমার নাম দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।  

এ টাকা উত্তোলন করে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণতহবিলে ফেরত পাঠাবেন বলেও উল্লেখ করেন কৃষকলীগের এই নেতা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
এসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।