ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩১, ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯ সফর ১৪৪৬

শিক্ষা

পাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা, ১৭ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
পাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা, ১৭ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

পাবনা: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭ দফা দাবিতে রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স এসোসিয়েশনের সদস্যরা। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।

 

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর নানা অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য,স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। তিনি তার খেয়াল খুশিমতো এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিভিন্ন যৌক্তিক দাবি সমূহ তিনি মেনে নিচ্ছে না। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আন্দোলনের কারণে তিনি সময়মত অফিসে আসছেন না বলেও জানা গেছে।

আন্দোলনকারীরা বলেন, ভিসি স্যার আমাদেরকে ডেকে তার বাস ভবনে নিয়ে দাবি সমূহ শুনেছেন। তিনি সকল দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রিজেন্ট বোর্ডের সভা হয়ার কথা থাকলেও সেই সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আসছেন। তার দায়িত্ব ভারের শেষ সময়ে এসে তিনি পাশ কাটিয়ে যেতে চাইছেন। ১৭ দফা দাবি ও স্মারকলিপি দিয়েছি আমরা। দাবি মেনে না নেওয়া হলে ধারাবাহিক ভাবে এই কর্মসূচি পালন করবেন তারা।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স এসোসিয়েশনের সদস্যদের সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ হলো- করেনাকালীন সময়ে অফিস সময় পরিবর্তন করা। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন স্কেল প্রদান করা। আপগ্রেডেশন নীতিমালা অনুযায়ী পদন্নতি প্রদান। গৃহ নির্মানের জন্য সল্প হারে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা। প্রাপ্তি বিনোদনের নীতি অনুযায়ী ১৫ দিনের ছুটি প্রদান করা।

পাবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশন (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি আব্দুল্লাহ আল-মামুন ও সাধারণ সম্পাদক  মোঃ সোহাগ হোসেন বলেন, ন্যায় সঙ্গত যৌক্তিক ১৭ দফা দাবি কার্যকর না হওয়া পযর্ন্ত এই ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাবো। স্যার এই দাবির বিষয় নিয়ে আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন সকল দাবি সমূহ বাস্তবায়ন করা হবে। কিন্তু তিনি সেটি করছেন না।

প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ৯ ফেব্রুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সভা আহবান করেন ভিসি। কিন্তু নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়ম ও শিক্ষকদের দাবির মুখে অবরুদ্ধ হন তিনি। সেদিনের সেই সভা রিজেন্ট বোর্ড সদস্য পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. শাসসুল হক টুকুর মধ্যস্তায় সভা মূলতবি করে পরবর্তীতে ২৪ ফেব্রুয়ারি পুণরায় রিজেন্ট বোর্ডের সভা আহ্বান করা হয়। কিন্তু সেখানেও বিপত্তিবাধে শিক্ষার্থীরা। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ভিসির আগমনের খবর ছড়ালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।  

এ সময় তারা দুর্নীতবাজ ভিসির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন। পরেদিন শিক্ষকরা বৈঠক করে তার গণনিয়োগ বন্ধের দাবি জানান। এ সময় কর্মকর্তারা বৈঠক করে শনিবার থেকে উপাচার্যের কার্যালয় অবরুদ্ধ করার কর্মসূচি দিলে ভোররাতে তিনি কাউকে না জানিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।  

এদিকে বিগত দিনে উপাচার্যের ১০১ অনিয়মের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদেও সাবেক ডিন ড. এম আবদুল আলীম একক-অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। ইউজিসির তদন্তে এর মধ্যে অনেক অভিযোগ ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

ঘটনার বিষয়ে রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, এখানে আমার কিছুই করার নেই। কারণ সকল ক্ষমতার উৎস উপাচার্য স্যার। তার হুকুমে সকল কাজ আমরা করে থাকি। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। উপাচার্য স্যার অনিয়ম করে ব্যয় করায় অনেক টাকা ফেরত দিয়েছেন। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর শাস্তি না হওয়ায় তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পরেছেন। অবেশেষে শিক্ষক-কর্মকর্তা এবং ছাত্র-ছাত্রীদেও আন্দোলনের মুখে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন তিনি।  

এ বিষয়ে উপাচার্য রোস্তম আলীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিকের পরিচয় জেনেই ফোন কেটে দেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়রি ২৭, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।