কুমিল্লা: কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ ও অস্ত্রের মহড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এসময় পিস্তল ও রাইফেল হাতে ১৫-১৬ জন মহড়া দিয়েছেন।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সম্মেলন স্থলের বাইরে এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও এমপি আঞ্জুম সুলতানা সীমার লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়া দু’টি ছবিতে দেখা যায়, লাল মাস্ক পরে অস্ত্র হাতে সামনের দিকে তেড়ে আসছেন এক যুবক। ওই যুবকের নাম দিদারুল হক আশিক। তিনি কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের এক নেতার অনুসারী। তার বাড়ি নগরের চর্থা এলাকায়। আরেক ছবিতে দেখা যায়, ক্যাপ পরা এক যুবক রাইফেল প্রস্তুত করছেন। ওই যুবকের নাম দিদার। তার বাড়ি নগরীর টমছমব্রিজ এলাকায়। তার পাশে চশমা পরা যুবকের নাম আশিক ও পাশে আরেক যুবককে সহায়তা করতে দেখা যায়, যার নাম বাপ্পী। তাদের বাড়ি চর্থা এলাকায়। এ তিনজন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ও হত্যা মামলায় জেল খাটা এক নেতার অনুসারী।
ছবিতে আরও দেখা যায়, ওই তিনজনের গলায় সম্মেলনে প্রবেশের অনুমতির কার্ড ছিল।
এদিকে ছবি, ভিডিও ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, অস্ত্রধারী অনেকের মাথায় হেলমেট ছিল। কেউ কেউ মুখে কাপড় বেঁধে আসেন। কেউ কাঁধে ব্যাডমিন্টনের ব্যাট রাখার ব্যাগে অস্ত্র নিয়ে আসেন।
সূত্র জানায়, শনিবার কুমিল্লা টাউন হলের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে বক্তব্য দিতে শুরু করলে সম্মেলনে স্থলে আসার চেষ্টা করেন এমপি আঞ্জুম সুলতানা সীমা। কিন্তু টাউন হলের গেট এমপি বাহারের পক্ষের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় তিনি সম্মেলন স্থলে প্রবেশ করতে পারেননি। তিনি টাউন হলের গেট থেকে ফিরে যাওয়ার পর পরই নগরের নজরুল এভিনিউ রোডে শুরু হয় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ। চলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান মিঠু ও কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বলেন, এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে এমপি বাহার গ্রুপের লোকজন জড়িত। নগরে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে। অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্রধারীদের শনাক্ত করে আইনের আওয়তায় নেওয়া পুলিশের দায়িত্ব।
এ বিষয়ে এমপি বাহার গ্রুপের নেতা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, ঘটনার সময় আমরা সম্মেলন স্থলে ছিলাম। বাইরে কে কি করেছে, সেটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দেখার বিষয়। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগে গ্রুপিংয়ের যে বিষয়টি বলা হয়, সেটা ঠিক নয়। সম্মেলন চলাকালে কেন্দ্রীয় নেতারা আসার পর কয়েকজন সম্মেলন স্থলে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এটা ভদ্রতা হতে পারে না।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন বলেন, এ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ আমার নেই। আপনাদের এ বিষয়ে মিডিয়া সেল থেকে জানানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২২
এসআই