রাজশাহী: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলছেন, টিভিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য আর বর্ষাকালে ব্যাঙের ডাক একই।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা নিজেরা ঐক্য ধরে রাখতে পারে না, তারা সরকার পতনের ডাক দেয়। বিএনপি এর আগেও জাতীয় ঐক্য করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর টেকেনি। এখন আবার ঐক্য প্রক্রিয়া গঠনের কথা বলছে, অথচ তাদের নিজেদের মধ্যেই ঐক্য নেই।
আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে ড. হাছান বলেন, সরকারের উন্নয়ন দেখে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা বুঝে গেছেন, বিএনপির বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ দেশটা বদলে গেছে। এই উন্নয়নের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে।
আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কর্মীদের ওপর বিশ্বাস রেখে মন্ত্রী বলেন, সরকার এ পর্যন্ত যেসব উন্নয়ন করেছে তাতে নৌকা বাদে অন্য কোথাও ভোট যাওয়ার কথা নয়। যদি যায়, বুঝতে হবে নেতাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে মানুষ ভোট দেয়নি। ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ আমরা দেখতে চাই না। এদের কারণে দেশের উন্নয়নে ভাটা পড়তে দিতে পারি না।
তিনি আরো বলেন, হাত গুটিয়ে থাকা ও দলের সাধারণ কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখা মানুষদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাদের দলেও দরকার নেই। যারা টাকা দিয়ে নেতা হতে চায় তাদের প্রয়োজন নেই।
বিএনপি নেতাদের সমসাময়িক বিভিন্ন মন্তব্য প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, বিএনপির মন্তব্যের পর এখন বানরও ভেংচি কাটে। তারা বলেছিল, পদ্মা সেতু তৈরি করা সম্ভব নয়। কিন্তু পদ্মা সেতু এখন হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী গাড়ি চালিয়ে এর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পাড়ি দিয়েছেন। তাই পদ্মা সেতুতে ওঠার আগে বিএনপির নেতাকর্মীদের তওবা পড়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
এ সময় তিনি বলেন, পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কারণে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না। যারা এসব নিয়ে অপপ্রচার চালায় তারা উন্নয়ন চায় না।
মাঠে-ময়দানে বিএনপি নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে বর্ষাকালে চারিদিক যখন তলিয়ে যায় তখন ব্যাঙ ডাকে। বিএনপির ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য বর্ষাকালের ওই ব্যাঙ ডাকার মতোই। তারা সমাবেশ করতে পারে না। সমাবেশের নামে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। আওয়ামী লীগের উন্নয়নের দিশেহারা হয়ে বিএনপি নেতারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে তিনি বলেন, দেশের বাজারে পণ্যের মূল্য বেড়েছে। তবে এর চাইতে বেশি বেড়েছে বিশ্ববাজারে। ইউরোপে খাদ্যপণ্যের দাম কয়েক দশকে সর্বোচ্চ বেড়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এরপরও বর্তমান সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উদ্বোধক ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার। প্রধান বক্তা ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহীর পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান, পবা-মোহনপুর আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা ও জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. চিন্ময় কান্তি দাস।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২২
এসএস/এনএসআর