সিলেট: সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিল ও সম্মেলন নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গত সোমবার সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল ছিল।
এ উপলক্ষে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুর ১২টায় নগরীর মানিকপীর রোডস্থ মালঞ্চ কমিউনিটি সেন্টারে তিনি জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন তিনি। এবারের জেলা কাউন্সিলে সভাপতি পদপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী।
দলীয় সূত্র মতে জানা যায়, সিলেট জেলা বিএনপির ‘নাটকীয়তাপূর্ণ’ কাউন্সিল নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে যাচ্ছেন দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সম্মেলনে সভাপতি পদপ্রার্থী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
যদিও এ মাসের শেষ সপ্তাহে যেকোনো দিন জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে পারে এমনটি জানিয়েছেন দলের নেতারা।
সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট জেলা বিএনপি কাউন্সিলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট আব্দুল গাফফার গণমাধ্যমকে জানান, কাউন্সিলে অংশ নিতে বিভিন্ন পদে যেসব প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। যদি কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে চান, তবে তাকে মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যা ৫টার মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পর কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এছাড়া দলের হাই কমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী দু-একদিনের মধ্যে সম্মেলন ও কাউন্সিলের চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ করা হতে পারে।
গত রোববার (২০ মার্চ) কেন্দ্রের নির্দেশে সম্মেলন ও কাউন্সিল সাময়িকভাবে স্থগিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা মোতাবেক সম্মেলন সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। কেননা, বিশাল এই সম্মেলনে ভোটার তালিকা আগের রাতে করা নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রশ্ন তুলেছেন। সবকিছু সুন্দরভাবে সম্পন্ন হলেও ভোটার তালিকা কিছুটা সময় নিয়ে করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন, তাতে স্বচ্ছতার বিষয়টি আরো সুন্দর হতো। যে কারণে নির্বাচনের আগের রাতে কাউন্সিলরদের ভোটার তালিকা প্রস্তুতের বিষয়টি তিনি মেনে নিতে পারেননি। ফলে আরেকটু সময় নিয়ে সম্মেলন করা উচিত মনে করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তার পরামর্শক মোতাবেক সম্মেলন পেছানো হয়েছে। হয়তো আজকেই চিঠির মাধ্যমে পরবর্তী দিন তারিখ জানিয়ে দেওয়া হতে পারে।
এদিকে, ভোটার তালিকা নিয়ে গলদঘর্ম অবস্থা তৈরির নেপথ্যের কারণ ও তার যথার্থতা খতিয়ে দেখতে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলনকে প্রধান করে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন। কমিটির সদস্যরা অন্য সদস্যরা হলেন, সিলেট মহানগরের সাবেক সভাপতি নাসিম হুসাইন, মহানগরের সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সিলেট জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক নজীবুর রহমান নজীব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহিদ সোহেল।
ওই কমিটিকে ২৭ মার্চের মধ্যে কাউন্সিলরদের তালিকা যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, জেলা বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় সদস্য মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ভোট যুদ্ধের আরিফের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে অনেকের মাথা ব্যথা শুরু হয়েছে। মাত্র ৬ দিনের মধ্যে কাউন্সিলররা আমাকে যেভাবে গ্রহণ করেছে, এটা নিয়ে অনেকের কপালে ভাজ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আমি দলের সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো কী না, তা সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করবো।
বাংলাদেশ সময়: ০১২৪ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২২
এনইউ/এনটি