ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে এক একজন ব্যক্তি ও একটি পরিবারের অবদান হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন এবি পার্টির নেতারা।
শনিবার (২৬ মার্চ) আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) উদ্যোগে ৪৫ বিজয় নগরস্থ বিজয় একাত্তর চত্বরে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে ‘স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ও আমাদের অধিকারের সংগ্রাম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তারা এ কথা বলেন।
এবি পার্টির আহ্বায়ক ও সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং এবি যুব পার্টির সমন্বয়ক এ বি এম খালিদ হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন- এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
সভায় স্বাধীন বাংলাদেশে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম নিয়ে বক্তব্য রাখেন- এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক বি এম নাজমুল হক, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব আনোয়ার সাদাত টুটুল, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সহকারী সদস্য সচিব এম আমজাদ খান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান, ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি, যুবনেতা ইলিয়াস আলী, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব ফিরোজ কবির, সুলতানা রাজিয়াসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, আমরা আইয়ুব খানের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছি। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে মাসের পর মাস আমাদের কারাগারে কাটাতে হয়েছে। কিন্তু আজও স্বপ্নের স্বাধীনতা আমরা পাইনি। আজ ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধকে পারিবারিক ইতিহাসে পরিণত করা হয়েছে। এবি পার্টি একটি নতুন রাজনৈতিক দল। আমি জেনে খুশি হয়েছি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে এবি পার্টি মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রকে তাদের মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করেছে। রাজনীতিতে সফল হওয়ার জন্য আপনারা সঠিক ইতিহাস জানবেন এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজপথে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন এ কামনা রইলো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইশতিয়াক আজিজ উলফাত বলেন, আমার ভাই মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছে। আমি জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি, ক্রাকপ্লাটুন পাকিস্তানিদের হৃদয় কাঁপিয়েছে। লক্ষ্য ছিল দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা। কিন্তু আজ গোটা দেশ কারাগারে পরিণত হয়েছে। মানুষের অধিকার ভুলুণ্ঠিত। আবার নতুন করে আমাদের সংগ্রামে নামতে হবে। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।
আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, আমি স্বাধীনতা বলতে বুঝি নিরাপত্তা। আজ মানুষ কোথাও নিরাপদ নয়। হাসপাতালে, পুলিশ স্টেশনে, রাস্তায় গাড়িতে কিংবা বাড়িতে সর্বত্র মানুষ নিরাপত্তাহীন। মানুষের এ নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটা স্বাধীন ভূখণ্ড পেয়েছি, একটা পতাকা পেয়েছি। না পাওয়ার অনেক বেদনায় জাতি আজ ভারাক্রান্ত। এ জাতির কাছে আশার আলো জ্বালাতেই আমরা নতুন উদ্যোগ নিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নে আমরা গঠন করেছি আমার বাংলাদেশ পার্টি। আগামীদিনে এবি পার্টি এদেশের মানুষের সব হতাশাকে আশায় পরিণত করবে ইনশাআল্লাহ।
আলোচনা সভা শেষে স্বৈরতন্ত্রের কবল থেকে মুক্তির লক্ষ্যে একটি ‘পতাকা মিছিল’ রাজধানীর বিজয়নগর, কাকরাইল, পল্টনসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২২
এমএইচ/আরবি