ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আওয়ামী লীগই অগ্নিসন্ত্রাসের হোতা: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২২
আওয়ামী লীগই অগ্নিসন্ত্রাসের হোতা: মির্জা ফখরুল

ঢাকা: বিএনপি নয়, ক্ষমতাসীনরাই অগ্নিসন্ত্রাসের মূল হোতা বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে তিনটি সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষে সরকারের মন্ত্রী-নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, এই চলমান আন্দোলনের যে ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছে এবং তার যে গতি প্রতিদিন বাড়ছে, এটাতে ভীত হয়ে তারা (ক্ষমতাসীনরা) আগের যে বিষয়গুলো সেই বিষয়গুলোকে নিয়ে আসছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সত্য কথা হচ্ছে, এই যে অগ্নিসন্ত্রাসের মূল হোতা কিন্তু আওয়ামী লীগ নিজেই, সরকার নিজেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, সেই সময়ে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে প্রত্যেকটি ঘটনায় দেখা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের লোকেরাই এর (অগ্নিসন্ত্রাস) সঙ্গে জড়িত। বাসের (অগ্নিসংযোগ) ব্যাপারটা নিশ্চয় মনে আছে আপনাদের। যেটা দেখা গেলো, বাসের মালিক হচ্ছে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির প্রধান এবং চৌদ্দগ্রামে যেটা ঘটেছিল দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আসামি করে যে মামলাগুলো দেওয়া হয়েছে, সব কিছুর মূলে দেখা যায় যে, ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের লোকেরাই জড়িত।

বিএনপি কোনো সন্ত্রাসের সাথে জড়িত নয় দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা একটা মুক্ত লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, আমরা নির্বাচন করা দল। কখনোই অগ্নিসন্ত্রাস বা সন্ত্রাস করে আমরা ক্ষমতায় যাইনি অতীতে, আমরা এখনো যেতে চাই না।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, এতগুলো সমাবেশ হয়েছে প্রত্যেকটা সমাবেশে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপরে কী রকম অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে, আমাদের দল থেকে কোনো রকমের কোনো সন্ত্রাস বা উস্কানি দেওয়া হয়নি। তারাই উস্কানি দিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। তারা এই চলমান আন্দোলনকে আবার ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য এই পদ্ধতিটা বেঁছে নিয়েছে। কিন্তু তাতে কাজ হবে না। জনগণ দেখছে প্রতিমুহূর্তে কারা কী করছে না করছে। জনগণের একটাই দাবি, এই সরকারকে পদত্যাগ করে চলে যেতে হবে।

‘কোনো ছাড় দেওয়া হবে না’ সরকারের মন্ত্রীদের এরকম বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ছাড় কেউ কাউকে দেয় না তো। দাবি আদায় করে নিতে হয়। আর ওনারা যে বডি ল্যাংগুয়েজে কথা বলছেন, ওটা থাকে না। শেষ পর্যন্ত এই ধরনের ফ্যাসিস্ট সরকারের দেখা যায় যে, তাসের ঘরের মতো সমস্ত পড়ে যায়। ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এরশাদের একই ধরনের কথাবার্তা ছিল, বডি ল্যাংগুয়েজ ছিল। ৬ তারিখে কিন্তু ধপাস!

বুধবার বিকেল ৪টায় মাইনরিটি জনতা পার্টি, বিকেল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ ন্যাপ ও বিকেল ৫টায় সাম্যবাদী দলের সঙ্গে সংলাপে বসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মাইনোরিটি জনতা পার্টির চেয়ারম্যান সুকৃতি কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী এবং বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম নিজ নিজ দলের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

মাইনোরিটি জনতা পার্টির প্রতিনিধি দলে ছিলেন—দিলীপ কুমার দাস, মোহাম্মদ আবদুল হাই, কমলেশ কুমার দাস, নিরদ বরণ মজুমদার, অশোক কুমার সরকার, ভবতোষ মুখার্জী সুবীর, শন্তু নাথ দাস, পল্লব চ্যাটার্জী, উজ্জ্বল চন্দ্র দাস, শেখর চন্দ্র সরকার, সুমন কুমার সরকার, কেয়া সেন ও মিঠুর ভট্টচার্য।

বাংলাদেশ ন্যাপের প্রতিনিধিরা হলেন—পরেশ চন্দ্র সরকার, আব্দুল বারিক, নুরুজ্জামান, মেহেদি হাসান এবং ওমর ফারুক।

সাম্যবাদী দলের প্রতিনিধিদলে ছিলেন—সাইফুল ইসলাম মাহফুজ, সাইফ উদ্দিন মাহমুদ, এরশাদ আলী, মেহেবুব মিয়া, আবু তাহের, শামসুল হক, আব্দুল গনি খান, সুমন হাওলাদার ও নুরুদ্দিন ঢালী, বিএনপির মহাসচিবের সাথে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

সরকার পতন আন্দোলনের কর্মকৌশল চূড়ান্ত করতে গত সেপ্টেম্বর থেকে বিএনপি মহাসচিব ২০ দলীয় জোটের শরিক ও সমমনা অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শুরু করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা,  নভেম্বর ০৯, ২০২২
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।