ঢাকা: প্রখ্যাত সাবেক ছাত্রনেতা সিরাজুল আলম খানকে বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিচ্ছেদ্য অংশ উল্লেখ করে তাকে নিয়ে কল্পকাহিনী এবং ইতিহাস বিকৃতির প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
বুধবার (৯মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি প্রতিবাদ জানান।
রব বলেন, বাঙালির জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে স্বাধীনবাংলা নিউক্লিয়াস, বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদানের পরিকল্পনা, মুজিববাহিনী গঠন, বাংলাদেশের পতাকা তৈরি ও উত্তোলন, ইশতেহার প্রণয়ন, জাতীয় সঙ্গীত নির্ধারণ, জয় বাংলাসহ সব স্লোগান নির্ধারণ, আন্দোলন-সংগ্রামের পরিকল্পনা ও কৌশলসহ বহু যুগান্তকারী পদক্ষেপ ও ঐতিহাসিক ঘটনার নেপথ্য নায়ক সিরাজুল আলম খান। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের অন্যতম কারিগর তিনি। সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা অর্থাৎ স্বাধীনতার পটভূমি তৈরিতে ইতিহাসের অন্যতম চরিত্র সিরাজুল আলম খান। আন্দোলন সংগ্রামে তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।
আ স ম রব বলেন, ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ তাৎক্ষণিক নয়, বরং পূর্ব পরিকল্পিত। তখনকার প্রেক্ষাপটে ক্ষমতার বলয়, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংগ্রামের সম্ভাব্য পথরেখা এবং বাস্তবতা বিবেচনায় নির্বাচনের ম্যান্ডেট অনুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবির পাশাপাশি যুগপৎভাবে অসহযোগ ও স্বাধীনতার আন্দোলনের ডাক এবং স্বাধীনতার আহ্বান সবকিছুই পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ। এসবের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ইতিহাস থেকে সিরাজুল আলম খানকে বিচ্ছিন্ন করার কোনো অবকাশ নেই। তাৎক্ষণিকতা দিয়ে একটি পরাধীন জাতিকে রাষ্ট্র নির্মাণের লক্ষ্যে সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামের দিকে ধাবিত করা যায় না।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে যার যা অবদান তা মুছে সমগ্র মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে একটি পরিবারের কাছে বলি দেওয়া হচ্ছে, এটা ভয়ংকর অন্যায়। ইতিহাস থেকে মওলানা ভাসানী, তাজউদ্দিন আহমেদ, জেনারেল ওসমানীসহ সেক্টর কমান্ডারদের অনন্যসাধারণ বীরত্বপূর্ণ ভূমিকাকে ক্রমাগত অস্বীকার করে মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে।
রব বলেন, ছাত্রলীগকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতার ইতিহাস লেখা সম্ভব নয়। নিউক্লিয়াস এবং সিরাজুল আলম খানকে অস্বীকার করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। সিরাজুল আলম খান সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন স্বাধীনতার বেদীতে, ব্যক্তিগত কোনো প্রাপ্তি বা খ্যাতির জন্য নয়।
তিনি বলেন, বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিচ্ছেদ্য অংশ সিরাজুল আলম খান। স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি ছিলেন অনমনীয় এবং অতুলনীয়। সিরাজুল আলম খানকে ইতিহাসই ধারণ করবে, কেউ ইচ্ছা করলেই ইতিহাস থেকে তাকে ছেঁটে ফেলতে পারবে না। কারণ সিরাজুল আলম খান নিজেই ইতিহাসের বিষয়।
ঐতিহাসিক ন্যায্যতার প্রয়োজনে সিরাজুল আলম খান সম্পর্কে অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান আ স ম আব্দুর রব।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২২
এমএইচ/এমজেএফ