উদয় ঘোষাল কয়েকবার চেষ্টা করেছে পায়ের পাতাটা এক নজরে দেখতে। চেষ্টা করেও আবছা আঁধারে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে না কিছুই।
ইতোমধ্যে আকাশ ফর্সা হয়ে গেছে। ভোরের আবছা আঁধার কাটতেই পায়ের আঙুলের দিকে নজর পড়ল উদয়ের। তিনটা আঙুলই নেই, দুইটা কোনোরকম পায়ের সঙ্গে ঝুলছে! নিজের চোখে তা দেখেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে ওর। রাতে ভাবেনি এতখানি কেটেছে। এতটা ঝুঁকি নিয়ে রাত কাটিয়েছে, তা ভাবতেই মাথা চক্কর দিতে লাগল, শরীর কাঁপতে লাগল থরথর করে। এখনো ফোঁটা ফোঁটা রক্ত ঝরছে কাটা জায়গা থেকে। গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত অনবরত রক্ত ঝরছে। শরীরে রক্তের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চোখ মেলে রাখতেও কষ্ট হচ্ছে। চিৎকার দেওয়ার শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে। হিতাহিত জ্ঞান নেই বললেই চলে। উঠে দাঁড়াতেও পারছে না, পারলে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে যেত। কে ধরে নিলো, কে কামড়ে খেলো সেসব মাথায় নেই এখন আর। বাঁচা—মরা নিয়েও কোনো চিন্তাভাবনা নেই উদয়ের।
পিপাসায় বুকের ছাতি ফেটে যাচ্ছে। পানি খেতে না পারলে নির্ঘাৎ কিছু একটা ঘটে যাবে। মাঝে মধ্যে ক্ষীণস্বরে চেঁচিয়ে উঠছে। উদয় ভালো করেই জানে ওকে সাহায্য করার মতো বনে কেউ নেই। তারপরেও মানুষের সহজাত প্রবৃত্তির কারণে মুখ ফসকে সাহায্যের প্রার্থনা বেরিয়ে আসছে। তাছাড়া এখন ওর হুঁশও নেই। ঠিক অমনি সময় ওর কানে ভেসে এলো ঘোঁৎ ঘোঁৎ আওয়াজ। এই আওয়াজটা কোথায় যেন শুনেছে, মনে পড়ছে না ঠিক মতো। তবে আওয়াজটা পরিচিত। গতকাল সকালে খোঁয়াড়ে থাকাকালীন এমন আওয়াজ কানে ভেসে এসেছিল বার কয়েক। বিষয়টা নিয়ে ভাবতেই মনে পড়েছে এ তো নরখাদকদের উল্লাস ধ্বনি! তার মানে ওরা বনে ঢুকেছে ওকে খুঁজতে। চুপচাপ উদয়। কান পেতে শুনছে। আওয়াজের উৎসস্থল কাছাকাছিই মনে হচ্ছে। একদম ঝোপের কাছ থেকেই আওয়াজটা ভেসে আসছে। সেকেন্ডের মধ্যেই ঝোপের দিকে তীরের ফলা ছুটে আসতে লাগল। ঝোপের মোটা মোটা লতার সঙ্গে তীরের ফলা আটকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হচ্ছে। উদয় দাঁড়ানো থাকলে এতক্ষণে তীরের ফলা ওর শরীরে গেঁথে যেত। মরণশ্বাস নেওয়ার মতো অবস্থায়ও বিষয়টা খেয়াল করল উদয়। তাই সে নিজ থেকেই আওয়াজ করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে লাগল।
কষ্টেসৃষ্টে উঠে দাঁড়াল উদয় ঘোষাল। সঙ্গে সঙ্গেই ওকে দেখে ফেলেছে নরখাদকদের একজন। দেখেই সে তীর—ধনুক হাতে নিয়ে উঁচিয়ে ধরল উদয়কে লক্ষ্য করে। উদয় প্রস্তুত, মরতে ভয় পাচ্ছে না। কাকুতি মিনতিও করেনি তাই। সে ভালো করেই জানে বেঁচে থাকার জন্য আবেদন জানালেও কোনো সুফল মিলবে না। কারণ আবেদন—নিবেদন বোঝার মতো কোনো ভাষা বা জ্ঞানবুদ্ধি ওদের জানা নেই। তাছাড়া রাতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর এভাবে পালিয়ে থাকবে না। যা হওয়ার এখনই হয়ে যাক; অহেতুক টেনশন বাড়িয়ে লাভ নেই।
উদয় ঘোষাল সোজা হয়ে দাঁড়াতেই ধনুক থেকে তীরের ফলাটা সরিয়ে ফেলল নরখাদক। শিকার নিরস্ত্র দেখে সঙ্গীদের ইশারায় জানালো ওকে বেঁধে ফেলতে। সঙ্গে সঙ্গে অনাবৃত শরীরের কুৎসিত একজন নারী উদয়কে জাপটে ধরল। উদয় ঘোর বিপদেও ভীষণ অস্বস্তিতে পড়ল। ওর গায়ের বিটকেলে গন্ধে উদয়ের পেটের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে আসতে লাগল।
আক্রমণকারী এই দলের সঙ্গেই ঝোপের কাছে এসেছে। দলে লোকজন বেশি নেই; তিন-চারজন। প্রত্যেকের হাতেই তীর-ধনুক। অবশ্য ওদের আরও কয়েকটা ছোট ছোট দল বনে প্রবেশ করেছে উদয়কে খুঁজতে। গতকাল সন্ধ্যালগ্নে দলপতি জানিয়েছে ভোর হলেই যেন সবাই শিকারের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে। ওরা জানে, শিকার দ্বীপ থেকে পালিয়ে যেতে পারবে না, বনেও পালিয়ে থাকা সম্ভব নয়। তাছাড়া নারকেল কাঁকড়ার হিংস্রতার কথাও ওদের জানা আছে। কাজেই শিকার খুঁজে বের করা তেমন কঠিন কাজ হবে না। শিকারের মৃতদেহ হলেও খুঁজে পাবে। গতকাল আঁধার ঘনিয়ে আসায় বনে কেউ প্রবেশ করেনি। তাই ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ওরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে শিকার খুঁজতে বের হয়েছে। শিকার খুঁজে না পেলে যে নরখাদক পাহারার দায়িত্বে ছিল ওর কঠিন সাজা হবে। বিষয়টা মাথায় নিয়ে পাহারাদার নরখাদক হন্নে হয়ে খুঁজছে পালিয়ে যাওয়া শিকার। বুদ্ধি করে পাহারাদার বনের গহীনে প্রবেশ করেনি আজ। গতকাল উদয় যেখানে হারিয়ে গেছে, সেই জায়গাটার আশপাশে এসে খুঁজতে লাগল। সে বুঝতে পেরেছে রাতের আঁধারে শিকার বনের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না। আবার আকাশ পুরোপুরি ফর্সা না হওয়া পর্যন্ত শিকার দূর কোথাও যেতে পারবে না। তাই সে অন্য কোথাও তল্লাশি না চালিয়ে জঙ্গলের এই জায়গায় এসে খুঁজতে লাগল। ঝোপের কাছে এসে পাগলের মতো এলোপাথাড়ি তীর ছুড়তে লাগল। যে করেই হোক শিকার খুঁজে বের করতেই হবে ওকে। না হলে অনেক কঠিন সাজা ভোগ করতে হবে। এভাবে কয়েকটা তীর এলোপাথাড়ি ছুড়তেই উদয় দাঁড়িয়ে গেল। তখনি পাহারাদার খুশিতে ঘোঁৎ ঘোঁৎ করতে লাগল। আর সেই আওয়াজটাই উদয়ের কানে এলো।
পাহাদারের নির্দেশে আক্রমণকারী উদয় ঘোষালের গলা শক্ত হাতে জাপটে ধরেছে। তাতে ওর দম বন্ধ হয়ে আসতে লাগল। পারলে গলা টিপেই শ্বাসরোধ করে দেয়, এমনি পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে আক্রমণকারী। শিকার কষ্ট পাচ্ছে, হাঁসফাঁস করছে, তাই দেখে ওরা খুব মজা পাচ্ছে আর উল্লাস করছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এবার আক্রমণকারী বাহাদুরি দেখাতে উদয়ের গলা টিপে ধরে ঝুলে রইল।
উদয়ের দম বন্ধ হয়ে আসছে। চোখ বেরিয়ে আসছে। যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছে না আর। বাধ্য হয়ে তাই শেষ শক্তি প্রয়োগ করে আক্রমণকারীকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দিল। নিচে পড়তেই আক্রমণকারী প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হলো। মাটি থেকে উঠে দাঁতমুখ খিঁচিয়ে তীরের ফলা শিকারের বাম বাহুতে চেপে ধরে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দিল। নিচে পড়েই উদয় যন্ত্রণায় কাতরাতে লাগল।
শিকারের দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকাল আক্রমণকারী। ক্ষোভে ফেটে যাচ্ছে সে। দাঁত কিড়মিড় করে ক্ষোভ প্রকাশ করতে লাগল। এই ফাঁকে উদয়ের পায়ের পাতার ওপর নজর পড়ল ওর। কাটা আঙুলগুলো দেখেই সে ইশারায় দৃষ্টি আকর্ষণ করাল সঙ্গীদেরও। এতক্ষণ উদয়ের পায়ের দিকে নজর পড়েনি কারোই। রক্তমাখা আঙুল দেখে পিশাচের মতো লোলুপ দৃষ্টিতে কয়েক সেকেন্ড সেদিকে তাকিয়ে রইল ওরা। কিছুক্ষণ দেখেটেকে উদয়কে টেনে হিঁচড়ে ঝোপের ভেতর থেকে বের করে আনল।
ব্যথা পেয়ে উদয় চিৎকার দিতে লাগল। তাতে আনন্দ পাচ্ছে নরখাদকের দল। বনপ্রান্তর কাঁপিয়ে জোরে জোরে হাসতে লাগল। এদিকে আক্রমণকারী ধৈর্য হারিয়ে ফেলছে। এই মুহূর্তে কিছু একটা করতে না পারলে ওর মনে শান্তি নেই। খাওয়া—দাওয়া পরে, আগে বদলা নিতে হবে। না হলে একজন নরখাদক হিসেবে ওর মান থাকে না। সঙ্গীরা একে অপরকে জানিয়ে দিলে এই বদনাম দ্বীপবাসীর মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। তখন বেঁচে থাকা পর্যন্ত মাথা উঁচিয়ে চলতে পারবে না।
উদয়কে বনের বাইরে নিয়ে এলো ধরাধরি করে। এরই মধ্যে আরও কয়েকজন নরখাদক সেখানে উপস্থিত হলো। সবাই উৎসুক দৃষ্টিতে উদয়ের দিকে তাকিয়ে রইল। সভ্য সমাজের মানুষ এতটা চতুর হতে পারে, তা ওদের জানা ছিল না। জানা থাকলে গতকালই ওর মুণ্ড চিবিয়ে খেতো। অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে শিকার, সুতরাং আর দেরি করা ঠিক হবে না। তীর ছুড়ে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। সেকাজটা এখুনি করতে পারছে না দলপতি না আসায়। দলপতির সিদ্ধান্তের প্রয়োজন আছে।
এদিকে আক্রমণকারীও নাছোড়বান্দা, শিকার জীবিত থাকতেই প্রতিশোধ নিতে চায়। না হলে ওকে খেয়েও তৃপ্তি পাবে না। চোখ রাঙিয়ে শিকারের দিকে তেড়ে এলো এক নারী। ওকে বাধা দিয়েও রাখতে পারছে না স্বগোত্রীয়রা। দূর থেকে লাফিয়ে এসে উদয়ের ঘাড়ের উপর পড়ল আক্রমণকারী। মুহূর্তেই কড়াৎ করে উদয়ের ঘাড় মটকে গেল। সঙ্গে সঙ্গে ঘাড় কাত হয়ে হেলে পড়ল। চেঁচিয়ে উঠল উদয়। তাতেও ক্ষ্যান্ত হয়নি আক্রমণকারী। ঝুলে থাকা পায়ের আঙুলটা কামড়ে ধরল এবার। দলের লোকজন ধস্তাধস্তি করেও ওকে ছাড়াতে পারছে না। এক পর্যায়ে আক্রমণকারীকে জোরে টেনে আনতেই উদয়ের পায়ের একটা আঙুল ছিঁড়ে ওর মুখে চলে এলো। এবার সে খুশি। উল্লাস করতে করতে উদয়ের আঙুলটা কুকুরের মতো কামড়ে ধরে সরে গেল।
প্রচণ্ড ব্যথায় উদয়ের প্রাণ যায় যায় অবস্থা। ঘাড় মটকে যাওয়ায় আর কোনদিকে তাকাতেও পারছে না। একফাঁকে শুধু দেখল ওর পায়ের আঙুলটা রাক্ষুসী মুখে পুরে চিবুচ্ছে। এই বীভৎসতা দেখে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই উদয় ঘোষাল অচেতন হয়ে পড়ল।
এদিকে শিকার আটকের খবর দ্রুত দ্বীপে ছড়িয়ে পড়ল। দলপতির কানেও গেল। খবরটা দলপতির কানে যেতেই যা দেরি, সঙ্গে সঙ্গে সে চলে এলো বনপ্রান্তরে। শিকার বন্দি অবস্থায় দেখে দলপতি খুব খুশি হলো। ভাগ্যিস শিকার খুঁজে পেয়েছে, না হলে আজ স্বগোত্রীয় লোকটা বিচারের মুখোমুখি হতো। দলপতি চায় না দ্বীপে অশান্তির সৃষ্টি হোক। কারণ পাহাদারের শাস্তি হলে কেউ না কেউ অখুশি হবে, এটা সে ভালো করেই জানে। আবার শাস্তি না দিলেও অন্যরা রেগে যাবে। শিকার খুঁজে পাওয়ায় আর উভয় সংকটের মোকাবিলা করতে হচ্ছে না ওকে।
দলপতি কাছে এসে দেখতে পেলো শিকারের পায়ের আঙুল নেই। দেখেই বুঝে ফেলেছে সে ঘটনার বৃত্তান্ত। নারকেল কাঁকড়ার হিংস্রতা সম্পর্কে ভালো করেই জানা আছে দলপতিরও। এই কাঁকড়াদের উপদ্রবে ডেরায় নিরাপদে ঘুমাতে পারেনি ওরা। দ্বীপবাসীদের কয়েকজন কাঁকড়ার আক্রমণের শিকারও হয়েছিল। তাই ডেরার চারপাশে বাঁশের প্রাচীর বানিয়ে গাছের শক্ত আঠা, তন্তু এসব লাগিয়ে রাখে। যাতে বাঁশের প্রাচীর ডিঙাতে গেলে নারকেল কাঁকড়া সেই আঠায় জড়িয়ে পড়ে। তাতে নরখাদকদের জল খাবারের ব্যবস্থা হয়ে যায়। তিন-চার কেজি ওজনের একেকটা কাঁকড়া কয়েকজন মিলে খেতে পারে। যদিও প্রতিদিন শিকার মিলে না, তবে প্রায়ই নারকেল কাঁকড়া খাওয়ার সুযোগ হয় প্রাচীর ফাঁদের কল্যাণে।
দলপতি নির্দেশ দিল শিকার বেঁধে ফেলতে। আজকের আনন্দঘণ্টা দ্রুত বাজাতে চায় সে, গতকালের মতো আজ আর ভুল করতে রাজি নয় দলপতি।
এদিকে শিকার আটকের সংবাদ শুনে দ্বীপবাসীরা সবাই বনপ্রান্তরে ছুটে এসেছে। ছোট—বড় সবাই জড়ো হয়েছে। এসেই সবাই হাত ধরাধরি করে উল্লাস করতে লাগল। ওদের কারোই তর সইছে না। জীবিত কামড়ে খেতে পারলেই যেন সবাই খুশি। কারণ শিকারের ওপর নরখাদকের দল খুব ক্ষিপ্ত। তাই তো কেউ ধনুকে তীর গাঁথছে, কেউবা পাথরখণ্ড কুড়িয়ে আনছে। নরখাদকেরা একদিকে রেগে আছে, অন্যদিকে উৎসব উৎসবভাব নিয়ে শিকার ঘিরে রেখেছে।
নরখাদকদের প্রস্তুতি শেষ। এখন শুধু দলপতির নির্দেশের অপেক্ষায় আছে। দলপতি আগে তীর ছুড়বে তারপর অন্যরা। এটাই হচ্ছে সেন্টিনেলিজ জাতির রীতি। এক্ষেত্রে যদি দলপতি শিকার মুক্ত করে দিতে হুকুম দেয়, তাও মানতে বাধ্য দ্বীপবাসীরা। এতে কারো বিন্দুমাত্র আপত্তি থাকবে না। কারণ এরা দলপতি নির্ভরশীল একটা জাতি। দলপতি এদের কাছে সর্বেসর্বা। দলপতি যা বলে তাই-ই দ্বীপের আইন। এই আইন বংশ পরস্পরায় মেনেও আসছে নরখাদকেরা।
দলপতির হাতে তীর-ধনুক। কয়েক কদম পিছিয়ে দূর থেকে উদয়কে নিশানা করল সে। কাছাকাছি দাঁড়িয়ে তীর ছোড়ায় কোনো বাহাদুরি নেই। তাই যতটা সম্ভব দূর থেকে নিশানা নিয়েছে দলপতি। তারপর হাতের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে ধনুকে টান মারল। তীরের ফলাটা বিঁধল মাটিতে পড়ে থাকা উদয়ের কান বরাবর। এতটাই নিখুঁত নিশানা দলপতির যে, একেবারে কানের ছিদ্র ভেদ করে ফলাটা ঢুকে গেল। দলপতির কাজ শেষ, এবার পেছন পেছন উপর্যপুরি তীর ছুড়তে লাগল অন্যান্য তীরন্দাজরা। উদয় অচেতন, সাড়াশব্দ নেই। এরই মধ্যে একজন বড় একটা পাথরখণ্ড এনে উদয়ের মাথা বারবর নিক্ষেপ করল। মাথা ফেটে মগজ ছিটকে পড়ল; দরদর করে রক্ত ঝরতে লাগল। মৃত্যু নিশ্চিত করতে আরও কয়েকটা পাথর ওর মাথায় নিক্ষেপ করল। উদয় ঘোষাল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতেই ধারালো পাথর এনে দ্বীপবাসী কাটাকুটার ব্যবস্থা করতে লাগল। আজ ওরা সভ্য মানুষের মাংসের স্বাদ নেবে। তাই যেন আনন্দের জোয়ারে ভাসছে দ্বীপ। আজকের ভোজ হবে দ্বীপবাসীর জন্য শ্রেষ্ঠ ভোজ। ছোট—বড় সবাই অধীর আগ্রহে আছে কখন এক টুকরো মাংস দাঁতের ফাঁকে ফেলে আয়েস করে চিবিয়ে খাবে। চলবে...
মানুষখেকোর দ্বীপ। পর্ব-২
মানুষখেকোর দ্বীপ। পর্ব-৩
মানুষখেকোর দ্বীপ। পর্ব-৪
মানুষখেকোর দ্বীপ। পর্ব-৫
মানুষখেকোর দ্বীপ | পর্ব-৬
মানুষখেকোর দ্বীপ | পর্ব-৭
মানুষখেকোর দ্বীপ | পর্ব-৮
মানুষখেকোর দ্বীপ | পর্ব-৯
মানুষখেকোর দ্বীপ | পর্ব-১০
মানুষখেকোর দ্বীপ | পর্ব-১১
মানুষখেকোর দ্বীপ | পর্ব-১২
মানুষখেকোর দ্বীপ | পর্ব-১৩
মানুষখেকোর দ্বীপ | পর্ব-১৪
মানুষখেকোর দ্বীপ | পর্ব-১৫
মানুষখেকোর দ্বীপ | পর্ব-১৬
আলম শাইন: কথাসাহিত্যিক, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক কলামিস্ট
বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৪
এমজেএফ